Advertisement
E-Paper

হুইলচেয়ারে বসেই ভোট দিলেন শিলচরের রানা দেব

ভোটের দিন তাঁকে নিয়েই যত চিন্তা ছিল প্রশাসনিক কর্তাদের। তাঁর দাপটে তটস্থ থাকত বিরোধী শিবিরও। সেই সন্তোষমোহন দেব ওরফে রানাদা আজ ভোট দিলেন হুইলচেয়ারে চড়ে। মেয়ে তপতীর সাহায্য নিয়ে ইভিএমের বোতাম টেপেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩৯
ভোটকেন্দ্রে সন্তোষমোহন দেব। সোমবার শিলচরে। ছবি রাজীব কর

ভোটকেন্দ্রে সন্তোষমোহন দেব। সোমবার শিলচরে। ছবি রাজীব কর

ভোটের দিন তাঁকে নিয়েই যত চিন্তা ছিল প্রশাসনিক কর্তাদের। তাঁর দাপটে তটস্থ থাকত বিরোধী শিবিরও। সেই সন্তোষমোহন দেব ওরফে রানাদা আজ ভোট দিলেন হুইলচেয়ারে চড়ে। মেয়ে তপতীর সাহায্য নিয়ে ইভিএমের বোতাম টেপেন তিনি।

দেড় বছর আগে আচমকা অসুস্থ হলে প্রাক্তন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষমোহন দেবকে এয়ার-অ্যাম্বুলেন্সে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বেশ কিছুদিন এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন তিনি। পরে দিল্লির বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। স্ত্রী বীথিকা দেব কংগ্রেসের মনোনয়ন নিয়ে শিলচরে ফিরেই জানিয়েছিলেন, ‘‘আপনাদের রানাদাও ক’দিনের মধ্যেই শিলচরে ফিরছেন।’’ গত ৩০ মার্চ বিকেলে, বিশেষ বিমানে তাঁকে শিলচরে নিয়ে আসা হয়। হাঁটাচলা করতে পারেন না। কথা বলতেও কষ্ট হয়। চারদিন আগে, ১ এপ্রিল তাঁর জন্মদিনে তাই এ বার আর কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। পারিবারিক পরিসরেই পালিত হয় দিনটি। সেই থেকেই চর্চা হচ্ছিল, ৮২ পেরনো সন্তোষমোহন দেব কি এবার ভোট দিতে পারবেন?

আজ সকাল ১১টায় বাড়ির সীমানা লাগোয়া নিত্যময়ী বালিকা বিদ্যালয়ে ভোট দিতে আসেন সাংসদ সুস্মিতা দেব। সঙ্গে দিদি ভারতী দুবে। তবে কি সন্তোষবাবু আসতে পারছেন না! সাংসদ বললেন, ‘‘বাবার স্নান-খাওয়া হয়নি। এখন খুব নিয়মে থাকতে হয়। তাই দুপুরের দিকে তিনি ভোট দিতে আসবেন।’’

বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে ভোটকেন্দ্রে আসেন সন্তোষবাবু। হুইল চেয়ারে বসিয়ে তাঁকে নিয়ে আসেন কন্যা তপতী রাঠি, জামাতা যতীন রাঠি ও প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র দীপন দেওয়ানজি। ছিলেন তাঁর সর্বক্ষণের নার্সও। ঘর থেকে বাড়ির সদর দরজা পেরিয়ে চেয়ার ঠেলে নিয়ে যাওয়া হয় ভোটকেন্দ্রের সামনে। কিন্তু ভিতরে ঢুকতে হলে যে দুটো সিড়ি ডিঙোতে হবে! চারজন চার-পায়ে ধরে চেয়ার তুলে দেন বারান্দায়। বাবার এলএসওয়াই ১২৫৬৬৯৫ নম্বরের ভোটার পরিচয় পত্রটি ভারতী দেবী সঙ্গে করে নিয়ে যান। কিন্তু সন্তোষমোহন দেবের জন্য আবার পরিচয় পত্রের প্রয়োজন কী! ভোটার তালিকায় ১৮২ নম্বরে যে তাঁর নাম রয়েছে, মুহূর্তে জানিয়ে দেন প্রিসাইডিং অফিসার। আঙুলে টিপসই দেন সন্তোষমোহন, লাগানো হয় ভোটের কালি। হুইল চেয়ার ঠেলেই নিয়ে যাওয়া হয় ইভিএমের সামনে। সঙ্গে কন্যা তপতী। মজার ব্যাপার হল, বাবার হাতটা যখন ইভিএমের দিকে এগিয়ে দিচ্ছিলেন তাঁর কন্যা, সন্তোষবাবু দু’বার বলে ওঠেন—বীথিকা-বীথিকা!

অসুস্থতার পর থেকেই জিভ জড়িয়ে যায়। এ অবস্থাতেও কাকে ভোটটা দিতে চাইছেন, তা খোলামেলা প্রকাশই করে দেন তিনি। হুইল চেয়ারে বসলেও তাঁকে আজ বেশ ফুরফুরে দেখায়। হাসিটা ঠোঁটের কোণে ঝুলেই ছিল। অনুরাগীরা অনেকদিন পরে তাঁকে পেয়ে ছবি তোলেন। ভোটকেন্দ্রের সামনেই একের পর এক ছবি ওঠে। কেউ ‘রানাদা’র ছবি তুলে নিয়ে যান, কেউ তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলেন, অনেকে আবার অন্যের হাতে মোবাইল দিয়ে ‘রানাদা’র সঙ্গে নিজের ছবিটি তুলে নেন। ভোটের লাইনে যাঁরা দাঁড়িয়ে ছিলেন, মুহূর্তটি তাঁরাও বেশ উপভোগ করেন।

state election assembly 2016
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy