শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে সে দেশে অস্থির পরিস্থিতির কারণে দক্ষিণ এশিয়ার বস্ত্রশিল্প উৎপাদনের মূল কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত ঢাকা থেকে ক্রমশ মুখ ফেরাচ্ছে আমেরিকা এবং ইউরোপ। এই দুই দেশের বাজারের দিকে তাকিয়ে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের বস্ত্র রফতানি আগামী পাঁচ বছরে তিন গুণ করার ডাক দিলেন। তাঁর বার্তা স্পষ্ট, বস্ত্রশিল্পের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার নেতৃত্বভার ভারতকে নিতে হবে। তার জন্য সব রকম ভাবে চেষ্টা চালাতে হবে বলে জানিয়েছেন মোদী।
আজ নয়াদিল্লির ভরতমণ্ডপমে বস্ত্রশিল্প সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সমাবেশ ‘ভারত টেক্স ২০২৫’-এ বক্তৃতা দেন মোদী। বলেন, ‘‘আজ বিশ্বে ভারত ষষ্ঠ বৃহত্তম বস্ত্রশিল্প রফতানিকারী দেশ। আমাদের রফতানি তিন লক্ষ কোটি টাকা ছুঁয়েছে। এখন আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হল ২০৩০ সালের মধ্যে এই লক্ষ্যমাত্রাকে ন’লক্ষ কোটিতে পৌঁছে দেওয়া। তবে আজ দেশের উদ্দীপনা দেখে আমার মনে হচ্ছে, আপনারা সবাই আমার হিসেবকে ভুল প্রমাণ করে দেবেন। এই কাজ (ন’লক্ষ কোটির রফতানির লক্ষ্যমাত্রা) আরও আগেই পূরণ হবে।’’
দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পরে ভারতের বাণিজ্যনীতি এবং শুল্ক নিয়ে কড়া নীতি নিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ঘাটতি নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন ট্রাম্প। এই অবস্থায় বছরের শেষে ভারত-আমেরিকা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য সাউথ ব্লকের তরফে জোরকদমে চেষ্টা শুরু হয়েছে। সেই চুক্তিতে ভারতের বস্ত্রশিল্পও একটি বড় বিষয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমেরিকার কড়া শুল্কনীতির মোকাবিলা করা এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে ভারতীয় বস্ত্রশিল্প আগামী দিনে বড় ভূমিকা নিতে পারে।
প্রসঙ্গত চার দিনের এই সমাবেশে ১২০টিরও বেশি দেশের ৬ হাজার আন্তর্জাতিক সদস্য, বাণিজ্যকর্মী এবং ক্রেতা যোগ দিয়েছেন। মোদীর কথায়, এই সমাবেশটি বিশ্বের বিভিন্ন নীতি নির্ধারক সংস্থা, শিল্পকর্তা, এবং বিনিয়োগকারীদের সমন্বয় এবং অংশীদারির মঞ্চ হয়ে উঠছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এটা খুবই আনন্দের কথা যে, আজ আমরা যে বীজ বপন করলাম, তা দ্রুতই বটগাছে পরিণত হবে।’’ তাঁর দাবি, ভারতের বস্ত্রশিল্পে আসা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ গত এক দশকে দ্বিগুণ বেড়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)