Advertisement
E-Paper

কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে সরানো হল বুলন্দশহরের এসএসপি-কে, আটক সেই জওয়ান

বুলন্দশহরের ঘটনা নিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছে যোগী সরকারের উপরে। ঘটনার পর ছ’দিন কেটে গেলেওএখনও মূল অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি পুলিশ। ফলে রাজ্য জুড়ে যে একটা অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে, তা আঁচ করেই শুক্রবার তড়ঘড়িউচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেনরাজ্য পুলিশের ডিজি ওপি সিংহ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৪:১৩
বুলন্দশহরে সে দিনের হিংসা। ফাইল চিত্র। নিহত পুলিশ আধিকারিক সুবোধ কুমার সিংহ (ইনসেটে)।

বুলন্দশহরে সে দিনের হিংসা। ফাইল চিত্র। নিহত পুলিশ আধিকারিক সুবোধ কুমার সিংহ (ইনসেটে)।

হিংসা রুখতে দ্রুত ব্যবস্থা নিলেন না কেন?এই প্রশ্ন তুলে সরিয়ে দেওয়া হল উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের পুলিশ সুপার কৃষ্ণবাহাদুর সিংহকে। তাঁকে আপাতত লখনউয়ে বদলি করা হয়েছে।কৃষ্ণবাহাদুরের জায়গায় নিয়ে আসা হয়েছে সীতাপুরের পুলিশ সুপার প্রভাকর চৌধুরীকে। শুধু এসএসপি-ই নয়, তাঁর সঙ্গে বুলন্দশহরের অন্য দুই আধিকারিককেও বদলি করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

বুলন্দশহরের ঘটনা নিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছে যোগী সরকারের উপরে। ঘটনার পর ছ’দিন কেটে গেলেওএখনও মূল অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি পুলিশ। ফলে রাজ্য জুড়ে যে একটা অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে, তা আঁচ করেই শুক্রবার তড়ঘড়ি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেনরাজ্য পুলিশের ডিজি ওপি সিংহ। সেখানেই এসএসপি-কে বদলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের হাতে রিপোর্টও তুলে দেন ডিজি।

একটা মাত্র গুজব। গ্রামের জঙ্গলে কারা নাকি গোমাংস এনে ফেলেছে। আর তাতেও জ্বলে উঠেছিল গোটা বুলন্দশহর। দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দল নিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংহ। কিন্তু পরিস্থিতি তো নিয়ন্ত্রণে আসেইনি, উল্টে আরও বিগড়ে যায়। পুলিশকে দেখে তেড়ে আসে উত্তেজিত জনতা। তাদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। সুবোধ কুমারকে তাড়া করে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। ভিড়ের মধ্যে থেকেই অনেককে বলতে শোনা যায়, ‘মারো…মারো…ওঁর বন্ধুকটা কেড়ে নাও’। তার কিছু ক্ষণ পরেই দেখা যায় পুলিশের জিপ থেকে ঝুলছেন সুবোধ। কপাল থেকে ঝরঝর করে রক্ত বেরোচ্ছে। সে অবস্থাতেই বেশ কিছু ক্ষণ পরে থাকেন সুবোধ। উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় তাঁকে।

বুলন্দশহরের পুলিশ সুপার সুপার কৃষ্ণবাহাদুর সিংহ।

আরও পড়ুন: বুলন্দশহরে নিছক দুর্ঘটনা: আদিত্যনাথ

সুবোধ কুমার সিংহকে কে মারল, এই প্রশ্নই গোটা রাজ্য জুড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেক রকম তত্ত্বও উঠে এসেছে এই ঘটনাকে ঘিরে। কিন্তু সুবোধের হত্যাকারী কে সে বিষয়টি ধোঁয়াশাই থেকে গিয়েছে এখনও পর্যন্ত। যদিও সম্প্রতি সে দিনের ঘটনার একটি সামনে আসে। সেই ভিডিয়োতে সেনার পোশাকে এক জনকে দেখাও গিয়েছে। দাবি করা হচ্ছে জীতু ফৌজি নামে সেই জওয়ানই নাকি গন্ডগোলের মাঝে গুলি চালিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন কাশ্মীরে। শ্রীনগরে পোস্টিং জীতুর। ১৫ দিনের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। গত ৩ ডিসেম্বর যখন বুলন্দশহরে হিংসা ছড়ায় সে সময় তিনি ওখানেই ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্র থেকে খবর পাওয়া গিয়েছে। হিংসা চলাকালীন তাঁকে ভিডিয়ো তুলতেও দেখা যায়। প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, সুবোধ কুমারকে সে দিন তিনিই গুলি করেছেন। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি দল শুক্রবারেই সোপোরে পৌঁছে যায়। গত রাতেই সেখান থেকে জীতুকে আটক করে তারা। তবে জীতুই যে গুলিটা চালিয়েছিলেন সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা উচিত নয় বলেই মন্তব্য করেছেন তদন্তকারী এক শীর্ষ আধিকারিক।

সন্দেহভাজন সেই জওয়ান জীতু ফৌজি।

আরও পড়ুন: বুলন্দশহরে গুলি চালিয়েছিল জওয়ান? ভিডিয়ো ফুটেজে চাঞ্চল্য

সুবোধের মৃত্যুর পরই প্রশ্ন ওঠে তা হলে কি রাজনীতির শিকার হলেন তিনি? এই ঘটনার পিছনে কি আরএসএস-বজরং দলের যোগ রয়েছে?— এমন নানা তত্ত্ব উঠে আসে। বেশ কয়েক জনের নামে মামলাও দায়ের করা হয়। কিন্তু মূল অভিযুক্ত বজরং দলের যোগেশ রাজের টিকি পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রথম দিকে এ ব্যাপারে মুখ না খুললেও, চাপ বাড়তে থাকায় অবশেষে তিনি বলেন,‘‘এটা চক্রান্ত করেই করা হয়েছে।’’এই বক্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই একেবারে ‘ইউটার্ন’ নিয়ে ফের তিনি বলেন, ‘‘এটা নিছকই একটি দুর্ঘটনা!’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে যখন বিপুল সমালোচনা হচ্ছে, তখনই উঠে আসে জীতু ফৌজির তত্ত্ব।প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, আসল দোষীকে আড়াল করতেই কি জীতুকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হল? সব কিছু ছাপিয়ে একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে, সুবোধের আসল হত্যাকারী কে?

Bulandshahr Violence বুলন্দশহর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy