Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
National News

ফের কাশ্মীরে বিদেশি দূতেরা, পুলওয়ামা হামলার বর্ষপূর্তি কাল

এ বারের সফরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূত উগো আস্টুটো শামিল হওয়ায় কূটনৈতিক ভাবে ভারত কিছুটা স্বস্তি পেল বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।

শিকারা-ভ্রমণ: দু’দিনের সফরে কাশ্মীরে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের দ্বিতীয় দল। বুধবার ডাল লেকে। ছবি: পিটিআই

শিকারা-ভ্রমণ: দু’দিনের সফরে কাশ্মীরে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের দ্বিতীয় দল। বুধবার ডাল লেকে। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৩
Share: Save:

পুলওয়ামা হামলার বর্ষপূর্তির ঠিক আগে কাশ্মীরে পা রাখল বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের দ্বিতীয় দল। তাতে শামিল হলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতও।

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে সেখানে নিষেধাজ্ঞা ও রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি দশা নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমালোচনার মুখে পড়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কাশ্মীরের পরিস্থিতি যে নিয়ন্ত্রণে, তা বোঝাতে সেখানে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের একটি প্রতিনিধি দলকে পাঠানোর ব্যবস্থা করে মোদী সরকার।

কিন্তু সেই দলে ছিলেন না ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূত। পরে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ভারতের সিএএ, এনআরসি-র বিরুদ্ধে প্রস্তাব পেশ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। সেই প্রস্তাবে কাশ্মীর প্রসঙ্গও উল্লেখ করা হয়েছিল। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল কাশ্মীরে গিয়েছিল। কিন্তু তাতে কেবল দক্ষিণপন্থী দলের সদস্যেরা শামিল হওয়ায় সমালোচনা শুরু হয়। পাশাপাশি বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, ভারতের সাংসদদের কাশ্মীরে যেতে না দিয়ে বিদেশি পার্লামেন্ট সদস্যদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কেন? ওই সফরের সময়ে জঙ্গিরা বাঙালি শ্রমিকদের খুন করার ফলেও প্যাঁচে পড়ে সরকার।

আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জের মুখে অমিত শাহের ‘চাণক্য’ তকমা

কিন্তু এ বারের সফরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূত উগো আস্টুটো শামিল হওয়ায় কূটনৈতিক ভাবে ভারত কিছুটা স্বস্তি পেল বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা। ওই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত তাহির কাদিরিও। নেপালের মতো কয়েকটি দেশকে পাশে টেনে সার্ক রাষ্ট্রগোষ্ঠীর বৈঠক ফের চালু করার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। তাই আফগানিস্তানের মতো সদস্য রাষ্ট্রকে সঙ্গে রাখতে চায় ভারত। তাই আফগান দূতের সফরও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।

আজ শ্রীনগর বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরে শের ই কাশ্মীর আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় রাষ্ট্রদূতদের। পরে সেখান থেকে মোটরবোটে ডাল লেকের বুকে নেহরু পার্কে পৌঁছন তাঁরা। শিকারায় চড়ে ডাল লেক ভ্রমণও করেন দূতেরা।

আফগান রাষ্ট্রদূত কাদিরি বলেন, ‘‘আসার সময়ে তো দেখলাম স্কুল, দোকানপাট খোলাই রয়েছে। এখানে আসার ইচ্ছে অনেক দিন ধরেই ছিল।’’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক দূত জানালেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সময় লাগবে। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, শ্রীনগর ছাড়াও বারামুলা এবং জম্মুতে যাবেন রাষ্ট্রদূতেরা। বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণী, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী-সহ সমাজের নানা অংশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন তাঁরা।

সমালোচনা শুরু হয়েছে এই সফরেরও। কাশ্মীরের সৌন্দর্যের প্রশং‌সা করে আফগান দূতের টুইটের জবাবে বন্দি পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির মেয়ে ইলতিজা লিখেছেন, ‘‘বাহ! এমন সাজানো কূটনীতি দেখলে উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন গর্বিত হতেন। কেবল ওই শিকারায় জম্মু-কাশ্মীরের ৩ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীরও থাকা উচিত ছিল। আমি নিশ্চিত, তাঁরা অনেক কথা বলতে চান।’’ কাশ্মীরের সিপিএম নেতা মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি আজ দিল্লিতে বলেন, ‘‘গোটা কাশ্মীরটাকেই মুক্ত কারাগার ঘোষণা করে দেওয়া হোক। তা হলে আর নেতাদের পিএসএ-র মত আইনে বন্দি রাখতে হবে না।’’ কাশ্মীরে রাষ্ট্রদূতদের সফর প্রসঙ্গে তারিগামির প্রশ্ন, ‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে না কেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE