Advertisement
E-Paper

ভারতসুন্দরী খেতাব জয়ের স্বপ্ন হাফলঙয়ের রেবতীর

মাত্র এক দিনের অপেক্ষা। ২৮ মার্চের ঝলমলে সন্ধেই বলে দেবে, অসমের তরুণী ‘ভারত-সুন্দরী’র মুকুট ছিনিয়ে নিতে পারবেন কি না। নজর এখন তাই ২২ বছরের রেবতী ছেত্রীর উপরে। তবে, উত্তর কাছাড় পর্বতের প্রথম প্রতিনিধি হিসেবে হাফলঙয়ের গোর্খা মেয়ের ‘মিস ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে মনোনীত হওয়াটাকেই সাফল্য বলে ধরছে ডিমা হাসাও জেলার ছোট্ট ওই পার্বত্য শহর।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০৪:০২
রেবতী ছেত্রী

রেবতী ছেত্রী

মাত্র এক দিনের অপেক্ষা।

২৮ মার্চের ঝলমলে সন্ধেই বলে দেবে, অসমের তরুণী ‘ভারত-সুন্দরী’র মুকুট ছিনিয়ে নিতে পারবেন কি না। নজর এখন তাই ২২ বছরের রেবতী ছেত্রীর উপরে। তবে, উত্তর কাছাড় পর্বতের প্রথম প্রতিনিধি হিসেবে হাফলঙয়ের গোর্খা মেয়ের ‘মিস ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে মনোনীত হওয়াটাকেই সাফল্য বলে ধরছে ডিমা হাসাও জেলার ছোট্ট ওই পার্বত্য শহর।

চূড়ান্ত ২১ প্রতিযোগীর পায়ে পা মেলানো রেবতীকে নিয়ে রাজ্যে তেমন প্রচার নেই। নেটওয়ার্কিং সাইটে বন্ধুদের তৈরি ‘ফ্যান ক্লাব’-এ সমর্থকের সংখ্যা সাকুল্যে ৬০৩ জন। ২০০৫ সালে বরাকের দেবজিৎ সাহা একটি সর্বভারতীয় চ্যানেলে গানের প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিলেন। সে বার দেবজিৎকে নিয়ে রাজ্যে উন্মাদনা ছিল। বরাক-ব্রহ্মপুত্রকে একসূত্রে গেঁথেছিলেন তিনি। কিন্তু, রেবতীর লড়াই এখনও অনেকটাই পর্দার আড়ালে। ফ্যাশন জগৎ বা প্রতিযোগিতার প্রস্তুতির ছবি নয়, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের পেজ-এ পাহাড় লাইনের মিটার গেজ ট্রেন ‘হিল কুইন’ এক্সপ্রেসের ছবি রেখেছেন রেবতী। প্রতিযোগিতা

নিয়ে আস্ফালন নয়, বরং বরাকে ব্রডগেজ চালুর আগে, পাহাড়

লাইনের মিটারগেজের ‘নস্টালজিয়া’য় আচ্ছন্ন আইনের ওই ছাত্রী। তাঁর কথায়, “প্রচার বা আড়ম্বর নয়, স্বপ্নটা বড় হতে হবে। ভারত সুন্দরী হতে

না পারলে ক্ষতি কী? ওকালতির পথ তো খোলাই রইল।” খোদ দেবজিৎ অবশ্য রেবতীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, “আমার লড়াইয়ের

সময় রাজ্যবাসী যে ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, আশা করি রেবতীও তেমনই সকলের শুভেচ্ছা পাবে। হাফলঙয়ের মতো জায়গা থেকে ভারত সুন্দরী প্রতিযোগিতার ফাইনালের মঞ্চে পৌঁছনো সোজা

কথা নয়।”

হাফলঙয়ের সেন্ট অ্যাগনেস কনভেন্ট হাই স্কুল থেকে দশম শ্রেণির পড়াশোনা শেষ করে লামডিং কলেজে স্নাতক হন রেবতী। এখন গুয়াহাটির এনইএফ কলেজে আইন পড়ছেন। বাবা বাবুরাম ছেত্রী রাজ্য সরকারের কর্মী। মা বীণাদেবী গৃহবধু। ছোট্ট পাহাড়ি শহরের, সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে রেবতী কিন্তু ভালবেসে ফেলেন মডেলিং, নাচ। ২০১২ সালে অসমের হিমাক্ষী অগ্রবাল ও ২০১৩ সালে অনন্যা শর্মা ‘ভারত সুন্দরী’ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে যান।

বেলি ডান্সিংয়ের ভক্ত রেবতী এ বছর প্রতিযোগিতার আবেদনপত্র পূরণ করলেও ভাবেননি চূড়ান্ত পর্যায়ের ২১ জন সুন্দরীর মধ্যে জায়গা পাবেন।

আনন্দবাজারের সঙ্গে আলাপচারিতায় রেবতী বলেন, “ভারত সুন্দরী হওয়া আমার কাছে স্বপ্নের মতো। এই কয়েক দিনে কত কিছু শিখেছি। দেশের সেরা পেশাদারদের কাছে মডেলিং, সৌন্দর্যচর্চা, ব্যক্তিত্ববিকাশ শেখার সুযোগ পেয়ে আমি ভাগ্যবান।” তিনি বলে চলেন, “প্রতিযোগীরা সকলেই সেরা হওয়ার যোগ্য। আমি জানি আমার শহরের, জেলার ও রাজ্যের মানুষ আমার কাছে জয় আশা করছেন। সকলের আশীর্বাদ সঙ্গে থাকায় জোর বাড়ছে। কথা দিচ্ছি আপ্রাণ চেষ্টা করব।” আমির খানের অন্ধ ভক্ত রেবতীর স্বপ্নের প্রেমিক কিন্তু আতিফ আসলাম।

তিনি জানেন মডেলিংয়ের পথে অনিশ্চয়তা বেশি। অনেক আত্মত্যাগ লাগে। তবু, এই পথ ছাড়তে নারাজ রেবতী। তাঁর কথায়, “ভারতসুন্দরী হলেও লেখাপড়া শেষ করব। জিততে না পারলে আইনজীবীর পেশা তো থাকলই। তবে মডেলিং চালিয়ে যাব। সেই সঙ্গে অনগ্রসর মানুষদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খোলার ইচ্ছে আছে।” আইনের এই ছাত্রী দেশের বর্তমান দণ্ডবিধির একটি আইন অন্তত এখনই ভাঙতে চান।

তাঁর মতে, “১৮ বছরের নীচে থাকা ছেলেরা যত জঘন্য অপরাধই করুক না কেন, নাবালক বলে সাজা থেকে ছাড় পাচ্ছে। এমনটা চলতে দেওয়া যায় না।”

তাঁর সেই স্বপ্নও পূরণ হয় কি না, তা সময় বলবে।

Rebati Chatri Miss india Assam Silchar Haflong haflong st agnes convent school
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy