প্রায় এক মাস কাটতে চলল। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীদের অপসারণের জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে এখনও শাসক শিবির যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসি গঠন করতে পারল না। গত ১১ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম।
এরই মধ্যে ওয়াকফ আইনের ক্ষেত্রে বিরোধীরা জেপিসি-তে যে সমস্ত ধারায় আপত্তি তুলেছিল, সুপ্রিম কোর্ট ঠিক সেই সব ধারাতেই স্থগিতাদেশ জারির পরে বিরোধী শিবিরে জেপিসি-তে যোগ দেওয়া নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। বিরোধী শিবিরের অনেকের মতে— প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীদের অপসারণের বিল নিয়ে বিরোধীরা যদি জেপিসি-তে নিজেদের আপত্তি জানিয়ে রাখে, পরে সুপ্রিম কোর্ট একই জায়গায় আপত্তি তুললে বিরোধীরা নিজেদের কৃতিত্ব দাবি করতে পারবে।
বাদল অধিবেশনের শেষ পর্বে ২০ অগস্ট মোদী সরকার সংসদে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর অপসারণ নিয়ে তিনটি বিল পেশ করেছিল। যাতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্র বা রাজ্যের মন্ত্রীরা গুরুতর অভিযোগে টানা তিরিশ দিন ধরে হেফাজতে থাকলে ৩১তম দিনে তাঁকে পদ থেকে সরতে হবে। বিল পেশের পরে মোদী সরকারই তা জেপিসি-তে পাঠানোর প্রস্তাব এনেছিল। বিরোধীরা জেপিসি-র সদস্য কে হবেন, তা নিয়ে কোনও নাম না পাঠানোয় এখনও জেপিসি গঠন করা সম্ভব হয়নি।
তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টি আগেই জানিয়ে দিয়েছে, তারা জেপিসি-তে যোগ দেবে না। কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, এখনও এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কংগ্রেস মোদী সরকারের কাছে তাদের হয়ে কে কে জেপিসি-তে যোগ দেবেন, তা জানায়নি। আবার জেপিসি-তে যোগ দেবে না, সে কথাও বলেনি। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য, ‘‘সিদ্ধান্ত না নেওয়াটাও একটা সিদ্ধান্ত।’’
তৃণমূলের বক্তব্য, কংগ্রেস যা-ই করুক, তৃণমূল জেপিসি-তে যোগ দেবে না। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘মোদী সরকার সংসদকে গুরুত্ব দেয় না। ওয়াকফ বিল নিয়ে জেপিসি-তে বিরোধীদের লিখিত আপত্তি প্রথমে সাদা কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল।’’ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক এম এ বেবি বলেন, ‘‘আমরা সংসদের ভিতরে, বাইরে এই বিলের বিরোধিতা করব। কারণ এই আইন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হবে। কিন্তু জেপিসি-তে যোগ দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের উচিত সমস্ত বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলে ঐকমত্যতৈরি করা।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)