Advertisement
E-Paper

অসুস্থ আম্মা, শশীকলা-পনিরের কলহ চরমে

দিন যত গড়াচ্ছে, তত তীব্র হচ্ছে সন্দেহ। ‘আম্মা কেমন আছেন?’ সাত দিন ধরে এই প্রশ্নে কার্যত মুখে কুলুপ তামিলনাড়ু সরকার এবং দল এডিএমকের। মুখ খুলছে না কোনও পক্ষই। ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাও মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা দফতরের ভার তুলে দিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ও পনিরসেলভামের হাতে। আর সেই পনির রাজ্যশাসন শুরু করতেই ফুঁসে উঠেছেন জয়া ঘনিষ্ঠ শশীকলা নটরাজন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৫৮
শশীকলা নটরাজন ও পনিরসেলভাম

শশীকলা নটরাজন ও পনিরসেলভাম

দিন যত গড়াচ্ছে, তত তীব্র হচ্ছে সন্দেহ। ‘আম্মা কেমন আছেন?’ সাত দিন ধরে এই প্রশ্নে কার্যত মুখে কুলুপ তামিলনাড়ু সরকার এবং দল এডিএমকের। মুখ খুলছে না কোনও পক্ষই। ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাও মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা দফতরের ভার তুলে দিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ও পনিরসেলভামের হাতে। আর সেই পনির রাজ্যশাসন শুরু করতেই ফুঁসে উঠেছেন জয়া ঘনিষ্ঠ শশীকলা নটরাজন।

এডিএমকে সূত্রের খবর, জয়ললিতার স্বাস্থ্য নিয়ে জল্পনা যত গতি পাচ্ছে ততই বাড়ছে দলে ক্ষমতা দখলের দ্বন্দ্ব। আবার পনিরসেলভাম ও শশীকলার বিবাদকে কেন্দ্র করে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিজেপি ও কংগ্রেস। অমিত শাহেরা পনিরসেলভামের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলছেন। অন্য দিকে কংগ্রেস, ডিএমকে শশীকলার মাধ্যমে জয়ললিতা শিবিরে ভাঙন ধরিয়ে সরকার ফেলতে তৎপর হয়ে উঠেছে।

প্রায় তিন সপ্তাহে আগে হাসপাতালে ভর্তি হন জয়া। প্রথম দিকে তাঁর শারীরিক অবস্থার রিপোর্ট দেওয়া হলেও, গত সাত দিন ধরে তাও বন্ধ। এ দিকে, বিরোধী দলের নেতা তো বটেই, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকেও জয়ার ধারকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। তাঁর জন্যও খোলা হয়নি কেবিনের দরজা। গত কাল বন্ধ কেবিনের সামনে থেকে এসে ঘুরে যান অভিনেতা রজনীকান্ত ও তাঁর কন্যা। আজ ছিল এডিএমকের প্রতিষ্ঠা দিবস। দফতরে এমজিআরের মূর্তিতে মালা দিয়েই নমো নমো করেই অনুষ্ঠান সারেন বর্ষীয়ান নেতা ই মধুসূদন।

জয়ললিতা হাসপাতালে ভর্তির দিন কয়েক পর থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে জল্পনা। টানাপড়েনে জড়িয়েছে জয়ললিতা ঘনিষ্ঠ দুই শিবির। একটির শীর্ষে শশীকলা। যিনি এক সময়ে জয়ার ভীষণ কাছের মানুষ ছিলেন। মাঝে দু’পক্ষের মনোমালিন্য হয়। পরে অবশ্য ফের কাছাকাছি আসেন দু’জনে। বর্তমানে আবাসন শিল্প, সিনেমা ব্যবসা, জয়া টিভির মালিকানা রয়েছে শশীকলা ও তাঁর পরিবারের ঘনিষ্ঠদের হাতে। শশীকলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলছেন বেশ কিছু মন্ত্রী ও দলীয় বিধায়ক।

আবার প্রশাসনিক ক্ষেত্রে বরাবর জয়া ভরসা রেখেছেন পনিরসেলভামের উপরে। দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় দু’বার মুখ্যমন্ত্রীর আসন ছাড়তে হয়েছিল আম্মাকে। দু’বারই মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন পনিরসেলভাম।

সূত্রের খবর, শশীকলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলছেন করুণানিধির ডিএমকের বেশ কিছু নেতা। তাঁরা চান, শশীকলা নিজের প্রভাব খাটিয়ে এডিএমকের কিছু বিধায়ককে ভাঙিয়ে আনুন। এতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে। শশীকলা ও ডিএমকে-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলেছে কংগ্রেসও। পিছিয়ে নেই বিজেপি। পনির বিজেপি ঘনিষ্ঠ। সম্প্রতি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ চেন্নাই সফরে গিয়ে পনিরসেলভামের সঙ্গে এক প্রস্ত বৈঠক করেন। বিজেপি সূত্রের খবর, সরকার ধরে রাখতে পনিরসেলভামকে সব ধরনের সাহায্য দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়ে এসেছেন তিনি। তবে বিজেপির একাংশের মতে, এই পরিস্থিতিতে তামিলনাড়ুতে সরকার পড়ে গেলেও বিজেপির হারানোর কিছু নেই। উল্টে নতুন করে নির্বাচন হলে অপেক্ষাকৃত দুর্বল এডিএমকের সঙ্গে জোট করে দক্ষিণের রাজ্যে নিজেদের খাতা খুলতে পারবে বিজেপি।

ক্ষমতা দখলের এই লড়াইয়ের মধ্যেই যারা আম্মার স্বাস্থ্য নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে তাদের ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ। দলীয় সমর্থকের কাছে আম্মার স্বাস্থ্যের কথা জানতে গিয়ে দু’চারটি বিরূপ মন্তব্য করে ফেলেছিলেন কোয়ম্বত্তূর ব্যাঙ্কের দুই কর্মী। আর তাতেই গুজব ছড়ানোর দায়ে দুই ব্যাঙ্ককর্মীর নামে অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ। পুলিশের এই আচরণকে ঘিরেও শুরু হয়েছে বিতর্ক। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তামিলনাড়ু পুলিশের এই ‘অতিসক্রিয়তার’ বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।

panneerselvam Sasikala natarajan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy