সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে দু’দিন আগেই ভারত সরকারকে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারি। এ বার সিন্ধুর জল সরবরাহ নিয়ে নয়াদিল্লিকে হুমকি দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফও। গত কাল একটি অনুষ্ঠানে শরিফ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শত্রু দেশকে উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে। পাক প্রধানমন্ত্রীকে আবার আজ পাল্টা জবাব দিয়েছেন এমআইএম নেতা তথা সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসি।
গত এপ্রিলে কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপরে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত সরকার। সম্প্রতি পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে তাদের এক্স হ্যান্ডলে ভারত সরকারের কাছে জল সরবরাহ ফের চালু করার আর্জি জানানো হয়েছে। এর পরে বিলাবল এক বার্তায় সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। পাক প্রধানমন্ত্রী এ বার দাবি করেছেন, সিন্ধুর জল পাকিস্তানে প্রবেশ বন্ধ করাটা ‘যুদ্ধ’ হিসেবেই তাঁরা দেখছেন। গত কাল ইসলামাবাদের ওই অনুষ্ঠানে শরিফ বলেছেন, ‘‘শত্রু দেশকে আমি এটাই বলতে চাই যে, তোমরা আমাদের জল আটকে রাখলেও পাকিস্তানের এক বিন্দুও তোমরা ছিনিয়ে নিতে পারবে না। তোমাদের আবারও এমন শিক্ষা দেওয়া হবে যে, নিজেদের কান নিজেরাই ধরতে বাধ্য হবে।’’
ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এখনও পর্যন্ত শরিফের হুঁশিয়ারি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়াই জানায়নি। তবে এমআইএম সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসি পাকিস্তানকে ‘ব্রহ্মস’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এক সাক্ষাৎকারে ওয়েইসিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘শরিফকে অবিলম্বে নির্বোধের মতো কথা বলা বন্ধ করতে হবে। ওরা যেন ভুলে না যায় যে, ভারতের ‘ব্রহ্মস’-এর মতো ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।’’
তবে সিন্ধু জলচুক্তি নিয়ে পড়শি দু’দেশের মধ্যে তিক্ততা বাড়ছেই। জানা গিয়েছে, ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশনে নিযুক্ত কূটনীতিক এবং তাঁদের পরিবারকে নানা ভাবে হেনস্থা করছে পাক সরকার। শরিফ সরকারের নির্দেশেই ভারতীয় কূটনীতিক এবং দূতাবাস কর্মীদের বাড়িতে রান্নার গ্যাস, পানীয় জলের মতো অত্যাবশ্যক সামগ্রীর সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু ভারতীয় সংবাদ চ্যানেল বিদেশ মন্ত্রকের সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করেছে, এ ভাবে কূটনৈতিক কর্মীদের সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার অর্থ ভিয়েনা চুক্তি লঙ্ঘন করা। গত জুন মাস থেকে ইসলামাবাদে কর্মরত ওই সব ভারতীয় কূটনীতিক নিজেদের বাড়িতে সংবাদপত্রও পাচ্ছেন না। এর পরে ভারতে কর্মরত পাকিস্তানি কূটনীতিকদের সংবাদপত্র সরবরাহও বন্ধ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)