Advertisement
E-Paper

ডিটোনেটর উধাও, জবাব নেই বহু প্রশ্নের

গত ২ জানুয়ারি পঠানকোট সেনাছাউনি থেকে ৮ কিলোগ্রাম ডিটোনেটর ভর্তি একটি বাক্স হাওড়ামুখী হিমগিরি এক্সপ্রেসে তোলা হয়েছিল।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১০

ক্রমশই জটিল হচ্ছে সেনাবাহিনীর ডিটোনেটর উধাও কাহিনি। বিস্ফোরণ ঘটানোর এই মূল হাতিয়ার চলন্ত ট্রেন থেকে চুরি যাওয়ার পরে তিন রাত কেটে গেলেও অপরাধীদের কোনও সূত্র পাননি তদন্তকারীরা। প্রাথমিক তদন্তে নেমে বিহার পুলিশ প্রশ্ন তুলেছে দুই সেনা জওয়ানের দায়ের করা অভিযোগের বয়ান নিয়েও। জামালপুরের রেল পুলিশ সুপার শঙ্কর ঝা শনিবার বলেন, ‘‘ঠিক কোথায় বাক্স উধাও হয়েছে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। আরপিএফ এবং সেনা জওয়ানদের বক্তব্যে ফারাক রয়েছে। ঝাঝায় ডিটোনেটর চুরির ঘটনা টের পাওয়া গেলেও কেন হাওড়ায় গিয়ে তা নথিভুক্ত করা হল, তার উত্তরও স্পষ্ট নয়।’’

গত ২ জানুয়ারি পঠানকোট সেনাছাউনি থেকে ৮ কিলোগ্রাম ডিটোনেটর ভর্তি একটি বাক্স হাওড়ামুখী হিমগিরি এক্সপ্রেসে তোলা হয়েছিল। তার জন্য একটি ‘ফ্রন্ট স্লিপার লাগেজ রিয়ার’ (এফএসএলআর) কামরা ভাড়া করে সেনাবাহিনী। কামরার নিরাপত্তার জন্য দুই জওয়ান লাগোয়া স্লিপার কোচে ছিলেন। ওই জওয়ানদের অভিযোগ অনুযায়ী, পটনায় কামরার তালা ঠিক ছিল। ঝাঝা স্টেশনে এসে রেলরক্ষীদের কাছে তাঁরা জানতে পারেন— কামরার তালা ভাঙা, বাক্সও উধাও। এর পরে হাওড়ায় পৌঁছে অভিযোগ নথিভুক্ত করেন ওই দুই জওয়ান খাঁদু রাম ও বীরেন্দ্র। এ দিন জামালপুরের রেল পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘হাও়ড়ায় অভিযোগ হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শুরু হলেও সব নথিপত্র এখনও হাতে আসেনি।’’

রেল ও বিহার পুলিশ সূত্রে অবশ্য দাবি, পটনা এবং বখতিয়ারপুর স্টেশনের মাঝেই ঘটনাটি ঘটেছে। বখতিয়ারপুরেই কামরার তালা ভাঙার বিষয়টি প্রথম নজরে এসেছিল রেলরক্ষী বাহিনীর। তা সেনাকর্মীদের জানানো হয়েছিল। দু’পক্ষের বক্তব্যে এই ফারাক কেন? সেনা বা রেল পুলিশ, কারও থেকেই সদুত্তর মেলেনি।

গোয়েন্দারা বলছেন, কোনও বিস্ফোরক তৈরির ক্ষেত্রে ডিটোনেটর মূল হাতিয়ার। সোজা অর্থে এটাই হচ্ছে উন্নত মানের বিস্ফোরকের ‘সলতে’। ক্ষেপণাস্ত্র, গোলন্দাজ বাহিনীর হাতিয়ার কিংবা আইইডি, সবেতেই এই ডিটোনেটরের বড় ভূমিকা। পঠানকোট সেনাছাউনি থেকে হাওড়া হয়ে বালেশ্বরের কাছে আব্দুল কালাম দ্বীপের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানোর কথা ছিল এই ডিটোনেটর।

অনেকেরই সন্দেহ, হিমগিরি এক্সপ্রেসের ওই কামরায় যে ডিটোনেটর আনা হচ্ছে সেই গোপন তথ্য বাহিনীর অন্দর থেকেই ফাঁস হয়েছে। পরিকল্পনা করেই এই কাণ্ড ঘটানো হয়েছে। ঝাঝা এবং তার লাগোয়া এলাকা মাওবাদী উপদ্রুত বলে পরিচিত। ওই এলাকায় ডিটোনেটর চুরি হলে মাওবাদীদের উপরেই সন্দেহ প়়ড়বে। কিন্তু আদৌ এই কাণ্ড মাওবাদীরা ঘটিয়েছে না অন্য কেউ— তা নিয়ে সন্দিহান গোয়েন্দারা।

তদন্তকারী সূত্রের খবর, সে দিন হিমগিরি এক্সপ্রেস কখন, কোথায় দাঁড়িয়েছে, পটনার পর থেকে কোন সিগন্যালে কত ক্ষণ দাঁড়িয়েছিল— সব তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে। পাহারায় থাকা দুই সেনাকর্মীকেও জেরা করা হবে।

চলন্ত ট্রেনের তালাবন্ধ কামরা থেকে এমন গুরুত্বপূর্ণ জিনিস কী ভাবে উধাও হয়ে গেল, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সেনা কর্তারা। এ দিন এক সেনা মুখপাত্র বলেন, ‘‘ডিটোনেটর উধাও হওয়া নিয়ে তদন্ত চলছে। এখন এটুকুই বলা সম্ভব।’’

ডিটোনেটর Detonator Indain Army Missing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy