হেমা সানে
সূর্য ডুবলেই তাঁর বাড়িতে জ্বলে ওঠে প্রদীপ।
কারণ ৭৯ বছরের হেমা সানে মনে করেন বিদ্যুৎ হল বিলাসিতা। তাই তাঁর বুধওয়ার পেঠের বাড়িতে কোনও বিদ্যুৎ সংযোগ রাখেননি তিনি। বিদ্যুৎ থেকে আসা সুখ-সুবিধের তোয়াক্কা না করেই গোটা জীবনটাই কাটিয়ে দিলেন পুণের এই অধ্যাপিকা!
হেমার কথায়, ‘‘খাবার, পোশাক এবং আশ্রয়ই হল মানুষের প্রাথমিক প্রয়োজন। বিদ্যুৎ মানুষের কাছে অপরিহার্য হয়ে ওঠে অনেকটাই পরে। এক সময়ে এই সুবিধে ছিল না। তবুও মানুষ দিব্যি জীবন কাটাত। আমারও তাই বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়ে না।’’ প্রকৃতি এবং পরিবেশের প্রতি ভালবাসা থেকেই এই ‘কঠিন’ জীবনধারা বেছে নিয়েছেন বলে জানালেন তিনি।
হেমার সঙ্গে থাকেন তাঁর দু’টি কুকুর, দু’টি বেড়াল একটি বেজি এবং অজস্র পাখি। তারাই তাঁর পরিবার। তাঁর এই বাড়িটি পোষ্যদেরই সম্পত্তি বলে জানান হেমা। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের দেখাশোনা করতেই আমি এখানে রয়েছি।’’ তাঁর এই জীবনযাপনের জন্য নানা রকমের কটাক্ষও শুনতে হয় তাঁকে। যদিও তা মোটেই গায়ে মাখেন না হেমা। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাকে অনেকেই পাগল বলেন। তা বলুক। আমি গায়ে মাখি না। আমি নিজের শর্তেই বাঁচব। আর এটাই হল আমার জীবনের পথ।’’
পুণের সাবিত্রীভাই ফুলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় পিএইচডি করেছেন হেমা। গারওয়ারে কলেজে অধ্যাপনাও করেছেন দীর্ঘদিন। উদ্ভিদবিদ্যা এবং পরিবেশ নিয়ে অনেকগুলি বই রয়েছে হেমার। লেখার অভ্যেস এখনও রয়েছে। একা লাগলেই এখনও খাতা-কলম নিয়ে বসে পড়েন।
নানা রকমের গাছে ঘেরা বুধওয়ার পেঠের তাঁর ছোট্ট বাড়িটিতে সকালে পাখির ডাক শুনেই ঘুম ভাঙে হেমার। সারা দিনের পরে সূর্য পশ্চিমে ঢলে পড়লেও তাঁর বাড়িতে জ্বলে ওঠে না বিদ্যুতের আলো। প্রদীপের আলোতেই দূর হয় বাড়ির অন্ধকার।
এই ভাবেই জীবনযাপনে অভ্যস্ত হেমা বলেন, ‘‘আমাকে প্রায়ই অনেকে প্রশ্ন করেন, বিদ্যুৎ ছাড়া আছেন কী করে? আমার তাঁদের কাছে পাল্টা প্রশ্ন, বিদ্যুৎ নিয়েই বা বাঁচেন কী করে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy