E-Paper

অযোধ্যায় যাচ্ছে বঙ্গের রামায়ণ শাড়ি

নয়ের দশকে টিভিতে রামায়ণ সিরিয়াল হত। তা দেখেই রামায়ণের কাহিনি নির্ভর শাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেন নদিয়া জেলার ফুলিয়ার তাঁত শিল্পী বীরেন বসাক।

সম্রাট চন্দ

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:৩২
নদিয়ার ফুলিয়ার বীরেন বসাকের তৈরি এই রামায়ণ শাড়ি যাচ্ছে অযোধ্যায়। ছবি: প্রণব দেবনাথ।

নদিয়ার ফুলিয়ার বীরেন বসাকের তৈরি এই রামায়ণ শাড়ি যাচ্ছে অযোধ্যায়। ছবি: প্রণব দেবনাথ।

বাংলা থেকে সুন্দরবনের মধু, গাঁদা ফুল আগেই গিয়েছে। এ বার পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত তাঁতশিল্পী বীরেন বসাকের তৈরি রামায়ণ শাড়ি যাচ্ছে অযোধ্যায়। রামমন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি এই শাড়ি সেখানে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে রামমন্দির উদ্বোধনের আগে নয়, সে শাড়ি অযোধ্যায় পাঠাতে বলা হয়েছে ২৬ জানুয়ারির পরে।

নয়ের দশকে টিভিতে রামায়ণ সিরিয়াল হত। তা দেখেই রামায়ণের কাহিনি নির্ভর শাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেন নদিয়া জেলার ফুলিয়ার তাঁত শিল্পী বীরেন বসাক। ১৯৯৫ সাল নাগাদ শান্তিপুরের বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েতের চটকাতলার বাসিন্দা বীরেন তৈরি করেন রামায়ণ শাড়ি। তার আগে ফুলিয়ার বয়রাতে কৃত্তিবাস স্মৃতি গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালা থেকে সংগ্রহ করেন প্রয়োজনীয় তথ্য। পাশাপাশি রামায়ণ সংক্রান্ত বিভিন্ন বইও পড়েছেন। পড়েছেন রামায়ণও। পরিচিত এক শিল্পীকে দিয়ে আঁকানো হয় রামায়ণের বিভিন্ন চিত্র। তার পর দু’জন তাঁত শিল্পীকে নিয়ে কাজে নেমে পড়েন বীরেন। প্রায় দু’বছরের চেষ্টায় তৈরি হয় রামায়ণ শাড়ি। সেই সময়ে দু’টি রামায়ণ শাড়ি তৈরি হয়েছিল। জামদানির কাজের উপর ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল রামায়ণের বিভিন্ন চিত্র। সিল্কের উপর সিল্কের সুতো দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল রামায়ণের কাহিনি। শাড়ির দুই পাড়ে রয়েছে রামায়ণের বিভিন্ন কাহিনির চিত্রায়ণ। আঁচলে ফুটে উঠেছে রাম-রাবণের যুদ্ধ, রাজ্যাভিষেক, সীতার পাতাল প্রবেশের মতো কাহিনি।

বীরেন জানান, তাঁর তৈরি রামায়ণ শাড়ি দেশে, বিদেশের নানা প্রদর্শনীতে গিয়েছে। উচ্চ প্রশংসাও পেয়েছে। সেই সময় তৈরি করা দু’টি শাড়ির মধ্যে একটি অযোধ্যায় নির্মিত রামমন্দিরে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন তিনি। মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সম্প্রতি সম্মতি মিলেছে। ২৬ জানুয়ারির পর শাড়ি পৌঁছে দিতে
বলা হয়েছে।

বীরেন জানান, প্রথমে দু’টি রামায়ণ শাড়ি তৈরি করার পর সাধারণ মানুষের আগ্রহে ও চাহিদায় আরও ছয়টি শাড়ি তৈরি হয়। যা বিভিন্ন মানুষ নিয়েছেন। তবে প্রথম তৈরি হওয়া দু’টি শাড়ির মধ্যে একটি যাচ্ছে অযোধ্যার রামমন্দিরে।

বীরেন বসাক বলেন, ‘‘আমরা কৃত্তিবাস ওঝার বাসস্থান ফুলিয়ার মানুষ। আমার বহু দিনের ইচ্ছা ছিল এই শাড়িটা অযোধ্যায় তৈরি হওয়া রামমন্দিরে দেওয়ার। অবশেষে ওঁরা আমার এই কাজ নেবেন বলেছেন। বাংলার তাঁতশিল্পের একটা দৃষ্টান্ত সেখানে থাকবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ayodhya Ram Temple Sharee West Bengal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy