ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে ফোনে কথা হল ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। কী ভাবে দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা হয় দুই রাষ্ট্রপ্রধানের। শনিবার এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে মাক্রোঁর সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়টি জানান মোদী। ইউক্রেন যুদ্ধ ছা়ড়াও ভারত এবং ফ্রান্সের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির বিষয়ে কথা হয় মোদী-মাক্রোঁর।
এক্স পোস্টে মোদী জানান, ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর সঙ্গে অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করেছি।’’ শুধু তা-ই নয়, আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক বিষয়গুলি নিয়েও দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে জানান মোদী। সেই তালিকায় ছিল ইউক্রেন যুদ্ধের দ্রুত অবসানের প্রচেষ্টার প্রসঙ্গও। ফোনালাপ প্রসঙ্গে মোদীর আরও বলেন, ‘‘ভারত এবং ফ্রান্সের কৌশলগত অংশীদারি বিশ্বব্যাপী শান্তি এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’’
বছর তিনেক আগে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালায়। তার পর থেকে দু’দেশের মধ্যে সংঘাত চলছে। ইউক্রেনে হামলার কারণে আমেরিকা-সহ পশ্চিম বিশ্বের রোষের মুখে পড়ে রাশিয়া। অনেক দেশই রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সেই তালিকায় রয়েছে ফ্রান্সও। রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে বহু দেশ। তবে ব্যতিক্রম ছিল ভারত। রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর ‘জরিমানা’ বাবদ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন। তবে রাশিয়া থেকে তেল কেনার বিষয়ে অনড় ভারত। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ ছিল, ভারত তেল কেনায় রাশিয়া যা লাভ করছে, তা ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে ভারত কখনই কারও পক্ষ নেয়নি। ভারত স্পষ্ট জানিয়েছে, তারা সব সময়ই যুদ্ধ অবসানের পক্ষে। কী ভাবে শান্তিপূর্ণ পথে তা সম্ভব, তা নিয়ে যে কোনও পদক্ষেপে ভারত রয়েছে। এ ব্যাপারে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যেমন কথা বলেছেন মোদী, তেমনই ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গেও আলোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন:
তবে দুই দেশের সংঘাতে ফ্রান্সের মতো পশ্চিম বিশ্বের অনেক দেশই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে। দিন দুয়েক আগে মাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন জ়েলেনস্কি। তার পরে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন ‘‘যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে ২৬টি দেশ ইউক্রেনের সুরক্ষার জন্য একটি সহায়তা বাহিনী গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’’ যদিও ইউক্রেনের মাটিতে বিদেশি সেনা সহ্য করবে না বলে জানান পুতিন। পশ্চিমি দেশগুলিকে সতর্ক করে তাঁর বার্তা, যুদ্ধরত ইউক্রেনে কেউ যদি সেনা পাঠায়, তবে তারাও রুশ সেনাবাহিনীর নিশানায় থাকবে। পুতিনের মতে, শান্তিচুক্তিতে বিদেশি উপস্থিতির কোনও যুক্তি নেই। সেই আবহে এ বার ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে মোদী ও মাক্রোঁর কথা হল ফোনে।