দীর্ঘ অপেক্ষা এবং বার বার অনুরোধের পরেও হুইলচেয়ার মেলেনি! দিল্লি বিমানবন্দরে বিমানে ওঠার আগেই পড়ে গিয়ে চোট পেলেন ৮২ বছরের বৃদ্ধা। ‘ব্রেন স্ট্রোক’ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তিনি। ঘটনার পরেই উড়ান সংস্থা ‘এয়ার ইন্ডিয়া’র বিরুদ্ধে অব্যবস্থা এবং গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বৃদ্ধার পৌত্রী। যার পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়াও।
এয়ার ইন্ডিয়ার বেঙ্গালুরুগামী ওই বিমানে টিকিট বুকিংয়ের সময়েই হুইলচেয়ারের জন্য বিশেষ আবেদন করেছিলেন রাজ পাসরিচা নামে অশীতিপর ওই বৃদ্ধা। বিমানে ওঠার জন্য যথা সময়ে দিল্লি বিামনবন্দরে পৌঁছেও গিয়েছিলেন বলে দাবি। কিন্তু অভিযোগ, দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার পরেও হুইলচেয়ার মেলেনি। শেষমেশ বাধ্য হয়ে এক আত্মীয়ার সহযোগিতায় পায়ে হেঁটেই বিমানে ওঠার জন্য এগোতে থাকেন বৃদ্ধা। অতি কষ্টে বেশ কিছুটা পথ হাঁটার পর কাউন্টারের কাছে এসে আচমকা মুখ থুবড়ে পড়ে যান তিনি। মাথায়, ঠোঁটে এবং নাকে চোট লাগে। অথচ সহযাত্রী থেকে শুরু করে বিমানকর্মী— কেউই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ। পর্যাপ্ত প্রাথমিক চিকিৎসাও মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। ওই অবস্থাতেই তাঁকে বিমানে উঠতে হয়।
আরও পড়ুন:
বৃদ্ধার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি এখন বেঙ্গালুরুর এক হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি। চোটের কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে তাঁর। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বৃদ্ধার নাতনি জানিয়েছেন, বৃদ্ধার শরীরের বাম দিক ক্রমশ অবশ হয়ে আসছে। পক্ষাঘাতের আশঙ্কাও করছেন চিকিৎসকেরা।
যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। বিমান সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছে, মহিলার অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’। হুইলচেয়ারের জন্য তাঁকে আদৌ এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়নি। বরং ওই দিন নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুটা দেরিতেই বিমানবন্দরে এসেছিলেন তাঁরা। এসেই যাত্রীর পরিজনেরা হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। ওই সময়ে চাহিদা বেশি থাকার কারণে ওই সময়ের মধ্যে হুইলচেয়ার পাওয়া যায়নি। এর পর ওই বৃদ্ধা নিজের ইচ্ছাতেই তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে পায়ে হেঁটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দুর্ভাগ্যবশত এর পরেই তিনি বিমানবন্দর চত্বরে পড়ে যান। এয়ার ইন্ডিয়া আরও জানিয়েছে, প্রাথমিক চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগটিও ‘অসত্য’। ওই বৃদ্ধা পড়ে যাওয়ার পরেই বিমানবন্দরের কর্মী এবং কর্তব্যরত ডাক্তারেরা ছুটে আসেন। তাঁরাই ওই বৃদ্ধার প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। এয়ার ইন্ডিয়ার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা মহিলার প্রতি সম্পূর্ণ সহানুভূতিশীল এবং তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করেও দেখা হচ্ছে।’’