Advertisement
E-Paper

ছত্তীসগঢ়ে রাহুল, জমি ও জোটই ভাবনা তাঁর

কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘ভোটের আগেই যদি আমরা দেবগৌড়ার সঙ্গে জোট করতে পারতাম, তা হলে কী ফল হত, সেটা স্পষ্ট।’’

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৮ ০৩:৩৬
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

কর্নাটক ফলের পর কংগ্রেস শিবিরে প্রথম উপলব্ধি, একলা চলো নীতি থেকে এ বার সরতে হবে। গত কাল রাতে দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় রাহুল গাঁধী নিজেই জানিয়েছেন, এ বার তিনি এইচ ডি দেবগৌড়ার মতো মমতা বন্দোপাধ্যায়, নবীন পট্টনায়ক, এমনকি চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গেও আলোচনা শুরু করতে চান। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘ভোটের আগেই যদি আমরা দেবগৌড়ার সঙ্গে জোট করতে পারতাম, তা হলে কী ফল হত, সেটা স্পষ্ট।’’

তবে জোটের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করলেও, কংগ্রেসের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করে দলটাকে আবার নিজের পায়ে দাঁড় করানোটা যে তাঁর অন্যতম অগ্রাধিকার, সেটাও স্পষ্ট বুঝিয়ে দিচ্ছেন রাহুল। কর্নাটকে পালাবদল নিয়ে যখন ঘটনার ঘনঘটা, ঠিক তখনই রাহুল গান্ধী যাচ্ছেন ছত্তীসগঢ়। কংগ্রেস কৰ্মীদের কাছে তাঁর বার্তা

একটাই— চরৈবেতি। থামা চলবে না। লক্ষ্য একটাই ২০১৯। দু’দিনের সফরে আগামিকাল ছত্তীসগঢ়ে গেলেও সেখান থেকেই কর্নাটকে গণতন্ত্রকে হত্যা করার অভিযোগ এনে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করবেন কংগ্রেস সভাপতি।

তৃণমূল স্তরে জমি শক্ত করতে নিজে যেমন দৌড়ঝাঁপ করছেন, তেমনই দলের নেতা-কর্মীদের আরও দায়িত্বশীল করে তুলতে আর একটি দিকে জোর দিচ্ছেন রাহুল। তা হল, ইন্দিরা গাঁধীর সময় থেকে চলে আসা হাইকম্যান্ড-নির্ভর রাজনীতির ধারাটাই বদলে ফেলা।

পঞ্জাবের নির্বাচনে তিনি সব ভার ছেড়ে দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহের উপরে। একই ভাবে কর্নাটকে ভরসা রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দিরামাইয়ার উপরে। ভোটের কৌশল রচনার ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন তাঁকে। অজয় মাকেন বা অধীর চৌধরীকে একই ভাবে স্বাধীনতা দিচ্ছেন রাহুল। এবং সেই কারণেই অরবিন্দ কেজরীবাল বা মমতার সঙ্গেও কোনও বোঝাপড়া হয়ে ওঠেনি এখনও।

অশোক গহলৌতর দাবি, এই স্বাধীনতা অর্পণ কিন্তু দীৰ্ঘমেয়াদি নীতির বিচারে বেশি গণতান্ত্রিক। কিছু ক্ষেত্রে রাহুলের এই নীতি সুফলও দিচ্ছে। যেমন পঞ্জাবে বাদল জমানার অবসান ঘটিয়ে সরকার গড়েছেন অমরেন্দ্র। গুজরাতেও রাহুল স্থানীয় স্তরের নেতাদের বোঝাতে পেরেছিলেন তাঁদের গুরুত্ব। একজোট হয়ে লড়ে কংগ্রেসের নেতারা বিজেপিকে ভাল রকম ধাক্কা দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু গোল বাঁধল কর্নাটকে। সিদ্দিরামাইয়া কিছুতেই চাননি দেবগৌড়ার সঙ্গে কোনও সমঝোতা হোক। আবার সীতারাম কেশরী এক সময় কেন্দ্রে দেবগৌড়ার সরকার ফেলে দিয়েছিলেন। সেই ক্ষত নিরাময়ে রাহুলের সরাসরি যোগাযোগ রাখাটা জরুরি ছিল।

মোদী প্রচার করছেন, কর্নাটকের মানুষ তাঁকে গ্রহণ করলেন। বিজেপিকে হিন্দিওয়ালা বলে প্রচার ব্যর্থ হয়েছে। রাহুল কাল দলীয় নেতাদের কাছে স্বীকার করেছেন যে, বিষয়টা হিন্দি-কন্নড় দূরত্ব নয়। তিনি বুঝতে পারেননি স্থানীয় স্তরে মানুষের অসন্তোষ এত বেশি।

এই পরিস্থতিতে আপাতত পচমঢ়ী লাইনই হল কংগ্রেসের কৌশল। একলা চলার বদলে ভাবতে হবে জোটের কথাও। কংগ্রেসে বিতর্ক ছিল, সর্বভারতীয় দল হয়ে ভোটের আগেই আঞ্চলিক দলের সঙ্গে বোঝাপড়া করলে কংগ্রেস একক ভাবে বেশি আসনে লড়তে পারবে না। কর্নাটকের শিক্ষা, এই অনমনীয় মনোভাব বদলাতে হবে!

আপাতত রাহুলের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ এটাই প্রমাণ করা যে, মানুষের সঙ্গে তাঁর সংযোগ মোদীর তুলনায় কম নয় মোটেই। এই পথেই বিজেপির মোদী-মোদী জয়ধ্বনি আর মোদীর প্রচারকে স্তব্ধ করতে চাইছেন তিনি। কর্নাটকে কাজ যা করার করা দিয়েছেন। ফলের আশায় বসে না থেকে কাল যাচ্ছেন ছত্তীসগঢ়ে জমি চষতে। রণদীপ সিংহ সুরজেয়ালার বিশ্বাস, ‘‘এই রাহুল ২০১৯-এ মোদী নামের ফানুসটা ফাটিয়ে দেবে।’’

Rahul Gandhi Chhattisgarh Assembly Elections 2018 Chhattisgarh Assembly Election 2018
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy