Advertisement
E-Paper

আমাকে নিয়ে জল্পনা এ বার থামুক, বলছেন প্রিয়ঙ্কাই

লোকসভা ভোটে শোচনীয় হারের পরে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে ঘরে-বাইরে। এমনকী দলেরও অনেকে তাঁর যোগ্যতা নিয়ে ঠারেঠোরে সংশয় প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। আর তার সমান্তরালেই প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বে তুলে আনার দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রিয়ঙ্কা আজ নিজেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিলেন, তাঁকে নিয়ে এই সব আলোচনা নেহাতই জল্পনা। এ সব এ বার বন্ধ হওয়া উচিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২৩

লোকসভা ভোটে শোচনীয় হারের পরে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে ঘরে-বাইরে। এমনকী দলেরও অনেকে তাঁর যোগ্যতা নিয়ে ঠারেঠোরে সংশয় প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। আর তার সমান্তরালেই প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বে তুলে আনার দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রিয়ঙ্কা আজ নিজেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিলেন, তাঁকে নিয়ে এই সব আলোচনা নেহাতই জল্পনা। এ সব এ বার বন্ধ হওয়া উচিত।

কংগ্রেস রাজনীতিতে প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে জল্পনা নতুন নয়। দলের নবীন ও প্রবীণদের একটা বড় অংশই তাঁকে রাহুলের তুলনায় যোগ্য বলে মনে করেন। কংগ্রেসের সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরা রাজীব-কন্যার মধ্যে ইন্দিরা গাঁধীর ছায়া দেখতে পান। তাই মাঝে মধ্যেই ‘প্রিয়ঙ্কা লাও’ স্লোগান শোনা যায় কংগ্রেস সদর দফতরের উঠোনে। লোকসভা ভোটের সময়ও সেই দাবি উঠেছিল। তখনও প্রিয়ঙ্কা জানিয়েছিলেন, তিনি নিজেকে রায়বরেলী এবং অমেঠির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান। তার বাইরে রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় হওয়ার অভিপ্রায় এখন তাঁর নেই।

প্রশ্ন হল, প্রিয়ঙ্কাকে এখন কেন ফের মুখ খুলতে হল? রাহুল শিবিরের এক নেতার বক্তব্য, এর মূল কারণ হলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি! লোকসভা ভোটের পর রাহুল নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে রেখেছিলেন। গত পরশু থেকে তিনি সংসদে সক্রিয় হয়েছেন। লোকসভার ওয়েলে নেমে স্লোগানও তুলেছেন। স্পিকার সুমিত্রা মহাজনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করেছেন। সে দিনই পাল্টা আক্রমণে রাহুলকে ফের ঘরে ঢুকিয়ে দিতে জেটলি কংগ্রেসের সহ-সভাপতিকে খোঁচা দিয়ে পরোক্ষে প্রিয়ঙ্কার প্রসঙ্গ টেনে আনেন। এই অবস্থায় আজ মুখ খোলেন প্রিয়ঙ্কা। সংবাদমাধ্যমকে পাঠানো একটি টেক্সটে তিনি বলেন, “কংগ্রেসের বিভিন্ন পদের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে ইদানীং আমাকে নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা হচ্ছে। সময় সুযোগ বুঝে সেই বিষয়টি খুঁচিয়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু এগুলি একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা। আমি কৃতজ্ঞ থাকব, যদি এ ধরনের জল্পনায় হাওয়া দেওয়া বন্ধ হয়।”

কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, প্রিয়ঙ্কার মন্তব্য থেকে পরিষ্কার যে, এখনই নেতৃত্বে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। বরং রাহুলকে আরও সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাবে। সম্ভবত সোমবারই লোকসভায় সাম্প্রদায়িক হিংসা নিয়ে বিতর্কে অংশ নেবেন রাহুল।

মজার বিষয়, প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে যে জল্পনা, তাতে অক্সিজেন যোগাতে কংগ্রেসের নেতাদের ভূমিকাও কম নয়। দু’দিন আগে গাঁধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ নেতা অস্কার ফার্নান্ডেজও প্রিয়ঙ্কার হয়েই সওয়াল করেন।

রাহুল শিবিরের এক নেতা আজ বলেন, “যাঁরা এই ধরনের প্রচার চালিয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল রাহুলকে দুর্বল করা।” ওই নেতার দাবি, রাহুল একটা ধাক্কা খেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু তা বলে এখনই নেতৃত্বে বদলের দাবি অর্থহীন। তা ছাড়া যে সময় রাহুল কংগ্রেসের দায়িত্ব নেন, তখন মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে যে একটি নেতিবাচক হাওয়া ছিল, সেটাও ভুলে যাওয়া উচিত নয়।

তবে এর পরেও একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রিয়ঙ্কা কি কোনও দিনই রায়বরেলী, অমেঠি ছেড়ে বেরোবেন না? কংগ্রেসের এক বর্ষীয়ান নেতার বক্তব্য, এখনই এ কথা বলার সময় আসেনি। আগামী বছর, অর্থাৎ ২০১৫ সালে কংগ্রেস সভানেত্রী পদে সনিয়া গাঁধীর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাঁর শরীরের যা অবস্থা, তাতে তিনি ফের ওই পদে বসবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে রাহুলকে কংগ্রেসের সভাপতি করা হবে। আর দলের সংবিধান সংশোধন করে সনিয়াকে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। হতে পারে, তখন বা তার পরে সুযোগ বুঝে প্রিয়ঙ্কাকে কংগ্রেস সংগঠনের কোনও পদে আনা হতে পারে।

তা ছাড়া এটাও ঠিক, প্রিয়ঙ্কা কোনও পদে থাকুন বা না থাকুন, তিনি রাজনৈতিক ভাবে সর্বদাই সক্রিয়। রাহুলের বাসভবনের ‘ওয়ার রুম’ তিনিই সামলান। নেতাদের নির্দেশও দেন। কে বলতে পারে, সোমবার সংসদে রাহুলের বক্তৃতার খসড়া চূড়ান্ত করার ব্যাপারেও হয়তো মূল ভূমিকায় থাকবেন তিনিই।

Priyanka Vadra rahul gandhi congress lok sabha election national news latest news online news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy