সংসদের উভয় কক্ষ ও সংসদ চত্বরে আজ দফায় দফায় বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনের বিরুদ্ধে সরব হলেন বিরোধীরা। হট্টগোলের জেরে উভয় কক্ষের অধিবেশন দফায় দফায় মুলতুবিহয়ে যায়।
আজ রণকৌশল ঠিক করতে অধিবেশন শুরুর আগে বৈঠকে বসে বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’। বৈঠকে পহেলগামে জঙ্গি হামলা, ভোটার তালিকা সংশোধন, আমদাবাদেবিমান দুর্ঘটনা-সহ যাবতীয় বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য দাবি করে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিরোধীরা। তবে আজকের ওই বৈঠকে তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
আজ বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে অধিবেশন শুরু হলে লোকসভায় ‘অপারেশন সিঁদুর’ ও বিহারের ভোটার তালিকায় সংশোধনীর বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন বিরোধীরা। এ প্রসঙ্গে মুলতুবি প্রস্তাব আনা হলে তা খারিজ করে দেন স্পিকার ওম বিড়লা। অন্য দিকে, রাজ্যসভায় বিষয়গুলি নিয়ে বিরোধীরা আলোচনার দাবি জানালেও সেখানও তা খারিজ করে দেওয়া হয়। উভয় কক্ষেই বিরোধীদের হট্টগোলে অধিবেশন দফায় দফায় ভেস্তে যায়।
আজ অধিবেশন শুরুর আগে সংসদের মকর দ্বারের সামনে বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা। কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা ছাড়াও বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন এসপি নেতা অখিলেশ যাদব, তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যয়েরা। পরে এ প্রসঙ্গে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘প্রথমে মহারাষ্ট্রে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করে নির্বাচনে চুরি করা হয়েছিল। এখন বিহারে ভোটারদের নাম কেটে দিয়ে চুরি করা হচ্ছে। ভোটার তালিকার বিশেষ পরিমার্জনের নামে আসলে ‘ভোটবন্দি’ করে সংবিধানে থাকা ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’ আর রাহুল বলেন, ‘‘বিহারে ভোটার তালিকা পরিমার্জনের মাধ্যমে যা হচ্ছে, তা হল ভোট চুরি।’’ বিষয়টি নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে সংসদের ভিতরে ও বাইরে সরব থাকা হবে বলে জানিয়েছেন বিরোধীরা।
নির্বাচন কমিশন আজ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত বিহারে ২.৭০ শতাংশ (২১লক্ষ) ভোটারের এনুমারেশন ফর্মের জমা পড়া বাকি রয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, সব মিলিয়ে প্রায় ৫২.৩০ লক্ষ ভোটারের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। যাদের মধ্যে ১৮.৬৬ লক্ষ ভোটার মারা গিয়েছেন। ২৬ লক্ষের কাছাকাছি ভোটার নিজেদের ঠিকানা ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। এ ছাড়া সাড়ে সাত লক্ষ ভোটারের নাম একাধিক স্থানে নথিভুক্ত রয়েছে। আর প্রায় ১১ লক্ষ ভোটারের কোনও ভাবেই খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে কমিশন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)