সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিতের পর সম্প্রতি চন্দ্রভাগা (চেনাব) নদীর জল আটকেছে ভারত। জম্মু-কাশ্মীরের রামবন জেলায় পাকিস্তানমুখী ওই জলপ্রবাহের উপর রয়েছে বগলিহার বাঁধ। সেই বাঁধের সমস্ত গেট বন্ধ থাকায় কিছু ক্ষণের জন্য চন্দ্রভাগার স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয়। এর ফলে খরিফ মরসুমে নদীর নিম্ন প্রবাহে ২১ শতাংশ জল কম পৌঁছোতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের সিন্ধু নদী ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষের (আইআরএসএ) আওতাধীন বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে, পাকিস্তানে খরিফ মরসুমের প্রথম পর্বে (মে থেকে ১০ জুন) ২১ শতাংশ জল কম পৌঁছোতে পারে। কৃষিকাজ এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সিন্ধুর জলের উপর নির্ভরশীল পাকিস্তান। কিন্তু খরিফ মরসুমে সিন্ধুর নিম্ন অববাহিকায় জল কম পৌঁছোলে চাষের বড় ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছে ইসলামাবাদ। খরিফ মরসুমের দ্বিতীয় পর্বে (১১ জুন থেকে সেপ্টেম্বর) পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়, তার উপর নজর রাখছে পাকিস্তান।
আইআরএসএ একটি প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, চন্দ্রভাগায় জলের প্রবাহ হঠাৎ করেই কমে যাওয়ায় পাকিস্তানে জল কম পৌঁছোচ্ছে। ফলে খরিফ মরসুমের প্রথম পর্বে কম জল পৌঁছোবে সে দেশে।
আরও পড়ুন:
রামবনের বগলিহার এবং উত্তর কাশ্মীরের কিশনগঙ্গা বাঁধের মাধ্যমে পশ্চিমমুখী জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ভারত। কখন জল আটকানো হবে, কখন ছাড়া হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পহেলগাঁও কাণ্ডের পর পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে নয়াদিল্লি। কাশ্মীরে সিন্ধু এবং তাঁর উপনদীগুলির জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশেই এই চুক্তির উপর নির্ভরশীল। ভারত চুক্তির শর্ত না-মানলে ইচ্ছামতো জলপ্রবাহ আটকে দিতে পারে বা বাড়তি জল ছাড়তে পারে। দুই ক্ষেত্রেই পাকিস্তানে সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।
কিছু দিন আগে বিতস্তার জল ছেড়েছিল ভারত। তাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। অভিযোগ, ভারত না জানিয়ে কোনও সতর্কবার্তা ছাড়াই জল ছেড়েছে। ফলে নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সময় পাননি। অবশ্য একটি অংশের দাবি ছিল, নিয়ম মেনেই জল ছাড়া হয়েছে।