ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি কাছাকাছি এনে দিয়েছে ভারত-চিনকে। আজ দিল্লিতে ‘জ্ঞান ভারতম’ নামে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এসে, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কী ভাবে তাঁকে পর্যটক হিউয়েন সাং-এর কাছে থাকা অতীতের পাণ্ডুলিপি দেখাতে প্রেসিডেন্টের গ্রামে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আন্তর্জাতিক সম্মলনের মঞ্চ থেকে বার্তা দিলেন চিনের সঙ্গে নতুন করে গড়ে ওঠা নৈকট্যের।
গতকাল থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে তিন দিনের ‘জ্ঞান ভারতম’ সম্মেলন। যার ‘থিম’ হল, পুরনো পুঁথিপত্র ও পাণ্ডুলিপির মাধ্যমে ভারতের জ্ঞানের পুনরুদ্ধার। আজ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে বক্তব্য রাখেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের প্রাচীন পাণ্ডুলিপির ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ এক দিকে বৌদ্ধিক চুরিকে রুখতে সাহায্য করবে, তেমনই উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জ্ঞানকে ব্যবহার করে অন্যদের পেটেন্ট নেওয়ার যে প্রবণতা রয়েছে, তা রুখতে সাহায্য করবে।’’
মোদীর কথায়, ভারতের ভান্ডারে বর্তমানে আশিটি ভাষায় প্রায় এক কোটির কাছাকাছি পুঁথি-পাণ্ডুলিপি রয়েছে, যেগুলি ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করার কাজ চালু রয়েছে। এ ছাড়া ভারত থেকে অতীতে যে সব দেশে পাণ্ডুলিপি গিয়েছে, যেমন তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ভিয়েতমান, মঙ্গোলিয়া— সে সব দেশের সঙ্গেও হাত মিলিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে আজ চিনের উল্লেখ করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘চিনের পর্যটক হিউয়েন সাং যখন ভারত থেকে ফিরে যান, তখন উপহার পাওয়া প্রায় ছ’শো পাণ্ডুলিপি সঙ্গে নিয়ে যান। হিউয়েন সাং যাওয়ার সময়ে আমার জন্মস্থান গুজরাতের বডনগর হয়ে গিয়েছিলেন। তেমনই তিনি চিনের যে প্রান্তে থাকতেন, সেখানেই বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর বাড়ি।’’ মোদী বলেন, চিনের প্রেসিডেন্ট তাঁকে হিউয়েন সাং-এর গ্রামে নিয়ে গিয়ে ভারত থেকে সাং-এর নিয়ে যাওয়া পাণ্ডুলিপি দেখিয়েছিলেন।
কৃত্রিম মেধা (আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স)-কে ব্যবহার করে প্রাচীন পাণ্ডুলিপির পাঠোদ্ধারের উপরেও জোর দেন মোদী। যে কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটি। আজ মোদী বলেন, ‘‘বৈদিক অঙ্কের অনেক পাণ্ডুলিপি আমাদের কাছে রয়েছে। আবার অনেক পাণ্ডুলিপি হারিয়ে গিয়েছে। যেগুলি আছে, সেগুলির পাঠোদ্ধার ও জ্ঞান আহরণে কৃত্রিম মেধার ব্যবহার করা যেতে পারে। হতে পারে তা থেকে নতুন কোনও সূত্র বেরিয়ে আসতে পারে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)