Advertisement
E-Paper

‘প্রাণ বাঁচাতে ছুটছিলাম’! মেসিকে গান শোনাবেন বলে লন্ডন থেকে কলকাতায় এসে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা গায়কের

গায়ক জানিয়েছেন, গ্যালারির কাছে ট্র্যাকে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। কথা ছিল, মেসি ঘুরে সেখানে এলে গান ধরবেন তিনি। মেসির সঙ্গে ছিলেন লুই সুয়ারেজ, রদ্রিগো ডি’পল। কিন্তু সেই গান শোনানো আর হয়নি অ্যান্টনির।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:৫৩
গায়ক চার্লস অ্যান্টনি।

গায়ক চার্লস অ্যান্টনি। ছবি: সংগৃহীত।

২০১৬ সালে মারাদোনা যখন কলকাতায় এসেছিলেন, তখন তাঁর জন্য গান গেয়েছিলেন। এ বার লিয়োনেল মেসির জন্য কলকাতায় আর গান গাওয়া হয়নি লন্ডন থেকে আসা চার্লস অ্যান্টনির। উল্টে প্রাণ বাঁচাতে ছুটতে হয়েছিল তাঁকেই। ১৩ ডিসেম্বর যুবভারতীর সেই অভিজ্ঞতা সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ওই গায়ক। তাঁর দুঃখ, মেসিকে কলকাতায় গান শোনাতে পারেননি বলে নয়, দুঃখ, ফুটবলের উদ‌্‌যাপন বদলে গিয়েছিল প্রাণরক্ষার লড়াইয়ে।

অ্যান্টনি আদতে মালয়ালি। কিন্তু ১৮টি ভাষায় গান গাইতে পারেন তিনি। মেসির জন্য স্প্যানিশ ভাষায় গান লিখেছেন। কলকাতা-সহ ভারতের চার শহরে ঘুরে ফুটবল তারকাকে সেই গান শোনানোর কথা ছিল তাঁর। সেই মতো মেসির সফরের আয়োজক শতদ্রু দত্তের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছিল। অ্যান্টনি পিটিআই-কে বলেন, ‘‘প্রাণ বাঁচাতে ওই দিন ছুটেছিলাম।’’

১৩ ডিসেম্বর মেসি যত ক্ষণ মাঠে ছিলেন, প্রায় পুরো সময় তাঁকে ঘিরে ছিলেন ভিভিআইপিরা। দর্শকেরা প্রিয় তারকাকে দেখতে না-পেয়ে ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন। মেসি মাঠ থেকে বেরিয়ে গেলে শুরু হয় ভাঙচুর। অ্যান্টনির কথায়, ‘‘মেসিকে প্রায় দেখতেই পাইনি। তিনি হাসছিলেন। তবে দূর থেকে দেখেও বোঝা যাচ্ছিল, তিনি অস্বস্তি বোধ করছিলেন।’’

গায়ক জানিয়েছেন, গ্যালারির কাছে দৌড়োনোর ট্র্যাকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কথা ছিল মেসি ঘুরে সেখানে এলে গান ধরবেন তিনি। মেসির সঙ্গে ছিলেন লুই সুয়ারেজ, রদ্রিগো ডি’পল। কিন্তু সেই গান শোনানো আর হয়নি অ্যান্টনির। তিনি দেখেন, মাঠ লক্ষ্য করে ধেয়ে আসছে জলের বোতল, খাবারের প্যাকেট, ধাতব জিনিন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ভাগ্যবান যে, আমার আঘাত লাগেনি। আমার বাজানোর যন্ত্রেরও ক্ষতি হয়নি।’’ অ্যান্টনি মাঠের ‘অব্যবস্থা’ নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তিনি জানান, তাঁর অনুষ্ঠানের আগের দিন তাঁকে মাঠে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ১৩ ডিসেম্বর শব্দ পরীক্ষার জন্য কখন পৌঁছোতে হবে, তা নিয়েও ছিল সংশয়। অ্যান্টনির অভিযোগ, তাঁকে এক বার বলা হয় সকাল সাড়ে ৯টায় রিপোর্ট করতে। এক বার বলা হয় রিপোর্ট করতে হবে সকাল সাড়ে ১০টায়!

শতদ্রুর আমন্ত্রণে তিনি লন্ডন থেকে কলকাতায় যান বলে জানিয়েছেন অ্যান্টনি। তার পরে মুম্বই এবং দিল্লিতে গান গাওয়ার কথা ছিল। বাকি দু’জায়গায় মেসির জন্য গান গাইতে পারলেও কলকাতায় আর হয়নি। অ্যান্টনি জানিয়েছেন, বাকি দুই শহরে যদি গান গাইতে না-পারতেন, তা হলে লন্ডন থেকে ভারতে আসাটাই ‘বৃথা’ হত তাঁর।

অ্যান্টনি সে দিনের ঘটনার কথা বলতে গিয়ে জানান, ভিভিআইপি-দের মাটির নীচে একটি পথ নিয়ে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ তখন তাঁকে মাঠ ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলে। অ্যান্টনি জানান, কোনও মতে নিজের বাদ্যযন্ত্র ব্যাগে ভরে ছুট দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ ভিভিআইপি-দের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছিল। আমার সুরক্ষা নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা ছিল না।’’

অ্যান্টনি জানান, তাঁকে আরও বিপদে ফেলেছিল তাঁর গলায় ঝোলানো ট্যাগ। মাঠে উপস্থিত লোকজন তাঁকে আয়োজক সংস্থার কর্মী ভেবে নিয়েছিলেন। আর তাতেই বিপত্তি হয়। পুলিশ তাঁকে মাঠের মাঝে গিয়ে দাঁড়াতে বলে, যাতে দর্শকদের ছোড়া জিনিস তাঁর গায়ে না-লাগে। এর পরে প্রাণ হাতে করে যুবভারতী থেকে ছুট দেন অ্যান্টনি। হায়াতে উঠেছিলেন তিনি। গায়ক জানান, স্টেডিয়াম থেকে ছুটেই নিজের হোটেলে পৌঁছোন। তাঁর কথায়, ‘‘কাউকে দেখার সময় ছিল না। প্রাণ বাঁচাতে ছুটে পালাই।’’

এর পরে অ্যান্টনি যোগাযোগ করেন শতদ্রুর সঙ্গে। যদিও তাঁকে ফোনে পাননি। গায়কের কথায়, ‘‘তখন শুধুই অনিশ্চয়তা। আমি বিরক্ত হই। কিন্তু কিছু করার ছিল না।’’ অ্যান্টনি জানান, ২০১৬ সালে যখন কলকাতায় মারাদোনা এসেছিলেন, তখন এই ধরনের কোনও সমস্যা হয়নি। তাঁর কথায়, ‘‘তখন আমি একেবারে ভিতরের বৃত্তেই ছিলাম। কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি।’’ অ্যান্টনির মতে, এ বারের পরিস্থিতির জন্য শতদ্রু একা দায়ী নন। তাঁর কথায়, ‘‘মেসির কাছে যাতে কেউ না আসে, শতদ্রু চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সম্ভবত ভিভিআইপি-রা সেল্ফি (নিজস্বী) তুলছিলেন। তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy