Advertisement
E-Paper

উদ্ধবের সামনেই কৃষি আইনের প্রশংসায় মোদী

বালসাহেব ঠাকরের ছেলেকে কিছুটা রাজনৈতিক বার্তা দিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন এর আগে ক্ষমতায় থাকা দেবেন্দ্র ফডণবীস সরকারেরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৪৪
অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মরাঠা নেতা বালসাহেব ভিখে পাটিলের জীবনী প্রকাশ অনুষ্ঠানে ভিডিয়ো কনফারেন্সে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।

অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মরাঠা নেতা বালসাহেব ভিখে পাটিলের জীবনী প্রকাশ অনুষ্ঠানে ভিডিয়ো কনফারেন্সে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে।

নতুন কৃষি আইন মহারাষ্ট্রে কার্যকর করবেন বলে এখনও কথা দেননি মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। বরং এতে চাষিদের অসুবিধার কথা তুলে সম্পর্ক তেতো হয়ে যাওয়া পুরনো শরিক বিজেপিকে মাঝেমধ্যেই বিঁধেছে তাঁর দল শিবসেনা। নতুন আইনের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত সরকারে তাঁর শরিক কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে সরকারি অনুষ্ঠানে উদ্ধবের উপস্থিতিতেই কৃষি আইনের ঢালাও প্রশংসা করে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দাবি করলেন, তা একান্ত প্রয়োজনীয় বলে। এমনকি, বালসাহেব ঠাকরের ছেলেকে কিছুটা রাজনৈতিক বার্তা দিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন এর আগে ক্ষমতায় থাকা দেবেন্দ্র ফডণবীস সরকারেরও।

প্রধানমন্ত্রী ফের কৃষি আইনের পক্ষে সরব হলেও, বিরোধিতার সুর নামাতে নারাজ কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। সম্প্রতি পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় কৃষক বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার সংক্ষিপ্ত ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে দিয়ে তাঁর অভিযোগ, কৃষকদের এত দিনের পরিশ্রমে খাদ্য-নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছিল দেশে। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে মোদী সরকার। কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির যা কিছুতেই মেনে নেবে না বলে তাঁর দাবি।

প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মরাঠা নেতা বালসাহেব ভিখে পাটিলের জীবনী প্রকাশ অনুষ্ঠানে মোদী আজ বলেন, “নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে পাটিলজি বলতেন, কৃষিকাজকে (ব্যবসায়িক) উদ্যোগ হিসেবে দেখা হবে না কেন? সাম্প্রতিক কৃষি সংস্কারে তা-ই চেষ্টা করা হয়েছে। চাষিকে শুধু অন্নদাতার ভূমিকায় আটকে না-রেখে উদ্যোগপতি হয়ে ওঠার সুবিধা দেওয়া হয়েছে।” প্রধানমন্ত্রীর মতে, কয়েক দশকে কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনেক কাজ হয়েছে। কিন্তু চাষিদের আয় কিংবা মুনাফা কী ভাবে বাড়বে, তা নিয়ে ভাবা হয়নি। নতুন কৃষি আইনে তাই পাখির চোখ করা হয়েছে চাষির আয় বৃদ্ধিকেই। গত ছ’বছরে তাঁর সরকার গ্রাম ও গরিব চাষির জন্য কী কী করেছে, তার দীর্ঘ তালিকাও পেশ করেছেন মোদী।

বিরোধীরা অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, এপিএমসি তুলে দেওয়া নতুন কৃষি আইনে চাষিরা এত খুশি হয়ে থাকলে, দেশের নানা প্রান্তে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন কেন? রাহুল-সহ অনেকের প্রশ্ন, যে চাষিরা ফড়েদের সঙ্গে দরকষাকষিতে পেরে ওঠেন না, তাঁরা পেল্লাই দেশি সংস্থা কিংবা বহুজাতিকের সঙ্গে দামের পাঞ্জা কষবেন কী ভাবে? সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদব থেকে শুরু করে

কৃষি আইনের বিরোধিতায় শামিল বহু জনের বক্তব্য, ফসলের ভাল দাম পাওয়ানোই যদি কেন্দ্রের উদ্দেশ্য হয়, তা হলে আইনে লেখা হোক, খোলা বাজারে চাষিদের থেকে ফসল কিনতে হলে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের থেকে কম দর দেওয়া যাবে না। অথবা কেউ তা দিলে, সেই ফারাক ভরাট করে দেবে কেন্দ্র। কিন্তু এর কোনওটিই মোদী সরকার মানতে নারাজ! অত্যাবশ্যক পণ্য আইন শিথিল করে দেওয়ার কারণে চাষি-সহ দরিদ্রদেরও বেশি দামে আনাজ কিনতে হবে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তবে সরকার যে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ফসল কেনা জারি রাখবে, সেই বার্তা দিতে আজ এক গুচ্ছ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। নতুন আইন নিয়ে আগামিকাল কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসবে তারা।

মোদী আজ বলেছেন, “পানীয় ও সেচের পর্যাপ্ত জল না-থাকা মহারাষ্ট্রের বহু গ্রামের জ্বলন্ত সমস্যা। এর সমাধানের খোঁজে পাটিলজি জল পরিষদ তৈরির মাধ্যমে জন আন্দোলন তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, ২০১৪ সালের পর থেকে এমন উদ্যোগে গতি আনার চেষ্টা হয়েছে। আর (মরাঠা মুলুকে) প্রতি গ্রামে প্রতি ঘরে (মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী) দেবেন্দ্রজির সরকারের পরিচয়ই এই কাজের সূত্রে।” প্রধানমন্ত্রীর ওই কথার পরে ভিডিয়ো অনুষ্ঠানে বিজেপি নেতারা যখন হাততালি দিচ্ছেন, উদ্ধবের মুখ তখন যথাসম্ভব ভাবলেশহীন।

Narendra Modi Uddhav Thackeray Farm Law
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy