একে রামে রক্ষে নেই, তায় সুগ্রীব দোসর। নোটাতঙ্কে মানুষের এখন প্রাণ ওষ্ঠাগত, তার সঙ্গে জুড়েছে নুন নিয়ে আতঙ্ক! ৫০০ ও ১০০০ টাকা বদলাতে, সেই সঙ্গে এটিএমে টাকা তুলতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে তাঁদের। সবার লক্ষ্য যখন ‘একটু টাকা পাই কোথায়’, এরই মধ্যে বাজারে রটে যায় টাকার মতোও ‘গায়েব’ হতে চলেছে নুন। ব্যস, টাকার পিছু ধাওয়া করার পাশাপাশি নুন দখলের লড়াইয়ে নেমে পড়েছে উত্তর ভারতের একটা বড় অংশ।
শুক্রবার দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে রটে যায় নুনের জোগান কম, হু হু করে দাম বাড়বে। তাই যত পারো মজুত করো। এই গুজব রটতেই উত্তর প্রদেশে কোথাও কোথাও এক কেজি নুনের দাম এক লাফে ৪০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে গেছে! দিল্লিতেও কোথাও কোথাও ২০০ টাকা কেজিতে বিকোচ্ছে নুন।
একেবারে বাদ যায়নি এ রাজ্যও। শুক্রবার রাতেই ট্যাংরা, নারকেলডাঙা, তপসিয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে ঘরে ঘরে নুন মজুত করে রাখার হিড়িক পড়ে যায়। সাড়ে আটটার পর থেকেই ভিড় জমে যায় দোকানে। ট্যাংরার এক নুন বিক্রেতার দাবি, কয়েক জন ক্রেতা তাঁকে জানান, শনিবারই রাজ্য থেকে নুন উধাও হয়ে যাচ্ছে। সে কারণে তাঁরা বেশি করে নুন মজুত করে রাখতে চান।এটিএমের মতোই নুন কিনতে দোকানে দোকানে ভিড় লেগে যায়। দেশের আরও অনেক জায়গাতেও এই ছবি দেখা গেছে। তবে উত্তর ভারতের মতো গুজবের এত বেশি প্রভাব আর কোথাও পড়েনি।
তবে অনেক রাজ্য প্রশাসনই গুজব ঠেকাতে দ্রুত আসরে নেমে পড়ে। রাজ্যবাসীদের আশ্বস্ত করে বলা হয়, এমন কোনও আকাল ঘটেনি। ঘটার সম্ভবনাই নেই। দেশে নুনের জোগান যথেষ্টই রয়েছে। উত্পাদনেও কোনও খামতি নেই। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল রাজ্যবাসীকে টুইটারে বলেন, “কিছু মানুষ নুন নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে। তাতে কান দেবেন না। এই ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। যাঁরা নুন মজুত করবে তাঁদের রেয়াত করা হবে না।”
উত্তরপ্রদেশ জুড়ে যে ভাবে এই গুজব ছড়িয়েছে, বাধ্য হয়ে পুলিশ বড় বড় বাজারগুলোতে হানা দিতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে একটা বিশেষ দলও গঠন করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, নুন গায়েবের কথা রটতেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নুনের দাম চড়চড় করে বাড়তে শুরু করে। যে নুন ১৫-২০ টাকা কেজি ছিল, এক লাফে বেড়ে ২০০-৩০০ টাকা, কোথাও কোথাও ৪০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে যায়। কিছু ব্যবসায়ী নুন মজুত করতে শুরু করে। পুলিশ জানিয়েছে, মানুষকে বোঝানোর পাশাপাশি যাতে কেউ প্রচুর মাত্রায় নুন মজুত করতে না পারে সে দিকেও নজর রেখে বাজার ও দোকানগুলোতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন- আতঙ্ক নুন গুজবেও
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy