বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
ফের অশান্ত মণিপুর। ঘরের ওই অশান্তি নিয়ে বিদেশের মাটিতে প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আমেরিকা সফর করছেন তিনি। নিউ ইয়র্কে আমেরিকার শতবর্ষপ্রাচীন চিন্তনসংস্থা ‘কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশনস’-এর আলোচনাচক্রে মণিপুরের অশান্তি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন জয়শঙ্কর।
বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “মণিপুরের সমস্যার একটি দিক হল, বাইরে থেকে আসা মানুষের ফলে রাজ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যাঁরা দেশের বাইরে থেকে এসেছেন। এ ছাড়াও, সেখানে এই হিংসার ইতিহাস রয়েছে। রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।” তাঁর কথায়, ‘‘মণিপুরে চূড়ান্ত হিংসার সময় যে পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তা বলে দেয়, যে সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাপক ভাবে নিয়ন্ত্রণ দরকার। যাতে হিংসা আর না ছড়ায়।”
গত পাঁচ মাস ধরে মণিপুরে হিংসা চলছে। নতুন করে দুই পড়ুয়াকে অপহরণ ও খুনের ঘটনায় ফের মণিপুরে অশান্তি ছড়িয়েছে। পড়ুয়ারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আজ এ নিয়ে দিল্লিতে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মণিপুর নিয়ে নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলেছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহকে কেন মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হচ্ছে না, কেন প্রধানমন্ত্রী এক বারও মণিপুরে যাওয়ার সময় পেলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির।
মণিপুরে ইম্ফল-সহ ১৯টি থানা এলাকা বাদে বাকি রাজ্যকে উপদ্রুত এলাকা বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, গোটা মণিপুর ‘ডিসটার্বড এরিয়া’, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ‘আনডিসটার্বড’। কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ তুলেছেন, বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের উপরে রাজ্যের পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী নির্যাতন চালাচ্ছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের অভিযোগ, বিজেপির জন্যই মণিপুর যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ১৪৭ দিন হয়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে যাওয়ার সময় পাননি।
কয়েক মাস আগেই রাষ্ট্রপুঞ্জের একাধিক বিশেষজ্ঞ মণিপুরের হিংসার ছবি ও খবর দেখে ‘আতঙ্ক’ প্রকাশ করেন। মণিপুরে মানবাধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘন হয়েছে বলে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষজ্ঞরা তখন দাবি করায় নয়াদিল্লি পাল্টা জবাব দিয়েছিল, এই মতামত ‘বিভ্রান্তিকর’, ‘অনভিপ্রেত’, ‘আগ বাড়িয়ে করা’। আজ এই প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, “আমি ব্যক্তিগত ভাবে এই কথাগুলি বলিনি, আমাদের মুখপাত্র বলেছিলেন। কিন্তু যদি জানতে চান, ওই মন্তব্য কি ঠিক? আমিবলব, হ্যাঁ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy