জিএসটি সংস্কারের কারণে দেশের জনগণের যে আর্থিক সুরাহা হচ্ছে, তা বাতিল করতে কংগ্রেস-শাসিত রাজ্য সরকারগুলি মানুষের উপর নতুন করের বোঝা চাপাচ্ছে বলে আজ অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ওড়িশায় ঝাড়সুগুড়া জেলার একটি জনসভায় উপস্থিত শ্রোতাদের উদ্দেশে মোদী বলেন, “৫ সেপ্টেম্বর থেকে জিএসটি সংস্কারের কাজ চলছে। বিজেপি সরকার আপনাদের খরচ কমানো ও সঞ্চয় বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কংগ্রেস এখনও তাদের কাজ (অপকর্ম) থেকে সরে আসছে না।” প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “কংগ্রেসের রাজ্য সরকারগুলি মানুষকে লুট করতে এখনও ব্যস্ত রয়েছে। কোনও কারণ ছাড়া আমি একথা বলছি না। আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে যে (জিএসটির হার কমায়) গোটা দেশের মানুষ উপকৃত। মানুষ যাতে কম দামে ঘর নির্মাণ করতে পারে, সেজন্য জিএসটির নতুন ব্যবস্থায় সিমেন্টের উপরেও কর কমানো হয়েছে। ...অথচ কংগ্রেসের সরকার নতুন কর চাপিয়ে দিয়েছে।”
মোদীর অভিযোগ, সাধারণ মানুষকে খুশি রাখতে দিতে রাজি নয় কংগ্রেস। কারণ, এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার যখন ডিজেল ও পেট্রলের দাম কমিয়েছিল, কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যগুলি তখন পেট্রোপণ্যের উপর কর বাড়িয়েছিল। যাতে দামে কোনও পরিবর্তন না আসে। আর এর মাধ্যমে তারা নিজেদের সরকারগুলির আয় বাড়াচ্ছিল। মোদীর কথায়, “এটা লুটের রাস্তা। আমাদের সরকার সিমেন্টের দাম কমাচ্ছে, আর তারা নতুন কর বসাচ্ছে।” প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেস-শাসিত হিমাচল প্রদেশের নাম তুলে বলেন, “ভারত সরকার হিমাচল প্রদেশের মানুষকে যে সুবিধা দিতে চাইছে, কংগ্রেসের সরকার তা আটকে দিচ্ছে। তারা জানে কী ভাবে লুট করতে হয়।”
শুধু জিএসটি সংস্কারের প্রশ্নই নয়, এ দিনের সভা থেকে অতীতে কেন্দ্রের শাসনক্ষমতায় থাকা কংগ্রেসের নীতিকেও টেনে এনেছেন মোদী। তাঁর কথায়, “২০১৪ সালের আগে আপনাদের লুট করার সুযোগ কখনও ছাড়ত না কংগ্রেস। বিজেপিকে সরকারে আনার পর থেকে আমরা সেই লুট থেকে জনগণকে রক্ষা করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।” প্রধানমন্ত্রীর দাবি, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জমানায় বছরে কেউ দু’লক্ষ টাকা রোজগার করলেই তাঁকে আয়কর দিতে হত। কিন্তু এখন বছরে ১২ লক্ষ টাকা রোজগার করলেও আয়কর দিতে হয় না। জিএসটি সংস্কারের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বিরাট ভাবে কমে গিয়েছে বলেও দাবি করেন মোদী। বলেন, “কংগ্রেস যখন ক্ষমতায় ছিল, কোনও পরিবার খাবার বাবদ বছরে এক লক্ষ টাকা খরচ করলে তার উপর ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা কর দিতে হত, এখন সেই অঙ্কটা পাঁচ থেকে ছ’হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে।” মোদী দাবি করেছেন, এর ফলে গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি প্রতি বছরে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা সঞ্চয় করতে পারছে। জিএসটি সংস্কারের ফলে কৃষি উৎপাদনের যন্ত্রাংশের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকেরাও ব্যাপক ভাবে উপকৃত হচ্ছেন বলে এ দিন দাবি করেছেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রী এ দিন ওড়িশায় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনা করেছেন। নিজস্ব ৪জি নেটওয়ার্কেরও উদ্বোধন করেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দেন, এই নেটওয়ার্ক ৫জি-তে রূপান্তর করা হবে। ৪জি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশের ৩০ হাজার গ্রামের দু’কোটির বেশি মানুষ পরিষেবা পাবেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)