Advertisement
E-Paper

নীতীশের ইস্তফা চান লালু-ঘনিষ্ঠরা

ছ’মাসের মধ্যেই বিহারের জোট সরকারের বিরোধ সামনে এসে পড়ল। জোটের বৃহত্তম শরিক আরজেডির তিন প্রবীণ ও গুরুত্বপূর্ণ নেতা প্রায় একই সঙ্গে আক্রমণ শানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে। রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ, তসলিমুদ্দিন ও প্রাক্তন সাংসদ প্রভুনাথ সিংহের মতে, নীতীশের আর মুখ্যমন্ত্রী থাকার অধিকার নেই।

দিবাকর রায়

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৬ ০৩:৩৭
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে পটনার বুদ্ধ স্মৃতি পার্কে নীতীশ কুমার। ছবি: পিটিআই।

বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে পটনার বুদ্ধ স্মৃতি পার্কে নীতীশ কুমার। ছবি: পিটিআই।

ছ’মাসের মধ্যেই বিহারের জোট সরকারের বিরোধ সামনে এসে পড়ল। জোটের বৃহত্তম শরিক আরজেডির তিন প্রবীণ ও গুরুত্বপূর্ণ নেতা প্রায় একই সঙ্গে আক্রমণ শানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে। রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ, তসলিমুদ্দিন ও প্রাক্তন সাংসদ প্রভুনাথ সিংহের মতে, নীতীশের আর মুখ্যমন্ত্রী থাকার অধিকার নেই।

গত কাল লালুপ্রসাদের সঙ্গে দলের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক সেরে বেরোনোর পরেই এই তিন নেতা মুখ খুলেছেন। আজ পটনায় সার্কিট হাউসে ওই বৈঠকে আরারিয়ার আরজেডি সাংসদ তসলিমুদ্দিন তাঁর দলকে জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসার আবেদন জানান বলে দলীয় সূত্রে খবর। বৈঠকের পরে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য নীতীশের পদত্যাগও দাবি করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে খুন হচ্ছে, ডাকাতি হচ্ছে, অপহরণ হচ্ছে। আর মুখ্যমন্ত্রী কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। আমি তো মনে করি আজই জোট ভেঙে বেরিয়ে আসা দরকার। আমরা ঠিক সরকার বানিয়ে নেব।’’ এই মন্তব্য করেই থামেননি তিনি। রাজ্যকে ‘অন্ধকারে’ ঠেলে দেওয়ার জন্য দায়ী করে নীতীশকে জেলে পাঠানো উচিত বলেও মন্তব্য করেন তসলিমুদ্দিন। সীমাঞ্চলের বিতর্কিত আরজেডি নেতা তসলিমুদ্দিনের কিষাণগঞ্জ, কাটিহার, আরারিয়া ও পূর্ণিয়ার মতো মুসলিম-প্রধান জেলাগুলিতে যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। ২০১৪ সালে মোদী-ঝড়ে বিহারে বিজেপি ২২টি আসন পেলেও সীমাঞ্চলে সেই ঝড় থামিয়ে দিয়েছিলেন তসলিম। স্বাভাবিক ভাবেই দলে প্রভাব রয়েছে তাঁর।

শুধু তিনিই নন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন আরজেডি নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ প্রভুনাথ সিংহ এবং দলের সহ-সভাপতি রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ। রঘুবংশপ্রসাদ বলেন, ‘‘আমরা পিছনের আসনে বসে রয়েছি। গাড়ি যিনি চালাচ্ছেন তাঁকে বলছি, ঠিক করে চালান। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা নীতীশ কুমারের দায়িত্ব। তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।’’

স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, লালুর ইঙ্গিতেই কি নীতীশের বিরুদ্ধে এই নেতারা মুখ খুলেছেন? লালু বা নীতীশ এ নিয়ে কোনও কথা বলেননি। তবে মুখ খুলেছে নীতীশের দল জেডিইউ। দলের মুখপাত্র সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘ওই নেতারা বৃদ্ধ হয়েছেন। আরজেডি নেতৃত্বের উচিত তাঁদের দল থেকে বের করে দেওয়া।’’ সঞ্জয়ের প্রতিক্রিয়ার পিছনে নীতীশের অনুমোদন রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে।

কিন্তু কেন হঠাৎ নীতীশের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন ওই তিন নেতা? বিহারের রাজনীতিকদের মতে, রাজ্যসভা ভোটের আগে নীতীশ কুমারের উপরে চাপ তৈরি করতে চাইছেন লালু। বিহার থেকে ৫ জন রাজ্যসভায় যেতে পারবেন। অঙ্কের হিসেবে লালুপ্রসাদের দল থেকে দু’জন, কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে জেডিইউয়ের দু’জন এবং বিজেপি এক জনকে পাঠাতে পারবে। রাবড়ীদেবীকে পাঠাতে উৎসাহী

লালু প্রসাদ। অন্য আসনটি হাতে পাওয়ার জন্য লালুপ্রসাদের কাছে দরবার শুরু করেছেন নীতীশ। সেখানে বিখ্যাত কাউকে পাঠানোর পরিকল্পনাও করেছেন তিনি। মুখের উপর সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান না করতে পেরেই আপাতত দূরত্ব তৈরি করতে চাইছেন লালু। ১১ জুন রাজ্যসভা ভোটের পরে গোটা বিষয়টিতে ‘হস্তক্ষেপ’ করে লালুপ্রসাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করবেন বলেই মনে করছেন অনেকে।

nitish BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy