সীমান্ত-নীতির জেরে নিজভূমে পরবাসী অসমের গ্রামগুলিকে সীমান্তের ভিতরে প্রতিস্থাপন করার দাবি উঠল বিধানসভায়। প্রস্তাব নিয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হবে রাজ্য।
২৮ ফেব্রুয়ারি করিমগঞ্জ সীমান্তের জোড়াপাতা গ্রামের বাসিন্দা দীপক শুক্লবৈদ্যের বাড়িতে হানা দেয় ডাকাতের দল। দীপকবাবু ও তাঁর বড় ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে ছিলেন। স্ত্রী কল্পনা শুক্লবৈদ্য ও দুই নাবালিকা কন্যার উপরে চড়াও হয়ে, মারধর করে পালায় দুষ্কৃতীরা। ৩৫ নম্বর সীমান্ত চৌকির বিএসএফ জওয়ানরা তিনজনকে হাসপাতালে পাঠান। বিজিবি গত কাল জানায়, ঘটনায় অভিযুক্ত চার জনের মধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। করিমগঞ্জের জেলাশাসক, দক্ষিণ অসমের ডিআইজি, এসপি এলাকা পরিদর্শন করেন। ওই এলাকায় বিএসএফের স্থায়ী শিবির করতে বলা হয়।
আজ বিধানসভায় প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্ত বলেন, ‘‘সীমান্তে শূন্য থেকে ২০০ মিটার পর্যন্ত কাঁটাতারের ও পারে অসমের যে গ্রামগুলি রয়েছে, সেগুলির বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নেই। ও পারের দুষ্কৃতীরা অপরাধ করে পালায়। সন্ধেয় বিএসএফ দরজা বন্ধ করে দিলে অসুস্থ হলেও কাঁটাতারের ও পারে থাকা মানুষদের ভারতে ঢোকার উপায় নেই।’’ তাঁর দাবি, ওই এলাকার মানুষদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক। ভারতে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা হোক। এ পারে অপরাধ করা দুষ্কৃতীদের ভারতের আদালতে বিচারের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালাক ভারত সরকার।
আমগুড়ির বিধায়ক প্রদীপ হাজরিকা জানান, শিবসাগরে এটিএমে ডাকাতি ও পুলিশকে গুলি করার ঘটনাতেও সীমান্তের পার হয়ে আসা দুষ্কৃতীরা যুক্ত। ঢুকছে জেহাদিরাও। সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক কেন্দ্র।
উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ জানান, কোথাও কোথাও ভারতীয় ভূখণ্ডের ১ হাজার মিটার ভিতর দিয়েও টানা হয়েছে বেড়া। ফলে ও পারের হাজার-হাজার ভারতীয়কে বাঁচানোর কেউ নেই। কারণ, কাঁটাতার পার করে পুলিশের যাওয়ার এক্তিয়ার নেই। করিমগঞ্জের সাড়ে তিন কিলোমিটার সীমান্ত বন্ধ করতে বাধা দিচ্ছে বাংলাদেশ। অবিলম্বে সদন কমিটি গড়ে সীমান্ত বেড়া নতুন করে পাতার (রি-অ্যালাইনমেন্ট) ব্যবস্থা হোক।
জবাবে মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি জানান, কাঁটাতারের ও পারে করিমগঞ্জের দশটি, কাছাড়ের ২৪টি ও ধুবুরির দু’টি গ্রাম রয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা ভারতীয় হলেও তাঁদের নিরাপত্তা নেই। ওই গ্রামগুলির বাসিন্দাদের পুনর্বাসন ও প্রতিস্থাপন করার প্রস্তাব খুবই ভাল। প্রতিস্থাপন ও ‘রি-অ্যালাইনমেন্ট’ নিয়ে রাজ্য সরকার বিবেচনা করছে। তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। সীমান্তে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব থামাতে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়ে বাংলাদেশকে অবগত করতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy