বাবরি ধ্বংস নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য সঞ্জয় রাউতের।—ফাইল চিত্র।
রামমন্দির নির্মাণ নিয়ে ফের মোদী সরকারকে তোপ শিবসেনার। তবে বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক বাধিয়ে বসলেন দলের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত। বাবরি ধ্বংসের দায় কার্যত নিজের দলের ঘাড়েই চাপিয়ে দিলেন তিনি। এমনকি হুমকিও দিয়ে বসলেন সাংসদদের। জানিয়ে দিলেন, যে বা যাঁরা মন্দির নির্মাণে বাধা দেবেন, রাস্তাঘাটে নিরাপদে চলাফেরাই দায় হয়ে দাঁড়াবে তাঁদের।
রামমন্দির নির্মাণে কেন্দ্রের গড়িমসিতেই অসন্তুষ্ট সঞ্জয়। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘ভারতের ইতিহাসে কালো দাগ হয়ে বছরের পর বছর দাঁড়িয়েছিল বাবরি মসজিদ। মাত্র ১৭ মিনিটে তা গুঁড়িয়ে দিয়েছিলাম আমরা। রামভক্তরা যদি নিমেষের মধ্যে মসজিদ গুঁড়িয়ে দিতে পারে, তা হলে সামান্য কাগজ তৈরিতে এত সময় লাগছে সরকারের? রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে উত্তরপ্রদেশ, সর্বত্রই বিজেপির রাজত্ব। তা হলে অর্ডিন্যান্স জারি করতে সমস্যা কোথায়? আর কী চাই ওদের?’’
এই মুহূর্তে রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই বিজেপির। তাই চাইলেও মন্দির নির্মাণের জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করতে পারবে না তারা। কিন্তু সেই যুক্তি মানতে নারাজ সঞ্জয় রাউত। তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্যসভায় এমন অনেক নেতা রয়েছেন, যাঁরা মন্দির নির্মাণের দাবিকে সমর্থন করবেন। যাঁরা ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাবেন, মন্দির নির্মাণের বিরোধিতা করবেন, রাস্তাঘাটে নিরাপদে চলাফেরাই দায় হয়ে উঠবে তাঁদের।’’ বাবরি মসজিদ ধ্বংস নিয়ে এত দিন বিজেপি, আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দিকেই আঙুল উঠত। বিতর্কিত মন্তব্য করে সঞ্জয় রাউত নিজেই এ বার শিবসেনাকে তাতে সামিল করলেন।
আরও পড়ুন: মোদী হিন্দু-মুসলিম রোগে আক্রান্ত! তোপ কেসিআরের
আরও পড়ুন: পুলিশের জালে বান্টি-বাবলি জুড়ি, উদ্ধার ১৩১টি চোরাই ল্যাপটপ
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অযোধ্যার বিতর্কিত জায়গায়া রাম মন্দির নির্মাণের দাবি আরও স্পষ্ট হয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, রাষ্ট্রীয় স্বয়মসেবক সঙ্ঘের মতো দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিই যার মূল হোতা। ২০১০ সালে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত ওই জায়গাটিকে সুন্নি ওয়াকাফ বোর্ড, নিমরোহি আখড়া এবং রাম লালা-র মধ্যে তিন ভাবে ভাগ করে দিতে নির্দেশ দেয়। আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে ১৪টি আবেদন জমা পড়ে গিয়েছে।
কিন্তু জানুয়ারি মাসের আগে তার শুনানি সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তার পর থেকেই শীতকালীন অধিবেশনের আগে রাম মন্দির নির্মাণ নিয়ে অর্ডিন্যান্স জারি করতে কেন্দ্রকে চাপা দিচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। উদ্ধব ঠাকরে নেতৃত্বাধীন শিবসেনাও তাতে সামিল। আগামী বছর মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। এত দিন বিজেপির শরিক হয়ে থাকলেও, এ বার রাম মন্দিরকে হাতিয়ার করে একাই নির্বাচনে ঝাঁপাতে চাইছে তারা। উত্তরপ্রদেশেও প্রার্থী দাঁড় করাতে চাইছে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে। সেই মতো চলতি সপ্তাহের শেষেই যোগীর রাজ্যে দু’দিনের সফরে যাচ্ছেন শিবসেনা প্রধান। অযোধ্যায় রাম মন্দিরের কাছেই সভা করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু যোগী আদিত্যনাথের সরকার তাতে অনুমতি দেয়নি। তার পরই ফুঁসে উঠেছে শিবসেনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy