ভেসে যেতে চলেছে সংসদের বাদল অধিবেশন। ভোটার তালিকা নিবিড় পরিমার্জনের প্রতিবাদে এবং বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবিতে সংসদের দু’কক্ষে অন্য বিতর্ক হতে দেবেন না বিরোধী সাংসদরা। আজ সকালে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদদের বৈঠকে এই ঐকমত্য হয়েছে। স্থির হয়েছে, ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের প্রতিবাদে আগামী সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করা হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, কমিশন ঘেরাওয়ের পরিকল্পনা আজ সকালের বৈঠকে তাদের পক্ষ থেকেই দেওয়া হয়। যা গ্রহণ করেছে কংগ্রেস, আরজেডি-সহ অন্য বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, নির্বাচন কমিশন অভিযান হবে ৮ অগস্ট।
গতকাল রাজ্যসভায় কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েনের পর আজ ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জন নিয়ে আলোচনার দাবি জানান ডিএমকে-র তিরুচি শিবা। তবে ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ জানিয়ে দেন, সাংবিধানিক কোনও সংস্থার কাজ নিয়ে চাইলেই আলোচনা করা যায় না। তার জন্য বিশেষ বিধি রয়েছে। তিনি এ-ও জানান, চলতি অধিবেশনে বিরোধীদের কারণে ৩০ ঘণ্টা ৬ মিনিট সময় নষ্ট হয়েছে। ১২০টি প্রশ্ন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। নষ্ট হয়েছে ‘জিরো আওয়ার’। তাতে কর্ণপাত না করেই বিরোধীরা আজ একজোট হয়ে দফায় দফায় অচল করেছেন রাজ্যসভা এবং লোকসভা।
লোকসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চেয়ে নোটিস জমা দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রত্যেক সদস্যই ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ জানান। কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের বক্তৃতার সময়ে ‘ইন্ডিয়া’র সব সাংসদই চিৎকার শুরু করেন, ভোটার তালিকা পরিমার্জনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে। স্লোগান দিতে দিতে তৃণমূলের দোলা সেন গয়ালের সামনে পৌঁছে যান! পরে ডেরেক তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সংসদ থেকে দূরে রইলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে যে ভাষা ব্যবহার করলেন তা শুনলে গুন্ডাবাহিনী গর্বিত হবে। বিরোধীদের তোলা বিষয়ে শেষ বার কেন্দ্রীয় সরকার আলোচনা করার অনুমতি দিয়েছিল ৯ বছর আগে,নোটবাতিলের সময়।’
আজ সকালে মকরদ্বারে বিরোধীরা ‘ভোট চুরি বন্ধ করো’ শ্লোগান দিয়ে এবং প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে ধর্না দেন। তৃণমূল পোস্টারে ‘ভোট চুরি’ লেখার পর আজ বিভিন্ন ভাষাভাষী সাংসদরা তার অনুবাদ করেন। কংগ্রেসের বক্তব্য, বিষয়টিকে যে তারা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, তার প্রমাণ সনিয়া গান্ধী অসুস্থতা নিয়েও প্রতি দিন যোগ দিচ্ছেন ধর্নায়। দলীয় সূত্রে খবর, রাহুল গান্ধী এর পরই ১৫ দিনের বিহার যাত্রা শুরু করবেন। সাসারাম, গয়া হয়ে পটনায় পৌঁছে জনসভা করবেন তিনি। যাত্রাপথে মাঝেমধ্যে যোগ দেবেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। ভোট চুরির স্লোগানই হবে এই যাত্রারমূল বিষয়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)