কোনও দেশ যত বেশি অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবে, তার উন্নয়নের সঙ্গে তত আপস করা হবে। বৃহস্পতিবার দেশবাসীকে আত্মনির্ভরতার পাঠ দিতে গিয়ে এমনটাই বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বক্তব্য, ভারতের আর অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকা যাবে না। সরাসরি কোনও দেশের নাম অবশ্য তিনি উল্লেখ করেননি। তবে ভারত-আমেরিকা সাম্প্রতিক টানাপড়েনের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে গত কয়েক মাস ধরে এক কূটনৈতিক চাপানউতর চলছে। রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনা পছন্দ নয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। এর জন্য ‘জরিমানা’ বাবদ আমেরিকার বাজারে ভারতীয় পণ্যের উপর চড়া হারে শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। মার্কিন শুল্কের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের রফতানিতে। এই পরিস্থিতি বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরপ্রদেশের গৌতমবুদ্ধ নগরে এক কর্মসূচিতে বক্তৃতার সময় ফের নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দিলেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের মতো দেশের কারও উপর নির্ভর করে থাকা উচিত নয়। গোটা বিশ্বে (আর্থিক উন্নয়নে) অনিশ্চয়তা এবং ব্যাঘাত ঘটলেও, ভারতের উন্নতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কোনও ব্যাঘাত আমাদের বাধা দিতে পারেনি। বরং এই পরিস্থিতিতেও আমরা নতুন দিকের সন্ধান চালিয়েছি। এই সকল প্রতিকূলতার মাঝেও ভারত আগামী কয়েক দশকের জন্য নিজের ভিত মজবুত করছে।” এর পরেই মোদীর সংযোজন, “আমাদের মন্ত্র হল আত্মনির্ভর ভারত। পরনির্ভরতার চেয়ে বড় অসহায়তা কিছু হয় না। কোনও দেশ অন্যের উপর যত বেশি নির্ভর করে, তার উন্নয়নের সঙ্গেও তত আপস করা হয়।”
আরও পড়ুন:
বস্তুত, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে শুল্কসংঘাতের মাঝে দেশের আত্মনির্ভরতার পক্ষে এর আগেও মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। গত সপ্তাহেই তিনি বলেছেন, পরনির্ভরতা দেশের ‘সবচেয়ে বড় শত্রু’। এ বার ফের তা মনে করিয়ে দিলেন মোদী। গুজরাতের ভাবনগরে ওই জনসভা থেকে মোদী বলেছিলেন, “বিশ্বে আমাদের বড় কোনও শত্রু নেই। আমাদের একমাত্র প্রকৃত শত্রু হল অন্য দেশের উপর নির্ভরতা। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু। আমাদের প্রত্যেককে একসঙ্গে ভারতের এই শত্রুকে হারাতে হবে।”