সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে ওয়াকফ বোর্ড সংশোধনী বিল আনার প্রশ্নে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল সরকার। আজ ওই বিল সংক্রান্ত আলোচনার জন্য গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-র শেষ দিনে কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল জানান, রিপোর্ট প্রস্তুত। সরকার সবুজ সঙ্কেত দিলেই রিপোর্ট সংসদে পেশ করা হবে।
অন্য দিকে কমিটিতে উপস্থিত বিরোধীদের দাবি, বিলের একাধিক বিষয় নিয়ে এখনও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। সেই কারণে ওই কমিটির আরও বৈঠক দরকার। তাই কমিটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিরোধী সাংসদেরা।
তৃতীয় মোদী সরকার ক্ষমতায় এসেই ওয়াকফ সংশোধনী বিল আনে সংসদে, যা লোকসভায় পেশ হওয়ার পরেই পর্যালোচনার জন্য সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠান স্পিকার। শীতকালীন অধিবেশন শুরুর প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ওই রিপোর্ট সংসদে জমা দেওয়ার কথা। সেই হিসাব মেনে চললে আজই জেপিসি-র শেষ বৈঠক বলে জানিয়ে দেন জগদম্বিকা পাল। এ দিন বৈঠক শুরুর আগেতিনি বলেন, ‘‘আজই শেষ বৈঠক। রিপোর্টও প্রস্তুত।’’
সূত্রের মতে, বৈঠক শুরু হতেই জগদম্বিকা সদস্যদের জানিয়ে দেন, আজই শেষ বৈঠক। তা শোনার পরেই প্রতিবাদ করেন বিরোধী সাংসদেরা। সূত্রের মতে, একাধিক বিষয়ে আলোচনা বাকি রয়েছে দাবি জানিয়ে বৈঠকের দিন বৃদ্ধির দাবি জানান বিরোধী সাংসদেরা। তাঁদের মতে, এখনও কমিটি সদস্যেরা খসড়া রিপোর্ট পাননি। তার ভিত্তিতেই বিলের প্রতি নিজেদের সমর্থন বা আপত্তি জানানোর কথা তাঁদের। তা ছাড়া, খসড়া রিপোর্টটি এখনও যৌথ সংসদীয় কমিটিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে পাশ হওয়া বাকি রয়েছে। ফলে বাড়তি সময় প্রয়োজন।
কিন্তু জগদম্বিকা বাড়তি সময়ের প্রসঙ্গে কোনও আশ্বাস না দেওয়ায় স্পিকারের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিরোধীরা। ঠিক হয়েছে, আগামী সোমবার সংসদ খোলার দিনে এ নিয়ে স্পিকারের সঙ্গে বিরোধী সাংসদেরা বৈঠক করবেন। ঘটনাচক্রে, সে দিন শীতকালীন অধিবেশন শুরুর পাশাপাশি স্পিকারের মেয়ের বিয়ের প্রীতিভোজও রয়েছে। ফলে স্পিকার আদৌ কতটা বাড়তি সময় দিতে পারবেন, তা নিয়েও চর্চা হচ্ছে। বিরোধী শিবিরের সাংসদদের বক্তব্য, আলোচনার দিন বাড়ানোই তাঁদের দাবি, যাতে যে বিষয়গুলি নিয়ে জটিলতা রয়েছে, সেগুলি নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব হয়। যদি সরকার বাড়তি সময় দিতে অসম্মত হয়, সে ক্ষেত্রে খসড়া রিপোর্টে ব্যক্তিগত ও দলীয় আপত্তির জায়গাগুলি নথিভুক্ত করা হবে। প্রয়োজনে তাঁরা খসড়া রিপোর্ট পাশ করানোর প্রক্রিয়ায় অংশ না-ও নিতে পারেন বলে হুমকি দিয়ে রেখেছেন বিরোধীরা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)