Advertisement
E-Paper

শেষ দেখার দিন ইয়েচুরিকে বলেছিলাম, ‘বাড়ি যাবেন না, হাসপাতালে যান’, স্মরণসভায় আবেগবিহ্বল রাহুল গান্ধী

তৃণমূল বাদে অবিজেপি প্রায় সব দলের প্রতিনিধিরাই হাজির ছিলেন সীতারামের স্মরণসভায়। প্রত্যেকের কথাতেই উঠে আসে ধর্মনিরপেক্ষতা, বহুত্ববাদ সম্পর্কে সীতারামের গভীর শ্রদ্ধার কথা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০৭
Rahul Gandhi emotional at Sitaram Yechury’s condolence meeting

সীতারাম ইয়েচুরির স্মরণসভায় রাহুল গান্ধী। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।

সীতারাম ইয়েচুরির মৃত্যু, শেষাযাত্রার সময়ে দেশে ছিলেন না তাঁর পরম বন্ধু রাহুল গান্ধী। সেই সময়ে তিনি ছিলেন আমেরিকা সফরে। শুক্রবার দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে সিপিএম আহুত সীতারামের স্মরণসভায় স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বার বার গলা ধরে আসছিল রাহুলের। সেই বক্তৃতায় তিনি জানালেন, দু’জনের শেষ দেখা হয়েছিল সনিয়া গান্ধীর বাসভবনে। সীতারামকে কাশতে দেখে তিনিই পরামর্শ দিয়েছিলেন বাড়ি না-গিয়ে হাসপাতালে যেতে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল সীতারামকে। কিন্তু সেখান থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি।

রাহুল বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে ইয়েচুরির যা না বন্ধুত্ব ছিল, তার থেকে আমার মায়ের সঙ্গে বেশি ছিল। কিছু দিন আগে আমার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন ইয়েচুরি। সেই সময়ে আমি দেখি উনি খুব কাশছেন। তার পর ওঁকে আমি বলি, আপনি এখন গিয়ে গাড়িতে উঠবেন, তার পর বাড়ি যাবেন না। যাবেন হাসপাতালে।’’ রাহুল এ-ও বলেন, ‘‘সেই সময়েও ইয়েচুরি চেষ্টা করেছিলেন হাসপাতালে না যাওয়ার। কিন্তু আমি আমার অফিসকে বলি বিষয়টি দেখতে। যাতে উনি হাসপাতালে যান।’’ হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন সীতারামকে দেখতেও গিয়েছিলেন রাহুল। লোকসভার দলনেতার কথায়, ‘‘দুর্ভাগ্য হল, ইয়েচুরি আর হাসপাতাল থেকে ফিরলেন না।’’ মানসিক ভাবে চাপে পড়লেই সীতারাম সিগারেট ধরাতেন। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাহুল বলেছেন, ‘‘এই একটা কারণেই আমার মনে হয় এত তাড়াতাড়ি ওঁকে আমরা হারালাম।’’

রাহুলের মতোই সীতারামের ধূমপানের প্রসঙ্গে তোলেন শরদ পওয়ারের কন্যা তথা এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে। তবে তিনি অন্য দৃষ্টিকোণের কথা বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও জটিল বৈঠক হলেই দেখতাম সীতারামজি সিগারেট ধরিয়ে বাইরে চলে গিয়েছেন। ফিরে এসেই এমন একটা উপায় বাতলে দিতেন যে, সব সমস্যা মিটে যেত। সে দিক থেকে সিগারেট জাদুদণ্ডের কাজ করত।’’

রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সীতারামকে ‘বিরল’ বলে অভিহিত করেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘‘রাগ, উগ্রতা, ঔদ্ধত্য— এগুলি ওঁর মধ্যে ছিল না। যা সাধারণত রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। এই জন্যই উনি আমার বন্ধু ছিলেন।’’ সীতারামের স্মরণসভায় যোগ দিতে দিল্লি বিমানবন্দরে নেমে সোজা তালকাটোরা স্টেডিয়ামে পৌঁছন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। তিনি বলেন, ‘‘আজকে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। সেই কারণেই ওরা অনেক জনবিরোধী নীতি সংখ্যার জোরে চাপিয়ে দিতে পারছে না। বিজেপিকে এই জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে সর্বভারতীয় স্তরে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ গঠনের কারণে। যাতে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিলেন ইয়েচুরি।’’

তৃণমূল বাদে অবিজেপি প্রায় সব দলের প্রতিনিধিরাই হাজির ছিলেন সীতারামের স্মরণসভায়। প্রত্যেকের কথাতেই উঠে আসে ধর্মনিরপেক্ষতা, বহুত্ববাদ সম্পর্কে তাঁর গভীর শ্রদ্ধার কথা। পাশাপাশিই, সীতারামের মেলামেশার ধরনের বিষয়েও আলোকপাত করেন অনেকে। শুক্রবার সীতারামের স্মৃতিচারণা করেন সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাট, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা, সমাজবাদী পার্টির রামগোপাল যাদব, ডিএমকে-র কানিমোঝি করুণানিধি, আরজেডি-র মনোজ ঝা, আম আদমি পার্টির গোপাল রাই, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সাংসদ মহুয়া মাঝিরা। ছিলেন বাম দলগুলির সর্বভারতীয় নেতৃত্বও।

Sitaram Yechury Sitaram Yechury Death Rahul Gandhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy