একতরফা বলে যাওয়া নয়। রাহুল গাঁধীর পথে হেঁটে নরেন্দ্র মোদী এ বার প্রশ্নের জবাবও দেবেন। আর সেটাকেই উৎসবের চেহারা দিতে মন্ত্রীরা ঢাক-ঢোল নিয়ে নেমে পড়েছেন।
বিষয়টি কেন অভিনব?
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে চার বছর হতে চলল, এখনও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি মোদী। ‘মন কি বাত’-এর ইথার তরঙ্গে হোক বা মঞ্চের বক্তৃতায়, কিংবা নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গ্রাউন্ডে প্রবাসী ভারতীয়দের কাছে— প্রধানমন্ত্রী শুধু বলেই গিয়েছেন। শুনেছেন বাকিরা।
অথচ রাহুল গাঁধীর ক্ষেত্রে বিষয়টা উল্টো। শুধু ভোটের সময়েই নয়, দেশে এবং বিদেশে রাহুল গাঁধী শুনেছেন বেশি। যখন যেখানে গিয়েছেন, সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথোপকথনে মেতেছেন। প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন।
কংগ্রেসের দাবি, চাপে পড়ে এ বার রাহুলের পথেই হাঁটতে শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে অবস্থানে এক সূক্ষ্ম বদল করছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। আগামী মাসে চোগাম (কমনওয়েলথ হেড অব গভর্নমেন্ট মিটিং) সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রিটেনে যাচ্ছেন মোদী। সেখানে ১৮ তারিখ ওয়েস্টমিনস্টার-এ প্রায় দেড় হাজার আমন্ত্রিত প্রবাসী ভারতীয়ের সঙ্গে কথোপকথন হবে প্রধানমন্ত্রীর। ‘ভারত কি বাত, সবকে সাথ’ নামের এই অনুষ্ঠানটি ঘিরে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে সরকার। শুধু লন্ডনের দূতাবাসই নয়, তৎপরতা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মধ্যেও। একটি ওয়েবসাইট খুলে অনলাইন লটারি করা হচ্ছে প্রবেশাধিকারের জন্য। গোটা অনুষ্ঠানটির সরাসরি সম্প্রচারও করা হবে।
কিছু দিন আগেই প্রশ্নোত্তরের বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো মহড়া দিয়েছেন মোদী। ছাত্রছাত্রীদের কৌতূহলের জবাব দিয়েছেন একটি অনুষ্ঠানে। তবে বিরোধী শিবিরের দাবি, প্রধানমন্ত্রী এবং কংগ্রেস সভাপতির এই জনসংযোগের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। কংগ্রেসের দাবি— মোদী যে প্রশ্ন নিয়েছেন, বা নিতে চলেছেন তা সাজানো এবং বাছাই করা। এমনকী ওয়েস্টমিনস্টার-এর অনুষ্ঠানটিরও পূর্বশর্ত দেওয়া হয়েছে— প্রয়োজনে গোটা কাঠামোটাই বদলে দেওয়া হতে পারে। অর্থাৎ, মোদী যদি দেখেন রাশ তাঁর হাতে থাকছে না, গোটা অনুষ্ঠানটাই বদলে দেওয়া হতে পারে। শুধু সাজানো প্রশ্নই নয়, গত ফেব্রুয়ারিতে ওমানে প্রধানমন্ত্রীর একটি জনসভায় ভিড় বাড়াতে ভারতীয় দূতাবাস বিভিন্ন সংস্থাকে লোক পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছিল— এই অভিযোগও ওঠে।
কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, রাহুলের ক্ষেত্রে বিষয়টি স্বতঃস্ফূর্ত। তিনি সাজানো প্রশ্ন নেন না। সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে একটি অনুষ্ঠানে এক প্রবাসী তাঁর কাছে পরিবারতন্ত্র নিয়ে অস্বস্তিকর প্রশ্ন তোলেন। সে’টি সামাল দিয়ে রাহুল এ কথাও বলেছিলেন— মোদীকে এ ধরনের প্রশ্ন করে দেখুন তো কী হয়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy