Advertisement
০৮ মে ২০২৪

বিপত্তির দিল্লি-সফরে মুখে কুলুপ বসুন্ধরার

জয়পুর থেকে তিনি উড়ে এলেন। বৈঠক করলেন। তার পর ফের উড়ে গেলেন জয়পুরে। কিন্তু জয় করতে পারলেন না বলেই মনে করছে বিজেপির একাংশ। আপাতত কুর্সি বেঁচে গেলেও শেষ পর্যন্ত বসুন্ধরা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজের মেয়াদ শেষ করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে দলের অন্দরে। কারণ, ললিত মোদী কাণ্ডের জেরে তাঁকে বিপাকে ফেলতে আপাতত মরিয়া বিজেপি-আরএসএসের একাংশ।

শনিবার বিকানেরে মুখ্যমন্ত্রীর বসুন্ধরা রাজের কুশ পুতুল পোড়াচ্ছেন কংগ্রেস কর্মীরা। ছবি: পিটিআই।

শনিবার বিকানেরে মুখ্যমন্ত্রীর বসুন্ধরা রাজের কুশ পুতুল পোড়াচ্ছেন কংগ্রেস কর্মীরা। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৫ ০০:০৯
Share: Save:

জয়পুর থেকে তিনি উড়ে এলেন। বৈঠক করলেন। তার পর ফের উড়ে গেলেন জয়পুরে। কিন্তু জয় করতে পারলেন না বলেই মনে করছে বিজেপির একাংশ। আপাতত কুর্সি বেঁচে গেলেও শেষ পর্যন্ত বসুন্ধরা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজের মেয়াদ শেষ করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে দলের অন্দরে। কারণ, ললিত মোদী কাণ্ডের জেরে তাঁকে বিপাকে ফেলতে আপাতত মরিয়া বিজেপি-আরএসএসের একাংশ।

আজ তাঁর দিল্লি আসা নিয়েও সংশয় ছিল পূর্ণমাত্রায়। না এলে জল্পনা আরও বাড়বে বলে দলের তরফে পরামর্শে দেওয়া হয় তাঁকে। তাই নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে আসার সিদ্ধান্ত নেন বসুন্ধরা। কিন্তু রাজধানীতে নামতেই বিপত্তি। দিল্লি বিমানবন্দর থেকে নীতি আয়োগে যাওয়ার পথে তাঁর কনভয়ের সঙ্গে ধাক্কা লাগিয়ে বসে সংবাদমাধ্যমের একটি গাড়ি। দুর্ঘটনায় দু’টি গাড়িরই অল্পবিস্তর ক্ষতি হয়। তবে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য নির্বিঘ্নেই পৌঁছে যান নীতি আয়োগের দফতরে।

সাদার উপর কালো ডুরে শাড়ি পরা বসুন্ধরা নীতি আয়োগের দফতরে নেমে সটান চলে যান বৈঠকস্থলে। সেখানে বৈঠক শেষ করে দিল্লির বাড়িতে কিছু ক্ষণের বিশ্রাম। তার পর ফের চপারে জয়পুর ফিরে যান তিনি।

সূত্রের খবর, দলীয় নির্দেশেই আজ সংবাদমাধ্যমের ধারকাছেও ঘেঁষেননি বসুন্ধরা। উল্টে যে ভাবে দিল্লিতে সংবাদমাধ্যম তাঁর পিছনে তাড়া করেছিল তার সমালোচনা করেছে রাজস্থান মুখ্যমন্ত্রীর দফতর।

জল্পনা ছিল আজ দিল্লি এসে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করবেন বসুন্ধরা। বিজেপি সূত্রের খবর, দেখা না হলেও বসুন্ধরার সঙ্গে এক প্রস্ত ফোনে কথা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের। ওই শীর্ষ নেতা বসুন্ধরাকে সব সমালোচনা অগ্রাহ্য করে নিজের কাজ করে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আজ বৈঠকে উপস্থিত আমলারা জানাচ্ছেন, বসুন্ধরার শরীরী ভাষা বুঝিয়ে দিচ্ছিল তিনি বেশ চাপের মধ্যে রয়েছেন। অন্য মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় ও খুব প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা ছাড়া বৈঠকে চুপচাপই ছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী।

সাড়ে চার ঘণ্টার সফরের শেষে বসুন্ধরা জয়পুর ফিরে গেলেও তাঁর মুখ্যমন্ত্রিত্বের মেয়াদ নিয়ে এখনও প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। ঘনিষ্ঠ মহলে বসুন্ধরা বার্তা দিয়েছেন, তাঁকে সরালে রাজস্থানে বিজেপি সরকার পড়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। বতর্মানে দু’শো আসনের রাজস্থানে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ১৬০। বসুন্ধরা শিবিরের দাবি, তার মধ্যে অন্তত ১১০ জন বিধায়ক তাঁর সঙ্গেই রয়েছেন। ইতিমধ্যেই পুরভোটের প্রস্তুতির অছিলায় দিন সাতেক আগেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে শক্তিপ্রর্দশনও করেছেন তিনি।

ফলে সরকার পড়ে যাওয়ার বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে বিজেপিকে। তাই এখনই বসুন্ধরাকে সরানো নিয়ে দ্বিমত রয়েছে দলে। তা ছাড়া বসুন্ধরাকে সরালে এর পর সুষমা স্বরাজ ও স্মৃতি ইরানির পদত্যাগের দাবিতে বিরোধীরা যে সরব হবেন, তা বেশ বুঝতে পারছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

বাদল অধিবেশনের আগে বসুন্ধরাকে সরানোর ঝুঁকি নরেন্দ্র মোদী নেন কি না তাই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE