পাক হামলার যোগ্য জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনা।
ওয়াঘায় মিষ্টি দিয়ে জম্মুর পুঞ্চ জেলার দু’টি জায়গায় গোলাগুলি ছুঁড়ল পাকিস্তান। আর দিল্লিতে বসে পাক হাইকমিশনার কাশ্মীরের ‘স্বাধীনতা’র দাবি জানালেন।
রবিবার এই ভাবেই ৬৯তন স্বাধীনতা দিবসটি পালন করল পাকিস্তান। যার শুরুটা হয়েছিল রবিবার ভোর রাত থেকেই। কোনও কারণ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর জম্মুর পুঞ্চ জেলার শাপু কান্দির দু’জায়গায় ভারতীয় সেনাচৌকির ওপর গোলাগুলি চালাতে শুরু করে পাক জওয়ানরা। সংঘর্যবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে সীমান্তের ও পার থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসতে থাকে পাক গোলা, মর্টার। যেখানে আজ হানাদারি চালিয়েছে পাক জওয়ানরা, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে সেটি ‘সংঘর্ষ-বিরত এলাকা’ বলে চিহ্নিত। চার মাস পর আবার পাক গোলাগুলি আছড়ে পড়ল ওই এলাকায়। খবর, এখনও গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে শাপু কান্দিতে। এ দিন নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পুঞ্চের শাহপুর, কসবা, গৌতিয়ানের মতো ছ’টি গ্রাম-সহ ভারতীয় চৌকি লক্ষ্য করে মূলত হামলা চালিয়েছে পাক সেনা। মর্টার শেলের আঘাতে গুরুতর জখম এক প্রৌঢ়াকে পুঞ্চ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই নিয়ে গত চার মাসে দু’বার হামলা চালাল পাক সেনা। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল পুঞ্চ সেক্টরেই হামলা চালায় তারা। গত এক বছরে নিয়ন্ত্রণ রেখায় এই নিয়ে ৩০ বার যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করল পাকিস্তান। গত বছর সীমান্তের ও পার থেকে ভারতীয় সেনাচৌকি লক্ষ্য করে পাকিস্তানের গোলাগুলি ছোড়ার মোট ৪০৫টি ঘটনায় ১৬ জন সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারান। জখম হন কম করে ৭১ জন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মণীশ মেহতা বলেছেন, ‘‘কোনও কারণ বা প্ররোচনা না থাকলেও জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় ফের গোলাগুলি চালানো শুরু করেছে পাকিস্তান। আমাদের বাহিনীও পাল্টা জবাব দিতে শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।’’ ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, কোনও রকম প্ররোচনা ছাড়াই লাইট মেশিন গান নিয়ে গুলি ছুড়তে থাকে পাক সেনা। কিছু ক্ষণ পর মিডিয়াম মেশিন গান-সহ মর্টার হামলাও চালায় তারা। হামলার যোগ্য জবাব দেন ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। সূত্রের খবর, দু’পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াই চলছে। এই ঘটনায় প্রাণহানি না হলেও গুরুতর জখম হয়েছেন বেশ কয়েক জন।
স্বাধীনতা দিবসের আগের দিনে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অঞ্চলে অস্থিরতা তৈরি করতেই এই হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনাচক্রে এ দিন পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। গত শনিবারও পুঞ্চের একটি বাজারে গ্রেনেড হামলা চালায় তিন দুষ্কৃতী। ওই ঘটনায় ১১ জন গুরুতর জখম হন। পুলিশ জানিয়েছে, আহতেরা সকলেই অমরনাথ যাত্রী। এখনও পর্যন্ত দু’জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি জনের খোঁজে এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
এ সবের মধ্যেই ওয়াঘা সীমান্তে রবিবার মিষ্টি বিলি করেন ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও পাকিস্তানের রেঞ্জাররা। গত বছর পঞ্জাব ও জম্মু-কাশ্মীরে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিহানার ঘটনার প্রতিবাদে এই মিষ্টি বিলির অনুষ্টান বয়কট করেছিল বিএসএফ। এ দিন পাক রেঞ্জাররা বিএসএফ জওয়ানদের মিষ্টির প্যাকেট দিয়েছেন। তবে আগামীকাল তার প্রেক্ষিতে বিএসএফের তরফেও পাক রেঞ্জারদের মিষ্টির প্যাকেট দেওয়া হবে কি না, তা অস্পষ্ট হয়ে গেল রবিবার পুঞ্চে ভারতীয় সেনাচৌকি লক্ষ্য করে পাকিস্তানের গোলাগুলি বর্ষণ আর দিল্লিতে পাক হাইকমিশনারের কাশ্মীর-সংক্রান্ত বিবৃতিতে।
আরও পড়ুন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy