বিরোধীদের হট্টগোলের ধাক্কায় প্রথমে রাজ্যসভা, পরে লোকসভাও সারাদিনের মতো মুলতুবি হয়ে গেল। ফাইল ছবি
আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মজার সুরে বলেছিলেন, ‘‘সংসদের এই বাদল অধিবেশন বর্ষার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে। দিল্লিতে বর্ষা এসে পৌঁছেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও না বাইরের গরম কমছে, আর জানা নেই, সংসদের ভিতরের উত্তাপও কমবে কি না!’’
আশঙ্কাই সত্যি হল। সংসদ অধিবেশনের প্রথন দিন থেকেই রান্নার গ্যাস থেকে পেট্রল-ডিজ়েল, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামবৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণের মুখে পড়তে হল। আজ থেকেই দুধ, দই থেকে প্যাকেটবন্দি চাল, আটায় জিএসটি বসেছে। তারও আঁচ এসে পড়ল সংসদে। বিরোধীদের হট্টগোলের ধাক্কায় প্রথমে রাজ্যসভা, পরে লোকসভাও সারাদিনের মতো মুলতুবি হয়ে গেল।
শুধু বিরোধীরা নয়, বিক্ষুব্ধ বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধীও মূল্যবৃদ্ধি ও জিএসটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সাংসদ বরুণের মন্তব্য, ‘‘আজ থেকে দুধ, দই, মাখন, চাল, ডাল, পাউরুটির মতো প্যাকেটবন্দি পণ্যে জিএসটি চাপছে।” রাহুল গান্ধী আজ চড়া হারের জিএসটির সঙ্গে বেকারত্বকেজুড়ে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। কার্যত একই সুরে বরুণ বলেছেন, ‘‘অতীতের রেকর্ড ভেঙে দেওয়া বেকারত্বের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত মধ্যবিত্ত পরিবার, বিশেষ করে ভাড়া বাড়িতে থাকা তরুণদের পকেট আরও খালি করে দেবে। যখন সুরাহা দেওয়ার সময় ছিল, তখনই আমরা আঘাত করছি।’’
২০১৪-য় ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদী স্লোগান তুলেছিলেন, ‘বহুত হুই মহঙ্গাই কি মার! অব কি বার মোদী সরকার!’ বিরোধীদের অভিযোগ, মোদীর আমলেই মূল্যবৃদ্ধি সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘গত তিন মাস ধরে খুচরো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের উপরে। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ৮ শতাংশের কাছাকাছি। পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার মে মাসে ১৫.৮৮ শতাংশ ছিল। মোদী জমানায় রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম ৪১৪ টাকা থেকে বেড়ে ১০৫৩ টাকা হয়েছে। তার উপরে মোদী সরকার জিএসটি বাড়াচ্ছে। আমরা মুলতুবি প্রস্তাব এনে এ বিষয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছিলাম। আলোচনা দূরের কথা, প্রসঙ্গটা উল্লেখ করতেই দেওয়া হয়নি।’’
কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের চাহিদা মেটাতে মোদী সরকার কয়লা আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আগামী দিনে বিদ্যুতের মাসুলও বাড়বে। কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গৌতম আদানির সংস্থাকে ফায়দা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। এ নিয়েও কংগ্রেস সরব হবে।
বিরোধীদের রণকৌশল, শুধু প্রথম দিন নয়। সংসদের অধিবেশনে এর পরেও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করা হবে। কংগ্রেস আগামিকাল সকালে সংসদ চত্বরে গান্ধীমূর্তির সামনে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিক্ষোভ দেখাবে। তাতে রাহুল গান্ধীও হাজির থাকবেন। বাদল অধিবেশনের শুরুর আগে সংসদের সচিবালয় থেকে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছিল, সংসদ চত্বরে কোনও ধর্না, বিক্ষোভ দেখানো চলবে না। কংগ্রেস তা মানতে নারাজ। আজ আম আদমি পার্টিও অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে সেই নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy