Advertisement
E-Paper

মোদীই শেষ কথা নন, বিজেপিকে জানিয়ে দিল সঙ্ঘ

লোকসভায় বিপুল জনমত নিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রবল ক্ষমতাশালী হলেও সঙ্ঘই যে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করবে, বিজেপি সাংসদদের কাছে আজ তা স্পষ্ট করে দিলেন আরএসএস নেতৃত্ব। গত ক’দিন আগেই মোহন ভাগবত বলেছিলেন, লোকসভা ভোটে জয়ের কৃতিত্ব একা মোদীর নয়। আর আজ সঙ্ঘের আর এক প্রধান নেতা মন্তব্য করলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর কৃতিত্ব কার্যত সঙ্ঘেরই দৌলতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০৪:০৮

লোকসভায় বিপুল জনমত নিয়ে নরেন্দ্র মোদী প্রবল ক্ষমতাশালী হলেও সঙ্ঘই যে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করবে, বিজেপি সাংসদদের কাছে আজ তা স্পষ্ট করে দিলেন আরএসএস নেতৃত্ব। গত ক’দিন আগেই মোহন ভাগবত বলেছিলেন, লোকসভা ভোটে জয়ের কৃতিত্ব একা মোদীর নয়। আর আজ সঙ্ঘের আর এক প্রধান নেতা মন্তব্য করলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর কৃতিত্ব কার্যত সঙ্ঘেরই দৌলতে।

উপলক্ষ ছিল রাখি-উৎসবকে সামনে রেখে বিজেপির সব সাংসদকে সঙ্ঘের ভাবনায় শিক্ষিত করা। সে কারণে সঙ্ঘের নির্দেশে সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা ও কালো টুপি পরে আজ সকাল সাতটার মধ্যে সকলে পৌঁছে গিয়েছিলেন বেঙ্কাইয়া নায়ডুর বাড়িতে। প্রতি সকালে সঙ্ঘের যেমন শাখা হয়, আজ সাংসদদেরও তাতে সামিল করা হয়। প্রোটোকলের তোয়াক্কা না করে সেখানে চলে গিয়েছেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজনও। হাজির লালকৃষ্ণ আডবাণী, সুষমা স্বরাজও। উল্লেখযোগ্য গরহাজিরার তালিকায় তিন জন। অরুণ জেটলি, অসুস্থ রাজনাথ সিংহ এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদীর অনুপস্থিতিতেই সঙ্ঘের নেতা ভাইয়াজি জোশী বলেন, “সঙ্ঘের প্রশিক্ষণ পেলে তবেই দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া যায়। ভবিষ্যতেও এমন ব্যক্তিই দেশের নেতৃত্ব করবেন।”

সঙ্ঘের নেতারা বরাবরই সরাসরি বক্তব্য রাখার পরিবর্তে পরোক্ষেই বলতে পছন্দ করেন। ভাগবত কারও নাম না করলেও তাই কারও বুঝতে অসুবিধা হয়নি, তাঁর ইঙ্গিত ছিল মোদীর দিকেই। আজও বেঙ্কাইয়ার বাড়িতে ভাইয়াজি জোশীর মন্তব্য নতুন রসদ জুগিয়েছে বিজেপি নেতাদের। বৈঠকে উপস্থিত দলের এক শীর্ষ নেতার মতে, “বিজেপির সব সাংসদকে ডেকে আগাগোড়া সঙ্ঘের কর্মসূচি পালিত হয়েছে। যেখানে শাখা ছাড়াও স্বয়ং ভাইয়াজি গেরুয়া পতাকায় রাখি পরালেন। সাংসদরাও একে অপরকে রাখি পরালেন।” তাঁর কথায়, সঙ্ঘের এই বিশুদ্ধ সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত করানো ছাড়াও যে রাজনৈতিক বার্তা দিতে চাইল আরএসএস, সেটি হল তারাই আসল নিয়ন্ত্রক।

বিজেপি নেতাদের মতে, ভাইয়াজির কথায় আর একটি বার্তাও রয়েছে। তা হল, ভবিষ্যতে কে নেতৃত্ব দেবেন, সেটিও আরএসএস স্থির করে দেবে। শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদীর উপরেই ভরসা করে বসে নেই সঙ্ঘ। ভবিষ্যতে যে কোনও ব্যক্তিকেই নেতৃত্বের যোগ্য মনে করতে পারেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব। প্রায় এক ঘণ্টার বক্তব্যে ভাইয়াজি প্রতিকূলতার মধ্যে আরএসএসের সংঘর্ষের ইতিহাস শোনান। ঘুরে ফিরে আসেন হিন্দুদের সংগঠিত করার বিষয়েও। এর পাশাপাশি দলে ঐক্য বজায় রাখার জন্য কী কী পদক্ষেপ করেছে আরএসএস, সেটিও জানান সবিস্তারে। ২০২৫ সালে আরএসএসের অভিষেকের একশো বছর পূর্ণ হচ্ছে। সেই উপলক্ষে কী কর্মসূচি গ্রহণ করা যায়, তা নিয়েও সাংসদদের ভাবতে বলেন। দেশ গড়ার কাজে সঙ্ঘের সঙ্গে তাঁদেরও সামিল হওয়ার আবেদন জানান।

বিজেপি সূত্রের মতে, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই সঙ্ঘের একাংশের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা হারানোর। সে কারণে মোদী সরকারের জন্মলগ্ন থেকেই সঙ্ঘ নেতৃত্ব দলে রাশ শক্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছেন। অমিত শাহের নতুন টিমেও সঙ্ঘ নিজের প্রভাব খাটাতে চাইছে। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপেও আপত্তি তুলছে। বৃহস্পতিবার যে ভাবে মোদী সরকারের মন্ত্রীর বাড়িতে সঙ্ঘের কর্মসূচি পালন হল, সেটিও রীতিমতো বেনজির পদক্ষেপ। বিজেপির এক নেতা বলেন, “ভাগবতের মন্তব্য, তার পর বৃহস্পতিবার ভাইয়াজির বক্তব্য, মনমোহন বৈদ্যর উপস্থিতি আর মোদীর অনুপস্থিতি এই ধারাবাহিক ঘটনায় স্পষ্ট মোদী ও আরএসএসের মধ্যে একটা ছায়াযুদ্ধ চলছেই।”

bjp modi sangha paribar rss narendra modi nda government last word india politics national news online national news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy