একই রাস্তার দু’-দু’বার শিলান্যাস! কংগ্রেসের বসানো শিলাখণ্ড উপড়ে ফেলে নতুন করে শিলা স্থাপন করল বিজেপি। প্রথমটি হয়েছিল ভোটের আগে, ফেব্রুয়ারিতে। এর এ বার দ্বিতীয় দফায়, এই অক্টোবরে। আর এরপরেই করিমগঞ্জ জেলার লোয়াইরপোয়া-কানমুন সড়কের দু’দফার শিলান্যাসকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
লোয়াইরপোয়া-কানমুন সড়ক সংস্কারে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার প্রায় ৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ত বিভাগের তৎকালীন পরিষদীয় সচিব তথা পাথারকান্দির বিধায়ক মণিলাল গোয়ালা এই শিলান্যাস করেন। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাছাড় জেলার সাংসদ সুস্মিতা দেব।
লোয়াইরপোয়া থেকে মিজোরামের কানমুন পর্যন্ত উন্নতমানের সড়ক নির্মাণ হলে করিমগঞ্জের সঙ্গে মিজোরামের যোগাযোগ অনেক সহজ হয়ে যাবে। কাছাড় জেলার ভাইরেংটি হয়ে মিজোরামে যাওয়ার পথ থাকলেও সেটি অনেকটা ঘুরপথ। সেই পথের গুরুত্ব বিবেচনা করেই কংগ্রেস সরকার টাকা মঞ্জুর করেছিল। সরকার পরিবর্তনের পর সেই একই সড়ক প্রকল্পের পুনরায় শিলান্যাস করা হল গত কাল। পূর্ত মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের নাম ফলকে থাকলেও বিতর্কের আগাম আঁচ পেয়ে ব্যস্ততার কথা বলে তিনি এই অনুষ্ঠানে হাজির হননি। করিমগঞ্জের জেলাশাসকের উপস্থিতিতে পাথারকান্দির বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল প্রকল্পটির শিলান্যাস করেন।
এ নিয়ে জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। কংগ্রেস সরকারের আমলে বসানো শিলাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে বিজেপি সরকারের শিলান্যাসের কঠোর সমালোচনা করেছেন কাছাড় জেলার সাংসদ সুস্মিতা দেব। করিমগঞ্জের বিষয়ে সাধারণ ভাবে শিলচরের সাংসদ কোনও মন্তব্য করেন না। কিন্তু যেহেতু প্রকল্পের প্রথম শিলান্যাস অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন, সে কারণেই তিনি বলেন, ‘‘একই প্রকল্পের আবার শিলান্যাস করে বিজেপি সরকার চরম গর্হিত কাজ করেছে। কংগ্রেসের আমলে মঞ্জুর হওয়া রাস্তার কৃতিত্ব জাহির করতে চাইছে বিজেপি।’’ সুস্মিতা দেবী বলেন, ‘‘পূর্ত মন্ত্রী যে দক্ষ নন, সেটা দু’বারের শিলান্যাসেই প্রমাণ করে দিয়েছেন।’’ মুখ খুলেছেন উত্তর করিমগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থও। তিনি বলেন, ‘‘পরিবর্তনের দোহাই দিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। চার মাসে মাত্র ১০ লক্ষ টাকা বিধায়ক এলাকা তহবিলে ছাড়া হয়েছে। তাও কাজ হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ। ফলে অসমের উন্নয়ন যে মন্থরগতি তা প্রমাণিত।’’ বেকায়দায় পড়ে বিজেপি আপাতত চুপ।