E-Paper

অক্সিজেনের পাইপ দিয়ে বাবার সঙ্গে কথা ছেলের! উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে মুক্তির প্রহর গুনছেন ৪০

পে-লোডার জাতীয় যন্ত্র দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করলে আরও ভেঙে পড়ছে সুড়ঙ্গ। দু’দিনে মাত্র ১৫ থেকে ১৭ মিটার এগোতে পারা গিয়েছে। শ্রমিকরা আটকে রয়েছেন ৬০ মিটার দূরত্বে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৩৮
চলছে উদ্ধারকাজ। মঙ্গলবার উত্তরকাশীতে।

চলছে উদ্ধারকাজ। মঙ্গলবার উত্তরকাশীতে। ছবি: পিটিআই।

কেটে গিয়েছে ৫০ ঘণ্টারও বেশি, উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা-বারকোটের নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে এখনও উদ্ধারের অপেক্ষায় ৪০ জন শ্রমিক। তাঁদের মধ্যে তিন জন পশ্চিমবঙ্গের। আপাতত পাইপের মাধ্যমে তাঁদের কাছে অক্সিজেন, ওষুধ, খাবার ও জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সেই পাইপের মাধ্যমেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন উদ্বিগ্ন পরিজন।

এমনই এক জন আকাশ নেগি। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাবা গব্বর সিংহ নেগি আটকে রয়েছেন সুড়ঙ্গে। আজ কয়েক মিনিটের জন্য বাবার সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন আকাশ। অক্সিজেন পাঠানোর পাইপের মাধ্যমেই কথা হয় দু’জনের। বাবা ভাল আছেন বলে জানান আকাশ। এ-ও বলেন, ‘বাবা বলেছেন চিন্তা না করতে।’

তবে, হুগলির আরামবাগের জয়দেব পরামানিকের বাবা তাপস ও মা তপতী পরামানিকের দিন কাটছে চরম উদ্বেগে। কালীপুজো দেখতে দুর্গাপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছিলেন তাঁরা। মঙ্গলবার তাপস জানান, সোমবার পুড়শুড়া থানা থেকে ফোন করে জানানো হয়, জয়দেব সুড়ঙ্গে আটকে আছেন। তাঁর চোট লেগেছে। তবে তিনি ভাল আছেন। ছেলের ভয়েস রেকর্ডও শোনানো হয়। তবে, মঙ্গলবারও উদ্ধারকাজ সে ভাবে না এগোনোয় উদ্বেগ বাড়ছেই। জয়দেবের সঙ্গে আটকে রয়েছেন হুগলির সৌভিক পাখিরা ও কোচবিহারের মনির তালুকদার।

তাপস জানান, তাঁর ভাইঝির স্বামীর সূত্রে বছরখানেক আগে জয়দেব একটি বেসরকারি নির্মাণ সংস্থায় যোগ দেন, তারাই ওই সুড়ঙ্গ নির্মাণের দায়িত্বে। উত্তরাখণ্ডে থাকা ওই ভাইঝির স্বামীও আটকে রয়েছেন জয়দেবের সঙ্গে। দ্রুত সবাইকে উদ্ধার করার ব্যবস্থা করুক উত্তরাখণ্ড সরকার, এখন এটাই আর্জি তাপস ও তপতীর। যে আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছেন জয়দেবের বাবা-মা, সেই অলোক দাসের কথায়, “কালীপুজোর আনন্দ আমাদের সবার জন্যই বিষাদে পরিণত হয়েছে।”

মঙ্গলবারই শ্রমিকদের উদ্ধার করার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিশেষ প্রশিক্ষিত উদ্ধারকারী দল। সমন্বয়ে রয়েছে ইন্দো টিবেটান পুলিশ ও বর্ডার রোডওয়েজ়ের বাহিনী। পুরো বিষয়টির তত্ত্বাবধানের জন্য ছ’জনের একটি কমিটি তৈরি করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। আপাতত ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ৯০০ মিলিমিটার ব্যাসের স্টিলের মোটা পাইপ প্রবেশের চেষ্টা চলছে। তার মধ্যে দিয়ে একে একে বের করে আনা হবে শ্রমিকদের। এমনিতে পে-লোডার জাতীয় যন্ত্র দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর চেষ্টা করলে আরও ভেঙে পড়ছে সুড়ঙ্গ। দু’দিনে মাত্র ১৫ থেকে ১৭ মিটার এগোতে পারা গিয়েছে। শ্রমিকরা আটকে রয়েছেন ৬০ মিটার দূরত্বে।

এটি ছাড়াও তিনটি বিকল্প উপায় ভাবা রয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সচিব রণজিৎ কুমার সিংহের আশা, মঙ্গলবার রাত বা বুধবার সকালের মধ্যে উদ্ধার করা যাবে শ্রমিকদের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

rescue Uttarakhand

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy