Advertisement
E-Paper

গোপনীয়তার স্বীকৃতি বিচারে সুপ্রিম কোর্ট

কখনও তরুণীর গতিবিধির উপরে নজরদারির অভিযোগ উঠেছে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সেনাপতি অমিত শাহের বিরুদ্ধে। কখনও ফোনে কথাবার্তা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রতন টাটা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৫ ০৩:৪৫

কখনও তরুণীর গতিবিধির উপরে নজরদারির অভিযোগ উঠেছে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সেনাপতি অমিত শাহের বিরুদ্ধে। কখনও ফোনে কথাবার্তা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রতন টাটা। বিভিন্ন পক্ষের কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, এই সব পদক্ষেপে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারে হাত প়়ড়ছে। কিন্তু এ বার সুপ্রিম কোর্টে সওয়ালের সময়ে কেন্দ্র জানাল, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক অধিকারের তালিকায় নেই।

আধার কার্ড নিয়ে শীর্ষ আদালতে টানাপড়েন চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। এই প্রকল্পে নাগরিকদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

তাতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারে হাত পড়ছে বলে বেশ কিছু আর্জি জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বিচারপতি জে চেলামেশ্বরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে ওই আবেদনগুলিরই শুনানি হচ্ছে। গতকাল সেই শুনানির সময়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি বলেন, ‘‘সংবিধানে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তাই আধার কার্ডের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার ভাঙা সংক্রান্ত আর্জি গ্রহণযোগ্য নয়।’’

স‌ংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদে নাগরিকের জীবন, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, ধর্মাচরণ-সহ কয়েকটি বিষয়কে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারের কথা স্পষ্ট ভাবে বলা না থাকলেও তা ব্যক্তিগত স্বাধীনতার মধ্যেই পড়ে বলেই বলে দাবি আইনজীবী ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের কর্মীদের একাংশের।

কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে সওয়ালের সময়ে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন রোহতগি। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে পঞ্চাশের ও ষাটের দশকে সুপ্রিম কোর্টের দু’টি রায়ের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। সেই দু’টি ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দেয়নি শীর্ষ আদালত। এজি-র কথায়, ‘‘সংবিধানের রূপকাররাও গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকারের তালিকাভুক্ত করতে চাননি।’’

কিন্তু এ ক্ষেত্রে যে আইনের অস্পষ্টতা রয়েছে তা মানতে বাধ্য হয়েছেন রোহতগিও। কারণ, নব্বইয়ের দশকে সুপ্রিম কোর্টের অন্য কয়েকটি বেঞ্চ ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকারের মধ্যেই গোপনীয়তার অধিকার রয়েছে বলে ওই রায়গুলিতে উল্লেখ রয়েছে। রোহতগি জানিয়েছেন, পঞ্চাশের দশকের রায়টি দিয়েছিল আট বিচারপতির বেঞ্চ। কিন্তু নব্বইয়ের রায়গুলি কম সদস্যের বেঞ্চের। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার মৌলিক অধিকার কি না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে ন’জন বিচারপতির বেঞ্চ গড়ার আর্জি জানিয়েছেন এজি। বিচারপতিরা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে বেশি সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় জানতে তাঁরাও আগ্রহী।

আধার কার্ড মামলায় সওয়াল করেছেন প্রবীণ আইনজীবী অনিল দিওয়ান। তাঁর কথায়, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট একাধিক বার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক ভাবেও গোপনীয়তার অধিকারকে মানবাধিকারের মর্যাদা দেওয়া হয়। তাই বিষয়টি নিয়ে আর কোনও প্রশ্ন থাকা উচিত নয়।’’

এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ আদালত নতুন কি রায় দেয়, সেদিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।

Right to privacy Aadhaar Mukul Rohatgi ID lawyer AADHAR
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy