Advertisement
E-Paper

কাঁটাতারকে ফাঁকি দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ভারতে জঙ্গিরা

জম্মুতে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। মাটির উপরে লাগানো হয়েছে কাঁটাতারের দীর্ঘ বেড়া। জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ আটকাতে সেখানে কড়া নজরদারিও চালাচ্ছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:১০

জম্মুতে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। মাটির উপরে লাগানো হয়েছে কাঁটাতারের দীর্ঘ বেড়া। জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ আটকাতে সেখানে কড়া নজরদারিও চালাচ্ছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। কিন্তু মাটির উপরের এই কড়া নজর এড়াতে এখন সম্পূর্ণ নতুন কৌশল নিচ্ছে জঙ্গিরা। কাঁটাতারের ও পার থেকে একেবারে সিঁধেল চোরের মতো সুড়ঙ্গ কেটে এ পারে পৌঁছচ্ছে তারা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আজ উঠে এসেছে জঙ্গি কার্যকলাপের এই নতুন তথ্য।

গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, জম্মু সংলগ্ন সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও, ভূ-প্রকৃতির সাহায্য নিয়ে জঙ্গিরা সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ভারতের জমিতে প্রবেশ করছে। কাঁটাতারের বেড়ার ও পাশে প্রায় আধ কিলোমিটার দূর থেকে শুরু হয়ে এ দিকেও অনেকটা ভিতর পর্যন্ত ঢুকে পড়ছে সুড়ঙ্গ। আজকের বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, এই সমস্যা রুখতে সীমান্ত এলাকায় বিশেষ প্রযুক্তি বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, ইজরায়েল থেকে আনা প্রযুক্তির মাধ্যমে বিষয়টি মোকাবিলা করতে চাইছে ভারত।

পাশাপাশি, পঞ্জাব সংলগ্ন ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণে মাদক ভারতে ঢুকছে বলেও এ দিন স্বীকার করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কয়েক মাস আগেই সীমান্ত সংলগ্ন গুরদাসপুরের একটি থানায় হামলা চালায় তিন লস্কর জঙ্গি। তদন্তে দেখা যায় জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে ঘরোত নদী সাঁতরে পঞ্জাবের বামিয়াল এলাকা দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল ওই জঙ্গিরা। এই পরিস্থিতিতে পঞ্জাব-সহ দেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আজ বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা কার্যত স্বীকার করে নেন, কয়েক বছর ধরে কেন্দ্রের মূল নজর ছিল জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই অরক্ষিত থেকে গিয়েছে পঞ্জাবের সীমান্ত এলাকা।

পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের মতো পঞ্জাব সীমান্তেও একাধিক নদী ও জলবিভাজিকা থাকায় নজরদারি চালানো বেশ কঠিন কাজ বলেই মনে করেন বিএসএফ কর্তারা। তাঁদের দাবি, এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ। জঙ্গি অনুপ্রবেশের পাশাপাশি জেলে নৌকার মাধ্যমে জলপথে নিয়মিত ভাবে পাঠানো হচ্ছে মাদক দ্রব্য। এই মুহূর্তে দেশে মাদক সেবনকারী রাজ্যগুলির তালিকায় পঞ্জাবের স্থান প্রথম তিনে।

পশ্চিমবঙ্গের অভিজ্ঞতা থেকে তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার জানতে চান, পঞ্জাবের যে এলাকাগুলিতে নদীর মাধ্যমে দেশের সীমানা ভাগ হয়েছে, সেখানে কী ভাবে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, বৈঠকে কাকলি বলেন, গুরদাসপুর থেকে পাকিস্তান সীমান্ত মাত্র দশ কিলোমিটার। আর গুরদাসপুরের উপর দিয়ে গিয়েছে ১৫ নম্বর জাতীয় সড়ক। যার উত্তরে পাঠানকোট আর একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে গুজরাতের কচ্ছ। ফলে জঙ্গিরা এক বার গুরদাসপুরে পৌঁছে যাওয়ার অর্থ, ১৫২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৫ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে উত্তর থেকে পশ্চিম ভারত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারবে তারা। সে ক্ষেত্রে তাদের খোঁজা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে।

তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা জানান, ওই ঘটনার পর জাতীয় সড়ক ছাড়া নদীতেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বোটের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এ দিন কাশ্মীরে ভারত-পাক সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য।

barbed wire pak terrorists tunnel intrusion pak intrusion pak terrorists intrusion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy