Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

আর্থিক বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে তেলের চড়া দাম

শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজার বন্ধ হওয়ার সময় ব্রেন্ট অশোধিত তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ৬৮.৬০ ডলার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:০১
Share: Save:

তেলের জোগানে টান হয়তো পড়বে না। কিন্তু তার দাম কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, তা নিয়ে চিন্তায় মোদী সরকারের তেল মন্ত্রক। আমেরিকা-ইরান দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। রবিবার রাজধানী দিল্লিতে পেট্রলের দাম ছিল লিটারে ৭৫.৫৪ টাকা। গত এক বছরে পেট্রল এত বেশি দামে বিকোয়নি।

মার্কিন ড্রোন হানায় ইরানের সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেমানি নিহত হওয়ার পরে ইরান প্রত্যাঘাতের হুমকি দিয়েছে। শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজার বন্ধ হওয়ার সময় ব্রেন্ট অশোধিত তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ৬৮.৬০ ডলার। এক সময় তা ৬৯.৫০ ডলারে পৌঁছয়। মূল্যায়নকারী সংস্থা কেয়ার রেটিংস জানিয়েছে, অশোধিত তেলের দাম ৭০ ডলার হতে পারে। ইরান কী ভাবে মার্কিন হানার প্রত্যাঘাত করছে, কত দিন এই দ্বন্দ্ব চলবে, তার উপরে অশোধিত তেলের দামের ওঠানামা নির্ভর করবে। পেট্রলিয়াম দফতরের মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান আজ যুক্তি দিয়েছেন, ‘‘তেল উৎপাদনকারী অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়ালে ভারতে তার প্রভাব পড়বেই। তবে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কারণ কুয়েত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণই রয়েছে।’’ তেল মন্ত্রকের কর্তাদের ব্যাখ্যা, তেলের জোগান অব্যাহত থাকবে। কিন্তু ইরানের সঙ্গে আমেরিকার দ্বন্দ্বের প্রভাব গোটা উপসাগরীয় এলাকাতেই পড়বে। ফলে দাম বাড়বে অশোধিত তেলের।

আর্থিক বৃদ্ধির হার এমনিতেই ৪.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। মোদী সরকারের জন্য চিন্তার কারণ হল, তেলের দাম বাড়লে শুধু যে মূল্যবৃদ্ধি বাড়বে তা নয়, আর্থিক বৃদ্ধিতেও ধাক্কা লাগতে পারে। সরকারি অনুমান, তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ১০ ডলার বাড়লে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ০.২ থেকে ০.৩ শতাংশ নামতে পারে। বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি ৯০০ থেকে ১০০০ কোটি ডলার বেড়ে যেতে পারে। অশোধিত তেলের দাম ব্যারেলে ১ ডলার বেড়ে গেলেই তেল আমদানির খরচ ৬,৩২৮ কোটি টাকা বেড়ে যায়। যার অর্থ, অশোধিত তেলের দাম একই সঙ্গে বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের ঘাটতি, রাজকোষ ঘাটতি এবং আর্থিক বৃদ্ধিতে ধাক্কা দিতে পারে।

তেল মন্ত্রকের এক কর্তার ব্যাখ্যা, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি থেকেই দেশের তিন ভাগের দু’ভাগ তেল আমদানি হয়। তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ইরাক ও সৌদি আরব। ইরান থেকে তেল আমদানি ইতিমধ্যেই অনেকটা কমে গিয়েছে। সেই তুলনায় আমেরিকা থেকে আগের তুলনায় অনেক বেশি তেল আমদানি হচ্ছে। ফলে তেলের সরবরাহ এখনই ধাক্কা খাবে না। কিন্তু অশোধিত তেলের দাম ঠিক হয় আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী। কোথা থেকে তেল আসছে, তার সঙ্গে দামের খুব একটা সম্পর্ক নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crude Oil Iran USA Price Hike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE