Advertisement
০১ মে ২০২৪
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার

বিজেপির সঙ্গী সমীররঞ্জন

৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভায় ক্ষমতা দখল করতে গেলে প্রতিটি আসনই মহার্ঘ। সে কারণেই শাসক বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করতে কার্যত প্রতিটি আসনেই মূল লড়াইটাকে সিপিএম বনাম বিজেপি করতে চাইছেন হিমন্তবিশ্ব শর্মারা।

সমীররঞ্জন বর্মন

সমীররঞ্জন বর্মন

বাপি রায়চৌধুরী
আগরতলা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৭
Share: Save:

ছেলে সুদীপ রায়বর্মন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে আগেই যোগ দিয়েছেন। কিন্তু বাবার বিষয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি বিজেপি। বাবা, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জন বর্মনের ১৩ মাসের শাসনকাল নিয়ে সিপিএমের ‘অপশাসন’-এর প্রচার এতটাই তীব্র যে বিজেপি তাঁর সঙ্গে প্রথম থেকেই সংশ্রব রাখতে চায়নি। তবে সমীরবাবুর রাজনৈতিক চালের সামনে পড়ে সেই তাঁর কাছেই ছুটতে হল বিজেপি নেতৃত্বকে। এবং বিজেপি নেতৃত্বের ‘অনুরোধে’ নিজের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলেন সমীরবাবু। অন্য দিকে, এক কংগ্রেস প্রার্থীকেও মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়ে দলে নিল বিজেপি।

৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভায় ক্ষমতা দখল করতে গেলে প্রতিটি আসনই মহার্ঘ। সে কারণেই শাসক বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করতে কার্যত প্রতিটি আসনেই মূল লড়াইটাকে সিপিএম বনাম বিজেপি করতে চাইছেন হিমন্তবিশ্ব শর্মারা। বিজেপির এক সূত্রের বক্তব্য, কিছু কিছু ক্ষেত্রে দলের থেকেও আসনে প্রার্থীর প্রভাব বেশি। বিশালগড় সমীরবাবুর ‘গড়’। বহুবার তিনি সেখান থেকে জিতেছেন। হারলেও ভাল ভোট টেনেছেন। এবারে তিনি নির্দল হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন। জিততে না পারলেও ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে দেওয়াটা সমীরবাবুর পক্ষে সহজ হত। সে কারণেই বিজেপির তরফে তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়। উনি তাতে সাড়া দিয়েছেন।

পরে সমীরবাবু বলেন, ‘‘ত্রিপুরা বিজেপির সভাপতি বিপ্লব দেব ও বিজেপির তরফে নির্বাচনের ভারপ্রাপ্ত অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা ফোনে মনোনয়ন তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবেই আমি তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়েছি।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব বলেন, ‘‘আজ সকালে আমি ওঁকে ফোনে মনোনয়ন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছিলাম। বলি, আপনি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। আপনি দেখুন যাতে সিপিএম-বিরোধী ভোট ভাগ না হয়। উনি তখনই কথা দেন।’’

কংগ্রেসের মুখপাত্র তাপস দে বলেন, ‘‘আমাদের ধারণা এর পিছনে অন্য কারণ আছে।’’ রাজ্য-রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এর ফলে ভবিষ্যতে সমীরবাবুর রাজনৈতিক পুনর্বাসন পেতে সুবিধা হবে। সেটা লোকসভা বা রাজ্যসভাতেও হতে পারে বলে তাঁরা মনে করেন।

এ দিকে, আজ শেষ মুহূর্তে আরও এক কংগ্রেস প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়ে দলে যোগদান করিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কাকরাবন শালগড়া কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী সুকুমার দাস একেবারে শেষ সময়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন। এর ফলে ওই আসনে কংগ্রেসের কোনও প্রার্থীই রইল না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বিজেপির বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। তিনি কোথায় আমরা জানি না।’’ তবে বিকেলে প্রদেশ বিজেপি অফিসে আত্মপ্রকাশ করেন সুকুমারবাবু। সেখানেই আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। কংগ্রেস ও সিপিএম, উভয় দলই এর পিছনে ‘লেনদেন’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE