ভোট গণনা হতে আরও দু’দিন বাকি। তার আগেই তামাম বুথ-ফেরত সমীক্ষা আজ জানিয়ে দিল, উত্তরপ্রদেশে ‘অ্যাডভান্টেজ’ বিজেপি! এদের একাংশের মতে, হিন্দিবলয়ের বৃহত্তম এই রাজ্যে একার জোরেই সরকার গড়ে ফেলবেন মোদী-অমিত শাহরা। বাকিরা বলছেন, ফলাফল ত্রিশঙ্কু হতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রেও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হবে বিজেপি। সরকার গড়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবে তারাই।
স্বাভাবিক ভাবেই এই খবরে উচ্ছ্বসিত গেরুয়া শিবির। তবে এখনই দমে যায়নি সপা-কংগ্রেস। বরং পরিস্থিতি ত্রিশঙ্কু হতে পারে আঁচ করে, কৌশলে আজই ‘মহাজোটের’ প্রস্তাব পেড়ে রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যদি এমনই (ত্রিশঙ্কু) হয়, তা হলে বিজেপি-কে ঠেকাতে মায়াবতীর হাত ধরতেও আমরা প্রস্তুত। কারণ, কেউই চাইবে না উত্তরপ্রদেশে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হোক আর বিজেপি রিমোট কন্ট্রোলে রাজ্য চালাক।’’ প্রসঙ্গত, লখনউয়ের রসায়নাগারে সপা-বসপা সমীকরণ নিয়ে এর আগেও এক বার পরীক্ষা হয়েছে। স্বল্প সময়ের জন্য হলেও নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় বহুজন নেতা কাঁসিরামের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়েছিলেন মুলায়ম।
বুথ-ফেরত সমীক্ষার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি অবশ্য প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। এ সব সমীক্ষার পূর্বাভাস প্রকৃত ফলাফলের সঙ্গে প্রায় হুবহু মেলার দৃষ্টান্ত যেমন রয়েছে। তেমনই বহুবার মেলেওনি। সে দিক থেকে জাতপাত-ধর্ম, আঞ্চলিক বৈচিত্রে ভরা উত্তরপ্রদেশের মতো বিশাল রাজ্যে সমীক্ষার ফল কতটা মিলবে তা নিয়ে সন্দেহ থাকা স্বাভাবিক। তা ছাড়া, অনেকের মতে, এই প্রক্রিয়ায় ভোটারদের মনোভাবের হদিস পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু তার ভিত্তিতে একটি সংখ্যায় পৌঁছনোর প্রক্রিয়ায় ত্রুটির অবকাশ রয়েছে।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে এগিয়ে বিজেপি, সাট্টা বাজারে জয়ের খবরেই শুরু উল্লাস
তবে এ সব যদি-কিন্তু যা-ই থাকুক, আপাতত তামাম পূর্বাভাস দেখে মোদী শিবির আশাবাদী। তাঁরা এ-ও বলতে শুরু করেছেন, শনিবারের প্রকৃত ফলই দেখিয়ে দেবে, বিজেপি একার জোরে সরকার গড়ছে। এবং তার কারণ হল, জাতপাতের অঙ্কটি নিখুঁত ভাবে করেছেন অমিত শাহ, যা অন্য দল করতে পারেনি।
তুলনায় কিছুটা বেসুর রয়েছে অখিলেশের মন্তব্যের মধ্যে। এখন প্রশ্ন হল, কেন এই প্রস্তাব দিলেন মুলায়ম-পুত্র? এমন কোনও জোট গড়ার হলে সেই কাজটি চুপিসারে করতে পারতেন অখিলেশ। যেমন বিজেপি আগেই মায়াবতীর সঙ্গে এক প্রস্ত কথা সেরে রেখেছে। জবাবে সপা সূত্রে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি ত্রিশঙ্কু হলে মায়াবতী যাতে বিজেপি-র হাত না ধরেন, সে জন্য আগাম চাপ তৈরি করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। সে জন্যই বিজেপি-কে রুখতে ভোট-উত্তর ধর্মনিরপেক্ষ মহাজোট গড়ার কথা বলছেন। তা ছাড়া, বিএসপি-র মধ্যে অনেক নেতা-বিধায়ক রয়েছেন, যাঁরা বিজেপি-র সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি নন। ফল প্রকাশের আগেই তাঁদের উস্কে দিতে চাইছেন অখিলেশ।
তবে যাঁর উদ্দেশে অখিলেশের এই প্রস্তাব, সেই মায়াবতী কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। ভোট শুরুর আগেই অখিলেশ এই প্রস্তাব একবার দিয়েছিলেন। তখন শোনামাত্রই তা খারিজ করেছিলেন মায়া। তা হলে আজ নীরব কেন? জবাবে বসপার এক নেতা বলেন, তাড়া কীসের? ঠিক সময়েই জবাব দেবেন বহেনজি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy