স্ত্রীকে খুন করে তাঁর দেহে ফুল ছড়িয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর আত্মঘাতী হলেন এক পুলিশকর্মী। তাঁদের ১০ বছরের মেয়ের চোখের সামনেই সে সব ঘটে।
এমনই ঘটনা ঘটেছে উত্তর গুয়াহাটিক মধ্যম খণ্ড এলাকায়। পুলিশ জানায়, কার্বাইনের গুলিতে স্ত্রী জবাদেবীকে খুন করেন কনস্টেবল যোগেন নাথ। প্রথম বার গুলির শব্দ শুনে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। যোগেনবাবুর বাড়ির সামনে হাজির হয় পুলিশ। ওই কনস্টেবলকে বাড়ির বাইরে বেরতে বলা হয়। ঠিক তখনই ফের গুলির আওয়াজ শোনা যায়। দরজা ভেঙে পুলিশ ঘরে ঢুকে দেখে— মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে স্বামী-স্ত্রীর দেহ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত কাল কাজ শেষ হওয়ার পর সার্ভিস কার্বাইন জমা না দিয়ে বাড়ি চলে যান যোগেনবাবু। সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ বাড়ি ফেরেন তিনি। রাত সাড়ে তিনটের সময় স্ত্রী জবাদেবীর মাথায় গুলি করেন যোগেনবাবু। বাড়ির লোক তা জানতে পেরে পুলিশে ফোন করে। পুলিশ ভোর থেকে বাড়ি ঘিরে ফেলেছিল। তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
জবাদেবীর ভাই নবকুমার দাস জানান, শ্বশুরবাড়িতে জবাদেবীর উপরে দৈহিক ও মানসিক অত্যাচার চালানো হতো। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সাত বছর আগে তিনি বাপের বাড়ি চলে আসেন। ছুটি পেলেই তিনি শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। জবাদেবীর বোন জানান, যোগেনবাবুর বাবা-মা তাঁর উপরে মানসিক অত্যাচার চালাচ্ছিলেন। ছেলের নামে থাকা জমি তাঁরা বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তাই যোগেনবাবুর মাথা গোঁজার জায়গা ছিল না। তাঁর বাড়ির লোকরা জানান, গত কাল মেয়েকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী শুতে গিয়েছিলেন। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ দু’বার গুলির শব্দ হয়। মেয়ে অনিন্দিতা জবাদেবীর মায়ের ঘরে এসে জানায় বাবা তার মাকে গুলি করেছে। সকলে ছুটে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে জবাদেবীর দেহ। পাগলের মতো আচরণ করছেন যোগেনবাবু। হাতে কার্বাইন। যোগেনবাবুই সকলকে জোর করে ঘর থেকে বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে বাড়ি ঘিরে ফেলে। তত ক্ষণে আলো ফুটেছে। পুলিশ মাইকে বারবার যোগেনবাবুকে অস্ত্র ফেলে বেরিয়ে আসতে বলে। কিন্তু ফের গুলির শব্দ আসে বাড়ির ভিতর থেকে।