রাজসঙ্গ: প্রচারের শেষ দিনে আগরতলায় রাহুল গাঁধী। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছেন ‘বন্ধু’ ত্রিপুরার মহারাজা প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্য। শুক্রবার। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী।
কাইট্যা ফ্যালিলেও কংগ্রেস ছাড়া কাউরে ভুট দিমু না! কলেজ স্টেডিয়ামের চার হাতের মধ্যে দাঁড়়িয়ে বলছিলেন চণ্ডীপুরের মফিজুল আলি।
সংখ্যায় তাঁরা কম। তবে মফিজুলের মতো বাঁধা সমর্থকদের দিকে তাকিয়েই ত্রিপুরায় ভোটের প্রচার সারলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। প্রধানমন্ত্রী রাজ্যে ঘুরে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাহুল এসে বলে গেলেন, নরেন্দ্র মোদীর মতো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে তাঁরা আসেননি। দিল্লিতে ২০১৯ সালে সরকার কংগ্রেসই গড়়বে। আর এখন ত্রিপুরায় ভোটটা তাদেরই দিন, যারা মিথ্যা আশ্বাসের ফানুস ওড়়াবে না!
রাজ্যে দ্বিতীয় দফার প্রচারে এসে মোদী কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছিলেন বামেদের ‘বন্ধু’ হয়ে ভোটের ময়দানে থাকার জন্য! রাহুল এ বার পাল্টা বিঁধলেন মোদীকে। কংগ্রেস সভাপতির কটাক্ষ, ‘‘মোদীজি যেখানেই যান, দু-তিনটে কথা দিয়ে চলে আসেন। ভোটের পরে সে সব ভুলে যান! মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে আমরা আসিনি। কংগ্রেস সেগুলোই বলে, যেগুলো তারা করে দেখাতে পারবে।’’
আরও পড়ুন: ‘আমাদের মেহুলভাই’ বলে বাড়িতে আপ্যায়ন মোদীর!
ত্রিপুরায় এ বার পরিবর্তনের ডাক দিয়ে সরকারি কর্মচারীদের মন পেতে সপ্তম বেতন কমিশনের কথা বারবার বলছেন মোদী-সহ বিজেপি-র নেতারা। রাহুল আজ পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘অসম, মণিপুরে তো আপনাদের সরকার। ওখানে সপ্তম বেতন কমিশন হয়েছে?’’ বিজেপি-র ‘ভিশন ডকুমেন্টে’ বলা হয়েছে, ১০০ দিনের কাজে ত্রিপুরায় ন্যূনতম মজুরি দেওয়া হবে ৩৪০ টাকা করে। রাহুলের প্রশ্ন, ‘‘পাশে অসমে ১৮৪ টাকা মজুরি দেন কেন?’’
বিরোধী পরিসরে ভাগ বসাতে চেয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই রাজ্যের বাম সরকারকেও নিশানা করেছেন রাহুল। বলেছেন, ‘‘রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়়েছে। আত্মহত্যা বাড়়ছে, নারী নির্যাতন বাড়়ছে। বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায় ১৪ লক্ষ মানুষ প্রতারিত হয়েছেন।’’ তবে বামেদের ব্যর্থতার কথা বললেও তার সুযোগ যাতে বিজেপি না পায়, সেই বার্তাও বারবার দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সনিয়া-তনয়।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং পাঁচ বারের বিধায়ক বীরজিৎ সিংহের কেন্দ্র হলেও কোনও ক্রমে মাঠের দুই-তৃতীয়াংশ ভরেছিল। এক সপ্তাহ আগে মোদীর সভায় এই মাঠই উপচে পড়়েছিল! হেলিকপ্টারে আগরতলা ফিরে রাহুল অবশ্য তাঁর বন্ধু মহারাজা প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্য এবং অন্য নেতাদের বলেছেন, কৈলাসহরের পুরনো বিমানবন্দরে কপ্টার থেকে নেমে মাঠে যাওয়ার পথের দু’ধারে অনেক মানুষ ছিলেন। ত্রিপুরায় দলের যা অবস্থা, সেই নিরিখে ভিড়়ের চেহারা দেখে বাড়়তি হতাশা দেখছেন না রাহুল।
কংগ্রেসের আপাতত লক্ষ্য, বিজেপি-র যাত্রাভঙ্গ করা। যে কারণে রাহুলের মঞ্চ থেকে প্রদ্যোৎ কিশোর বলছিলেন, ‘‘বিজেপি বলছে, চলো পাল্টাই। এটা আসলে ওদের নেতাদের মন্ত্র! প্রথমে কংগ্রেস থেকে ‘চলো পাল্টাই’ বলে তৃণমূল হলেন! আবার ‘চলো পাল্টাই’ বলে বিজেপি হয়ে গেলেন!’’ রাহুলের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য মাঠে অপেক্ষা করতে করতে দলের লক্ষ্য আরও সরাসরিই বুঝিয়ে দিয়েছেন ফটিকরায় কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী রাখু দাস— ‘‘আমাকে ও (বিজেপি) ছুরি মেরে দিয়েছে। আমি তো মরবই কিন্তু ওকে নিয়ে মরব!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy