একশো দিনের কাজের প্রকল্পের শুধু নাম পাল্টানোয় লাভ কী, প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। তাঁর মতে, এতে সরকারি কাগজ-কলমে নাম পরিবর্তনের খরচ বাড়বে ছাড়া আর কিছু হবে না। তাই স্রেফ নামবদল না করে ওই প্রকল্পে অভাবগ্রস্তরা যাতে আরও বেশি দিন কাজ ও বেশি দৈনিক ভাতা পান, তার দাবি তুলেছেন বিরোধীরা।
গত কাল একশো দিনের কাজের প্রকল্পের নাম মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ রোজগার গ্যারান্টি আইনের নাম বদলে পূজ্য বাপু গ্রামীণ রোজগার যোজনা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ ওই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রিয়ঙ্কা। তিনি বলেন, ‘‘ওই নাম পরিবর্তনের পিছনে যৌক্তিকতা কী, তা আদৌ বোধগম্য নয়।মহাত্মা গান্ধীর নাম সরিয়ে পূজ্য বাপু করা হলে সরকারের ফালতু অর্থ খরচ হবে। দফতরের নাম থেকে লেখার প্যাড— সব কিছুতেই নতুন ভাবে নামকরণ করতে হবে। যার ফলে প্রভূত অর্থ খরচ হবে। অহেতুক এ ধরনের কাজ করার অর্থ কী, তা বোঝা যাচ্ছে না।’’
বিরোধীদের একাংশের মতে, যে হেতু প্রকল্পে গান্ধী শব্দটি রয়েছে, তাই সেটিকে মুছে দিতেই পূজ্য বাপু শব্দবন্ধটি ব্যবহার করা হয়েছে। যা নিয়ে কটাক্ষ করছেন শিবসেনা সাংসদ (উদ্ধব গোষ্ঠী) প্রিয়ঙ্কা চর্তুবেদী। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের ইতিহাসে গান্ধী পরিবারের অবদান ভোলা যাবে না। মানুষ তা মনে রাখবেন।’’ কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপালের মতে, দেশের গ্রামীণ জনতার মন থেকে এ হল মহাত্মা গান্ধীকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা। সরকারের ওইনামকরণের উদ্যোগ আসলে দেশের প্রকৃত সমস্যা থেকে মানুষের নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বলেই মনে করছেন প্রিয়ঙ্কা চর্তুবেদী। তাঁর কথায়, ‘‘নানা দিকে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। তাই হতাশা থেকে সম্ভবত এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। যাতে মানুষ আসল সমস্যা নিয়ে আলোচনাভুলে যায়।’’
কংগ্রেসের আরেক সাংসদ মণীশ তিওয়ারি ‘কসমেটিক’ পরিবর্তনের বদলে মানুষের উপকারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেছেন। মণীশ বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজ ১২৫ দিন না করে তা ৩৬৫ দিন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। ন্যূনতম পাঁচশো টাকা মজুরি দেওয়া হোক। তবেই তাতে সমাজের প্রকৃতউপকার হবে।’’
অন্য দিকে, মহাত্মা গান্ধীর নাম সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে বিজেপি জানিয়েছে, পূজ্য বাপু শব্দের মধ্যে মহাত্মা গান্ধী রয়েছেন। আর আমজনতার যাতে আয় বাড়ে, সে লক্ষ্যেই কাজের দিনের সংখ্যা একশো থেকে বাড়িয়ে একশো পঁচিশ করা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)