Advertisement
E-Paper

‘কৃষক দরিদ্র হলেই ঋণ পান? মকুব করে কী লাভ!’ বললেন রাজন

তাঁর মতে, ‘‘ভোটের মুখে তড়িঘড়ি কৃষকদের ঋণ মকুব করার প্রতিশ্রুতি নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া উচিত নয় রাজনৈতিক দলগুলির।’’ রাজন বলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে তাঁর এই মতামত তিনি জানিয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:১৬
রঘুরাম রাজন। -ফাইল ছবি।

রঘুরাম রাজন। -ফাইল ছবি।

ভোটের মুখে কৃষকদের ঋণ মকুব করতে গিয়ে আদতে দেশের অর্থনীতিরই চরম ক্ষতি করা হচ্ছে। ভোটের আখের গোছাতে গিয়ে অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়ার চাকায় লাগাম পরানো হচ্ছে। কারণ, দরিদ্র হলেই কৃষকরা ঋণ পান না। উপরমহলে তাঁদের যোগাযোগের প্রয়োজন হয়। এমনটাই মনে করছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন

তাঁর মতে, ‘‘ভোটের মুখে তড়িঘড়ি কৃষকদের ঋণ মকুব করার প্রতিশ্রুতি নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া উচিত নয় রাজনৈতিক দলগুলির।’’ রাজন বলেছেন, নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে তাঁর এই মতামত তিনি জানিয়েছেন।

ভারতের মতো কৃষিনির্ভর দেশে গত ৫ বছরে ভোটের আসরে বাজিমাত করতে কৃষকদের ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার দৃষ্টান্ত কম নেই। ছোট, বড়, মাঝারি প্রায় কোনও রাজনৈতিক দলই সেই ‘অভ্যাস’-এর বাইরে যায়নি! ক’দিন আগে হয়ে যাওয়া পাঁচ রাজ্য বিধানসভার ভোটেও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। ওই সব রাজ্যের ভোটে কোনও না কোনও দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে কৃষিঋণ মকুব ও ফসলের সহায়ক মূল্য বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এ দিন রাজন বলেন, ‘‘ওই সব প্রতিশ্রুতিকে ভোটের প্রচারের বাইরে রাখার কথা অনেক দিন ধরেই বলছি। চিঠিও লিখেছি নির্বাচন কমিশনকে। বুঝি, কৃষকদের দুর্দশা নিয়ে ভাবার কারণ রয়েছে যথেষ্টই। কিন্তু এটাও ভেবে দেখতে হবে, শুধু ঋণ মকুব করলেই কি কৃষকদের যাবতীয় দুর্দশা দূর হবে? দেশের মোট কৃষকের কত জন বা কত শতাংশ ওই ঋণ পান? তা খুব সামান্যই হবে।’’

আরও পড়ুন- নির্ধারিত সময়ে ফ্ল্যাট দিতে না পারলে মাসুল গুনতে হবে প্রোমোটারকে​

আরও পড়ুন- ক্ষোভ, আশঙ্কা...তবু যেন হওয়ারই ছিল​

কৃষিঋণ বিলিবণ্টনের পদ্ধতি নিয়েও কোনও রাখঢাক না রেখে কয়েকটি প্রশ্ন তুলেছেন রাজন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমত, গরীব কৃষক হলেই ওই ঋণ পান, তা নয়। বরং যে সব কৃষকের উপরমহলে ভাল যোগাযোগ রয়েছে, ঋণ পান তাঁরাই। দ্বিতীয়ত, যে রাজ্যগুলিতে ইতিমধ্যেই কৃষকদের ঋণ মকুব করা হয়েছে, এর ফলে, তাদের সেই আর্থিক বছরে বাড়তি অসুবিধার মুখে পড়তে হয়। দুর্ভাগ্যবশত, আমি মনে করি, এতে অর্থনীতির লাভ তো কিছু হয়ই না, বরং কৃষিতে আরও বিনিয়োগ আসার পথটা বন্ধ হয়ে যায়।’’

বিভিন্ন সময় দেশের প্রায় সব কেন্দ্রীয় সরকারই যে জিডিপি বৃদ্ধির হার নিয়ে ঢক্কানিনাদ করে, তাকেও কটাক্ষ করতে পিছপা হননি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর।

রাজন প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘জিডিপি বৃদ্ধির হার এতটা বাড়ল কি অতটা বাড়ল, ফলাও করে তার প্রচার করে লাভটা কী হচ্ছে? এতে কি দেশের বিপুল সংখ্যক বেকারের কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে? বেকাররা কি বেশি সংখ্যায় চাকরি পাচ্ছেন?’’

রাজনের বক্তব্য, এটা মনে রাখা উচিত, বৃদ্ধি কিন্তু আরও চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করছে না। বেকারদের প্রত্যাশা পূর্ণ হচ্ছে না। তাঁদের চাকরি হচ্ছে না। রেলের ৯০ হাজার শূন্য পদে চাকরির জন্য ২৫ লক্ষ বেকার আবেদন করছেন! তথ্যটা খুব সুখকর নয়।’’

RBI Raghuram Rajan Farm Loan Waiver রঘুরাম রাজন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy