কেরলের জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে হাত ধরে চলার নীতি। পশ্চিমবঙ্গের জন্য কংগ্রেস-বিজেপির থেকে সমদূরত্বের নীতি। এমনিতেই কোণঠাসা দলের ভাঙন রুখতে এই মধ্যপন্থাই বাছলেন আরএসপি নেতৃত্ব।
সিপিএমের সঙ্গে বিবাদে গত লোকসভা ভোটের আগে বাম জোট ছেড়ে কংগ্রেস জোটে যোগ দেয় আরএসপি। এ বার দিল্লিতে সর্বভারতীয় সম্মেলনের খসড়া দলিলেও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলাতে আগ্রহ দেখিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। দলিলে বলা হয়েছে, বিজেপি-কংগ্রেস আর এক নয়। কংগ্রেস এখন দুর্বল। বিজেপির মোকাবিলায় তাই কংগ্রেসের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির সঙ্গে হাত মেলাতে হবে। কিন্তু কেরল ব্রিগেড তা চাইলেও ক্ষিতি গোস্বামীর নেতৃত্বাধীন বাংলা ব্রিগেড তাতে রাজি হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের যে সব সিপিএম নেতা কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়ার পক্ষে, তাঁরাও আরএসপি-র দলিল দেখে খুশি হন। কিন্তু তাঁদের হতাশ করে পশ্চিমবঙ্গের আরএসপি নেতৃত্ব দাবি তুলেছেন, কেরল ভুল করছে। তাঁরা জাতীয় স্তরে ও পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব রেখে বাম জোট মজবুত করার পক্ষে। এমনকী কেরলেরও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছেড়ে বাম জোটে ফিরে আসা উচিত বলে দাবি বাংলার নেতাদের।
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ সম্পাদক টি জে চন্দ্রচূড়নের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আপাতত কেরলে আরএসপি যেমন কংগ্রেসের জোটে রয়েছে, তেমনই থাক। কিন্তু জাতীয় স্তরে ও পশ্চিমবঙ্গে আরএসপি কংগ্রেসের বিরুদ্ধ নীতি নিয়েই চলবে দল। ছ’মাস পরে প্লেনাম ডেকে ফের বিষয়টির পর্যালোচনা হবে। দিল্লির এই সম্মেলনে আরএসপি-র শীর্ষ নেতৃত্বেও বদল আসেনি। চন্দ্রচূড়ন অবশ্য ইঙ্গিত দিয়েছেন, প্লেনামেই তিনি সরে দাঁড়াতে পারেন।
তত দিনে অবশ্য কেরল, ও পশ্চিমবঙ্গে ভোট হয়ে যাবে। কেরলের নেতারা জানিয়েছেন, সেখানে সিপিএম নেতারা আরএসপি-কে কোণঠাসা করছিলেন বলেই বাধ্য হয়ে কংগ্রেসের জোটে যোগ দিতে হয়। সেই পরিস্থিতিতে কোনও বদল আসেনি। প্রশ্ন উঠেছে, তেমন পরিস্থিতি এলে কি পশ্চিমবঙ্গে আরএসপি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করবে? ক্ষিতি গোস্বামী বলেছেন, ‘‘কখনওই না।’’