পুরনো জুটির রেষারেষি আবার ফিরে এল প্রকাশ্যে।
সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলি। বিজেপি বিরোধী দলে থাকার সময় এই দুই বিরোধী দলনেতার রেষারেষি সর্বজনবিদিত। প্রকাশ্যে কেউই কবুল করতেন না বটে, কিন্তু দুই শিবিরের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন নানান ঘটনার মধ্যেই বেরিয়ে আসত। নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাতে অনেকটা ভাটা পড়েছে বটে, কিন্তু আবার সূক্ষ্ম ভাবে তা ফিরে এল গতকাল। ললিত মোদী ও বিজয় মাল্যর প্রত্যর্পণ ইস্যুতে।
অসুস্থতার কারণে বিদেশ মন্ত্রকের দু’বছর পূর্তির সাফল্যের খতিয়ান এত দিন তুলে ধরতে পারেননি সুষমা স্বরাজ। গতকাল এক সবিস্তার সাংবাদিক সম্মেলনে একে একে মেলে ধরেন তাঁর মন্ত্রকের সাফল্য। কিন্তু যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ললিত মোদী ও বিজয় মাল্যর প্রত্যর্পণ নিয়ে এত গড়িমসি হচ্ছে কেন? এত দেরিই বা হচ্ছে কেন? তখনই তিনি তিরটি ঘুরিয়ে দেন সরকারেই তাঁর সতীর্থ অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির মন্ত্রকের দিকে। বলেন, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) থেকে এখনও পর্যন্ত ললিত মোদীর প্রত্যপর্ণের কোনও অনুরোধই আসেনি। যে দিন আসবে, সেটি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আর বিজয় মাল্যর অনুরোধ এসেছিল। কিন্তু বিদেশ মন্ত্রক তা খতিয়ে দেখে তাতে কিছু পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছে। সেটি আবার ইডি থেকে এলে ব্রিটিশ সরকারকে পাঠানো হবে।
ইডি আসলে অরুণ জেটলির মন্ত্রকের অধীনেই। সুষমা অবশ্য সরকারের অবস্থান জানিয়ে বলেন, অতীতে ইউপিএ সরকার শুধুমাত্র ডিপোর্টেশনের কথা বলত। কিন্তু এই সরকার প্রত্যর্পণ করাতে চায়। কিন্তু এই নিয়ে দেরি হওয়ার দায় বিদেশ মন্ত্রকের কাঁধে না রেখে সরাসরি অরুণ জেটলির মন্ত্রকের উপরেই চাপিয়ে দেয়। মোদী সরকারের দুই মন্ত্রীর এই সম্পর্কের চোরাস্রোত উস্কে দিতে আজ আসরে নেমে পড়ে কংগ্রেসও। দলের নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘গত বছর নভেম্বর থেকে ললিত মোদীর প্রত্যর্পণ নিয়ে প্রক্রিয়া চলছে। অথচ অরুণ জেটলি এখনও পর্যন্ত তা তৈরি করতে পারলেন না। আর বিজয় মাল্যর ক্ষেত্রে পাঠানো হলেও সেটি ত্রুটিপূর্ণ করা হয়েছে, যাতে তা ফেরত আসে ইডির কাছে।’’ জয়রামের কথায়, ‘‘অরুণ জেটলি অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি এক জন বিশিষ্ট আইনজীবী। ঘুমের মধ্যেও তিনি একটি প্রত্যর্পণের খসড়া বানিয়ে দিতে পারেন। তাঁর মন্ত্রক এতে ভুল করে কোথায়?’’
এই ইস্যুকে আরও চড়া মাত্রায় নিয়ে যেতে কংগ্রেস বিষয়টিকে রঘুরাম রাজনের বিদায়ের ইস্যুও জুড়ে দিতে চাইছে। দলের অভিযোগ, ব্যাঙ্ক থেকে মোটা অর্থ নিয়ে যাঁরা শোধ দেননি, তাঁদের অরুণ জেটলি আড়াল তো করছেনই, যিনি এর রাশ ধরতে পারতেন, সেই রঘুরাম রাজনকেও এই সরকার সরিয়ে দিতে চাইছে। এ সরকার শুধুমাত্র স্যুট-বুটের সরকার নয়, স্যুট-বুট-লুঠের সরকার। বিজেপির মুখপাত্র নলিন কোহলির মতে, ‘‘সরকারের দুই মন্ত্রকের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। এটি একটি প্রক্রিয়াগত বিষয়। ইউপিএ বরাবরই ললিত মোদীকে আড়াল করে এসেছে। কোনও ভাবেই দেশে ফেরানোর চেষ্টা করেনি। বিজয় মাল্যর এত বড় ব্যবসা ফুলেফঁপে উঠেছে ইউপিএ আমলেই। মোদী সরকার আঁটঘাট বেধেই দু’জনের প্রত্যর্পণের চেষ্টা করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy