Advertisement
E-Paper

কী ভাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর রণনীতি তৈরি হয়েছিল? জানালেন স্থলসেনাপ্রধান, তুলনা টানলেন দাবা খেলার সঙ্গে

পাকিস্তানকেও খোঁচা দিতে ছাড়েননি স্থলসেনাপ্রধান। তাঁর কথায়, ‘‘এই গোটা অভিযানে একটা বিষয়ের বড় ভূমিকা ছিল। তা হল ন্যারেটিভ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। অর্থাৎ, মন থেকে যেটা ভেবে নেওয়া হয়, সেটাকেই ঠিক বলে মেনে নেওয়া।’’

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৫ ১০:০১
ভারতের স্থলসেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। ছবি: পিটিআই।

ভারতের স্থলসেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। ছবি: পিটিআই।

‘অপারেশন সিঁদুর’ যে ব্যাপক ভাবে সাফল্য পেয়েছে এবং এই অভিযান যে পাকিস্তানকে বড় রকমের শিক্ষা দিয়েছে, আবার সেই কথাই শোনা গেল স্থলসেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীর কণ্ঠে। বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিংহ শনিবারই জানিয়েছিলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ পাকিস্তানের ছ’টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে ভারত। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্থলসেনাপ্রধানের কণ্ঠে শোনা গেল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সাফল্যের কাহিনি। শুধু তা-ই নয়, কী ভাবে রণনীতি তৈরি করা হয়েছিল, কতটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, কী ভাবে শত্রুপক্ষকে মাত করতে সক্ষম হয়েছে, সবই তুলে ধরেছেন আইআইটি মাদ্রাজের একটি অনুষ্ঠানে।

‘অপারেশন সিঁদুর’-কে দাবা খেলার সঙ্গে তুলনা করেছেন স্থলসেনাপ্রধান দ্বিবেদী। তিনি জানিয়েছেন, এটি গতানুগতিক সামরিক অভিযানের থেকে অনেকটা আলাদা ছিল। যেটাকে ‘গ্রে জ়োন’ বলে উল্লেখ করেছেন স্থলসেনাপ্রধান। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে পুরো শক্তি প্রয়োগ না করে শত্রপক্ষকে ঘায়েল করার একটা রণকৌশল অবলম্বন করা হয়েছিল। যা অনেকটা দাবা খেলার মতোই। যেখানে বিপরীতে থাকা খেলোয়াড়ের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে তা নিয়ে কোনও রকম আগাম বার্তা থাকে না। এত ঝুঁকির মধ্যেও শত্রুপক্ষকে (পাকিস্তান) বাজিমাত করতে দেওয়া হয়নি। বরং নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শত্রুপক্ষের উপর হামলা চালানো হয়েছে।

পাকিস্তানকেও খোঁচা দিতে ছাড়েননি স্থলসেনাপ্রধান। তাঁর কথায়, ‘‘এই গোটা অভিযানে একটা বিষয়ের বড় ভূমিকা ছিল। তা হল ন্যারেটিভ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। অর্থাৎ, মন থেকে যেটা ভেবে নেওয়া হয়, সেটাকেই ঠিক বলে মেনে নেওয়া।’’ স্থলসেনাপ্রধানের মতে, পাকিস্তানও সেই কৌশল অবলম্বন করেছে। তারা মনে মনে ভেবেই নিয়েছে যে জয় তাদের হয়েছে। যদি কোনও পাকিস্তানিকে জিজ্ঞাসা করা হয় আপনারা জিতেছেন না হেরেছেন, তা হলে ওঁরা বলবেন, ‘‘আমাদের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত হয়েছেন। অতএব আমরাই জিতেছি।’’ আর এটাই হচ্ছে ‘মাইন্ড গেম’। যা মনের মধ্যে এমন একটা ধারনা চারিয়ে দেওয়ার কৌশল, যা কখনও ঘটেইনি। পাকিস্তানও সেই কৌশল নিয়েছে বলে মত স্থলসেনাপ্রধানের।

স্থলসেনাপ্রধান আরও জানিয়েছেন যে, কী ভাবে তিন সেনাকে এই অভিযান চালানোর জন্য পুরোপুরি ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘’২৩ এপ্রিল তিন সেনাপ্রধানের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতৃত্বের বৈঠক হয়। এই প্রথম বার দেখলাম যে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলছেন, অনেক হয়েছে আর নয়। আর সেটাই ছিল সেনার মনোবল বাড়ানোর পক্ষে অত্যন্ত শক্তিশালী একটি বার্তা।’’ স্থলসেনাপ্রধান জানিয়েছেন, তিন সেনাপ্রধানকে বলা হয়েছিল, রণনীতি আপনারাই তৈরি করুন। আর সেই বার্তাই ছিল অত্যন্ত ভরসার। তাঁর কথায়, ‘‘এই বার্তা পাওয়ার পরই ২৫ এপ্রিল নর্দার্ন কমান্ডে পৌঁছোই আমারা। সেখানে রণনীতি বানানো হয়। কোন পথে, কী ভাবে অভিযান চালানো হবে, তা একটি ধারণা তৈরি করা হয়। তার পরই ৯ মে সাতটি ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। যে হামলায় অনেক জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে।’’

কেন অভিযানের নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’ দেওয়া হয়েছে, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন স্থলসেনাপ্রধান। তিনি জানিয়েছেন, ছোট নাম, কিন্তু অভিযানের এই নামই গোটা দেশকে জুড়েছে। দেশবাসীর মধ্যে একটা শক্তির সঞ্চার করেছে। ‘সিঁদুর’ শব্দটার মধ্যে এতটাই ক্ষমতা।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিরা হামলা চালায়। সেই হামলায় মৃত্যু হয় ২৬ জনের। তার পরই গত ৯ মে পাক ভূখণ্ডে অপারেশন সিঁদুর সামরিক অভিযান চালায় ভারত। সেই ঘটনায় দু’দেশের মধ্যে সাময়িক সামরিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছিল।

Indian Army Army Chief
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy