Advertisement
E-Paper

কংগ্রেস-সঙ্গ ছাড়তে পারলে বাঁচেন পিকে

হ্যাটট্রিকের দোরগোড়ায় এসে এখন মাঠ ছাড়তে চাইছেন পিকে! না, এই ‘পিকে’ সিনেমার আমির খান নন। ইনি কার্যক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদী আর নীতীশ কুমারের ভাগ্যবিধাতা।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৬ ০২:৫৯
প্রশান্ত কিশোর

প্রশান্ত কিশোর

হ্যাটট্রিকের দোরগোড়ায় এসে এখন মাঠ ছাড়তে চাইছেন পিকে!

না, এই ‘পিকে’ সিনেমার আমির খান নন। ইনি কার্যক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদী আর নীতীশ কুমারের ভাগ্যবিধাতা। এখন রাহুল গাঁধীর ভাগ্য বদলের ভার তাঁর কাঁধে। পঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশে। ইনি প্রশান্ত কিশোর। অন্দর মহলে যাঁকে সকলে ডাকেন পিকে বলে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের কাজ ছেড়ে গত লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ও পরে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ কুমারের সঙ্গে থেকে যে ভাবে খোলা হাতে কাজ করতে পেরেছেন, কংগ্রেসে এসে তিনি হোঁচট খাচ্ছেন। তা-ও হ্যাটট্রিকের দোরগোড়ায় এসে। প্রশান্তের ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে সংঘাত এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মাঝপথে দলের কৌশল রচনার কাজ থেকে অব্যাহতি চাইছেন তিনি।

উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ভাগ্য বদলের জন্য রাহুল গাঁধী বা প্রিয়ঙ্কা বঢরাকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কিছু দিন আগে। কিন্তু দল তা পত্রপাঠ খারিজ করেছে। কংগ্রেসের যুক্তি, রাহুল প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে নিজেকে রাখতে চান, তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা অবমাননাকর। আর প্রিয়ঙ্কাকে রাজনীতিতে আনার বিষয়টি বহুচর্চিত ও প্রতিবারের মতো এ ক্ষেত্রেও চাপা পড়েছে। তার পর প্রশান্ত সাংবাদিকদের সামনে দলকে দেওয়া সেই প্রস্তাবটির কথা জানান। এখন তাঁর নতুন সংঘাত তৈরি হয়েছে পঞ্জাবে দলের মুখ, ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহের সঙ্গে।

কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, আসলে প্রশান্ত দলের কৌশল স্থির করার নামে এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছেন, যেখানে তিনি স্থির করছেন কাকে প্রার্থী করা হবে, কাকে নয়। সে কারণে দলের মধ্যে তাঁকে নিয়ে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। অমরিন্দর সিংহের ঘনিষ্ঠরা তাঁর এমন হস্তক্ষেপ আদৌ পছন্দ করছেন না। কিন্তু প্রশান্ত জানান, দলকে জিততে হলে তাঁকে অবাধ স্বাধীনতা দিতেই হবে। লোকসভায় এ ভাবেই নরেন্দ্র মোদীর জয় তিনি সুনিশ্চিত করেছেন। আর বিহারে একেবারে ভিন্ন মেরুতে গিয়ে সেই মোদীর আস্ফালনের মোকাবিলা করে নীতীশের ঝুলিতে জয় এনে দিয়েছেন। তার পুরস্কারস্বরূপ প্রশান্তকে ‘ক্যাবিনেট’ মর্যাদা দিয়েছেন নীতীশ। কংগ্রেসের সঙ্গে সন্ধিও করে দিয়েছেন।

কিন্তু কংগ্রেসে এসে এমন ঝক্কি পোহাতে হবে, সেটি হয়তো আগেভাগে আঁচ করতে পারেননি প্রশান্ত। ঠিক যে ভাবে তিনি মোদীকে নিয়ে ‘চায়ে পে চর্চা’ করেছিলেন, সে ভাবে ‘কফি উইথ ক্যাপ্টেন’ও জনপ্রিয় করতে চাইছেন। উত্তরপ্রদেশে রাহুলের দলিত ভোট টানার রণনীতিকে বাদ দিয়ে ব্রাহ্মণ মুখকে সামনে আনার প্রস্তাব দিয়েছেন। কোন কেন্দ্রে কাকে দাঁড় করানো উচিত, সে সবও হিসেব-নিকেশ কষে স্থির করছেন। কিন্তু তাতেই স্থানীয় নেতাদের রোষের মুখে পড়ছেন প্রশান্ত। তাঁর বিরুদ্ধে ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়ছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের কাছে। পরিস্থিতি বুঝে হাইকম্যান্ডকে প্রশান্ত জানিয়েছেন, এই দু’টি রাজ্যে কংগ্রেসকে জিততে হলে তাঁর পরামর্শ মেনেই চলতে হবে।

কংগ্রেস সূত্রের মতে, রাহুল গাঁধী এখনও পর্যন্ত প্রশান্তের পরামর্শ মেনে চলার কথাই বলেছেন। যে হেতু গত দু’টি হেভিওয়েট ভোট জিতিয়ে তিনি একশো শতাংশ ‘স্ট্রাইক রেট’ বজায় রাখতে পেরেছেন। কিন্তু দলের নেতাদের ক্ষোভ কী ভাবে সামাল দেওয়া হবে আর সেই নিরিখে কংগ্রেস শিবিরে এক ‘বহিরাগত’কে কতটা হাত খুলে কাজ করতে দেওয়া হবে, সেটিই এখন দেখার।

Prashant Kishor Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy